বর্ষায় টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণে যা দেখবেন, যেভাবে যাবেন
বাংলার প্রতিটি পরতে পরতে মিশে আছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। যার একটি বড় অংশ দখল করে রেখেছে ৩৬০ আউলিয়ার দেশ, দেশের একমাত্র গ্রিন সিটি সিলেট। এই জেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থান টাঙ্গুয়ার হাওর।
বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ছোট-বড় অনেকগুলো হাওর আছে। তার মধ্যে বিখ্যাত হয়ে উঠেছে সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মিঠাপানির হাওর। বৃহত্তম হাওর হাকালুকির অবস্থানও সিলেটে।
আরও পড়ুন: সাদা পাথরের সৌন্দর্য দেখতে কখন যাবেন?
টাঙ্গুয়ার হাওরের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এটি একেক ঋতুতে একেক রূপ ধারণ করে। এখানে ভ্রমণের জন্য বর্ষাকাল যদিও আদর্শ সময়। তবে অনেকেই অতিথি পাখি দেখার জন্য শীতকালেও ঘুরতে যান।
তবে বর্ষায় টাঙ্গুয়ার হাওরের সোন্দর্য বহুগুণ বেড়ে যায়। আর সেই সৌন্দর্য উপভোগ করতেই টাঙ্গুয়ার হাওরে ছুটে যায় ভ্রমণপিপাসুরা। এ সময় হাওরের চারদিকে থৈ থৈ করে পানি। এর মধ্যে প্রমোদতরীতে ভেসে বেড়ান প্রকৃতিপ্রেমীরা।
যা যা দেখবেন
প্রায় ১০০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত এ হাওর বাংলাদেশর দ্বিতীয় বৃহত্তম মিঠা পানির জলাভূমি। স্থানীয়দের কাছে হাওরটি নয়কুড়ি কান্দার ছয়কুড়ি বিল নামেও পরিচিত। এটি দেশের দ্বিতীয় রামসার স্থান হিসেবে পরিচিত, আর প্রথমটি হলো সুন্দরবন।
আরও পড়ুন: চা বাগানসহ শ্রীমঙ্গল ভ্রমণে আরও যা দেখবেন
ভারতের মেঘালয়ের খাসিয়া, জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে সারি সারি হিজল-করচ শোভিত, পাখিদের কলকাকলি মুখরিত টাঙ্গুয়ার হাওর মাছ, পাখি ও অন্যান্য জলজ প্রাণীর এক বিশাল অভয়াশ্রম।
বর্ষায় হাওরের পানি ঘোলা থাকে। তবে বর্ষার শেষের দিকে পানি থাকে একদম স্বচ্ছ। বর্ষায় এর পুরোটাই পানিতে ডুবে থাকলেও শীতে পানি কমতে থাকে। এর বড় একটা অংশ তখন শুকিয়ে যায় যায়।
টাঙ্গুয়ার হাওরের প্রধান দুটি পাখির অভয়ারণ্য হলো লেউচ্ছামারা ও বেরবেড়িয়ার বিল। এ হাওর শুধু একটি জলমহাল বা মাছ প্রতিপালন, সংরক্ষণ ও আহরণেরই স্থান নয়। এটি একটি মাদার ফিশারি। হিজল করচের দৃষ্টি নন্দন সারি এ হাওরকে করেছে মোহনীয়।
আরও পড়ুন: এই বর্ষায় দেশের মধ্যেই ঘুরে দেখুন ৮ জলপ্রপাত
চোখের সামনে বিস্তীর্ণ হাওর দেখে পর্যটকরা পুলকিত হন। হাওরের একদম শেষপ্রান্তে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের বিশাল পাহাড়। তবে সেখানে যাওয়া যাবে না। কারণ সীমান্তের কাঁটাতার বিভক্ত করে দিয়েছে দুই দেশের মানুষের প্রবেশাধিকার।
কীভাবে যাবেন?
প্রথমেই পৌঁছাতে হবে সুনামগঞ্জ জেলা শহরে। সুনামগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে সাহেববাজার ঘাট পর্যন্ত রিকশায় যান। বর্ষাকালে শহরের সাহেব বাড়ি নৌকা ঘাট থেকে ইঞ্জিন বোট বা স্পিড বোটে সরাসরি টাঙ্গুয়া যাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: প্রিয়জন নিয়ে ঘুরে আসুন ‘মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্টে’
ইঞ্জিন বোটে ৫ ঘণ্টায় ২৫০০-৩০০০ টাকা ও স্পিড বোটে ২ ঘণ্টা ৭৫০০-৮০০০ টাকা খরচ পড়বে। রাতে থাকার জন্য নৌকা ভাড়া করলে প্রয়োজনীয় বাজারসদাই করে নেবেন।
সেক্ষেত্রে লোকাল ট্রলার বা ইঞ্জিন চালিত নৌকায় ভাড়া পরবে ৫০০০ টাকার মতো। আর বিলাসবহুল ইঞ্জিন চালিত নৌকাগুলোতে হাই কমোডসহ বাথরুম, ছাদে তেরপলসহ অনেক সুবিধা আছে সেগুলোর ভাড়া পড়বে ১০০০০-১৬০০০ টাকার মতো।
জেএমএস/এমএস