সিকিম ভ্রমণে ঢুঁ মেরে আসুন ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম ‘ছায়াতালে’
সবুজ আর পাহাড়ে ঘেরা ছোট্ট এক পাহাড়ি গ্রাম। সিকিমের অন্যান্য পাহাড়ি গ্রামগুলোর মতো জনপ্রিয় না হলেও এই ছায়াতাল খুব সুন্দর একটি পর্যটন কেন্দ্র। অন্যান্য পাহাড়ি গ্রামগুলোর তুলনায় ছায়াতাল অতুলনীয়।
এর পরিবেশ ও নৈসর্গিক সৌন্দর্য আপনাকে স্বর্গীয় অনুভূতি দেবে। সিকিমের কোলে ছায়াতাল যেন এক চিলতে স্বর্গ। ছোট একটি লেক নিয়ে গড়ে উঠেছে ছায়াতাল গ্রামটি। তাল অর্থ লেক।
আরও পড়ুন: সিকিম ভ্রমণে কত খরচ, কী কী দেখবেন ও কোথায় থাকবেন?
এই লেকের জন্যই গ্রামের নাম ছায়াতাল। মসলাজাতীয় উপাদান এলাচ ও বিখ্যাত কিউই ফল চাষ হয় ছায়াতালে। জঙ্গলের পথ ধরে হাঁটলে রাস্তায় দেখা হবে নদীর সঙ্গে। চাইলে নদীতে পা ডুবিয়ে জিরিয়ে নিতে পারেন কিছুক্ষণ।
এই গ্রামের এক প্রান্তে আছে একটি মনেস্ট্রি। ওই স্থানটিও খুব নিরিবিলি ও শান্ত। চারদিক পাহাড় ও জঙ্গলে ঘেরা। পর্যটকদের আনাগোনা খুব কম সেখানে। মনেস্ট্রির ভেতরে আছে বৌদ্ধ মূর্তি। ভেতরটা সাজানো-গোছানো।
ছায়াতালে নেই কোনো শব্দদূষণ। শুধু পাখির কিচিরমিচির ছাড়া আর কোনো শব্দ আপনার কানে আসবে না। আর এই নির্জনতার মাঝে বসেই দেখতে পাবেন শ্বেতশুভ্র কাঞ্চনজঙ্ঘা।
আরও পড়ুন: সিকিম ভ্রমণে যে ভুল করলে বিপদে পড়তে পারেন
ছায়াতালে দেখার মতো আছে আরও একটি জিনিস। ছায়াতালের পাহাড়ের গাঁ বেয়ে নেমে আসছে পাহাড়ি ঝরনা। এই ঝরনার পানি কাজে লাগিয়ে ঘোরানো হচ্ছে বৌদ্ধ চক্র।
ছায়াতালে সারা দিন-রাত এভাবেই ঘোরে বৌদ্ধ চক্র। এটি দেখতেও বেশ সুন্দর। আর হি বাজার থেকে ছায়াতাল যাওয়ার পথেও পড়ে সুন্দর এক ঝরনা। সেখানে দাঁড়িয়ে তুলে নিতে পারেন ছবি।
এছাড়া ঘুরে আসতে পারেন শ্রীজুঙ্গা পার্ক থেকে। ছায়াতালের রাতের দৃশ্য আরও মোহময়ী। পূর্ণিমা থাকলে চাঁদের আলোয় ধরা পড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘার এক অন্যরূপ।
আরও পড়ুন: কম খরচে সিকিম ভ্রমণে যা যা দেখবেন
ছায়াতাল থেকে ট্রেক করে আসতে পারেন হি-বার্মিওক থেকে। এই হি-বার্মিওকে দাঁড়িয়ে আপনি কাঞ্চনজঙ্ঘার আরও সুন্দর দৃশ্য দেখতে পাবেন। এছাড়া এই গরমে ট্রেক করতে পারেন ভার্সেতে। এই ভার্সে হল রডোডেনড্রনের স্বর্গোদ্যান।
নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ছায়াতালের দূরত্ব ১৪৫ কিলোমিটার। গাড়িতে সময় লাগে প্রায় ৫ ঘণ্টা। শেয়ার গাড়িতে আসতে চাইলে শিলিগুড়ি থেকে জোরথাং হয়ে আপনাকে পৌঁছাতে হবে ছায়াতালে।
আরও পড়ুন: ভারতের ৫ নিষিদ্ধ স্থানে ঘুরতে গেলেই বিপদে পড়বেন!
ছায়াতালের খুব কাছেই অবস্থিত বার্মিওক, রিনচেনপংয়ের, পেলিং, দরাপ এবং আরও অনেক জায়গা। আবার চাইলে পেলিং ঘুরেও পৌঁছাতে পারেন ছায়াতালে।
ছায়াতালে থাকার জন্য হোমস্টের সুবিধা আছে। সেখানে থাকা-খাওয়ার খরচ মাথাপিছু ১,৫০০-২,০০০ টাকা। তাহলে আর দেরি কেন, সিকিম ভ্রমণে ঘুরে আসুন ছায়াতালে।
জেএমএস/এএসএম