অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার সহজ নিয়ম
রেলওয়েকে সবচেয়ে নিরাপদ ও সাশ্রয়ী পরিবহন ধরা হয়। তাই দূরপাল্লার যে কোনো ভ্রমণে সবাই ট্রেন ব্যবহারেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তবে বর্তমানে ট্রেনের টিকিট পাওয়া অত্যন্ত দুঃসাধ্য।
লম্বা লাইনে সারাদিন দাঁড়িয়েও অনেক সময় ট্রেনের টিকিট মেলে না। আবার ঈদ ও বিভিন্ন সরকারি ছুটির সময় টিকিট পাওয়া আরও কষ্টকর হয়ে ওঠে। তবে আপনি এখন থেকে খুব সহজেই ঘরে বসে মোবাইল থেকেই ট্রেনের টিকিট বুকিং করতে পারেন।
আরও পড়ুন: ট্রেনের চেইন কখন টানলে জরিমানা দিতে হয়?
এখনো অনেকেই অনলাইনে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করার নিয়ম জানেন না। চলুন তবে জেনে নিন বাংলাদেশ রেলওয়ে অনলাইন টিকিট কাটার নিয়ম-
রেলের টিকিট কাটতে ১২ বছর বা তার বেশি বয়সী সবাইকে নিবন্ধন করতে হবে। কাউন্টার, অনলাইন ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট কিনতে চাইলে যাত্রীরা অনলাইন অথবা মোবাইল এসএমএস এর মাধ্যমে যে কোনো সময় বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকিটিং সিস্টেমে খুব সহজে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে পারবেন।
টিকিট কেনার আগে প্রত্যেক যাত্রীকে জাতীয়-পরিচয়পত্র নম্বর, জন্মনিবন্ধন সনদ বা পাসপোর্ট যাচাই করে রেজিস্ট্রেশন বা নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। অনলাইনে টিকিট কেনার সময় যে যাত্রী ভ্রমণ করবেন তার এনআইডি লাগবে। যাত্রীর এনআইডি যাচাই করা হবে।
আরও পড়ুন: বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্টেশন, একসঙ্গে দাঁড়ায় ৪৪ ট্রেন
অন্যদিকে কাউন্টার থেকে টিকিট কিনতেও আগাম নিবন্ধন করতে হবে। তবে ওই নিবন্ধনের জন্য ইন্টারনেটের প্রয়োজন হবে না। মোবাইল ফোন থেকে এসএমএসের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে পারবেন। তারপর এনআইডি দেখিয়ে স্টেশন থেকে টিকিট পাওয়া যাবে।
অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটতে বাংলাদেশ রেলওয়ের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে (eticket.railway.gov.bd) ‘রেজিস্টার’ অপশনে গিয়ে মোবাইল নম্বর, এনআইডি নম্বর ও জন্ম তারিখ দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। আপনার নম্বর যদি আগে থেকেই নিবন্ধিত থাকে তাহলে ‘লগ ইন’ করুন।
তারপর কোন স্থান থেকে ট্রেনে উঠবেন, গন্তব্য, ভ্রমণের তারিখ, কোন শ্রেণিতে ভ্রমণ করবেন সেসব অপশন সিলেক্ট করুন। তারপরই পছন্দের সিট বেছে নেওয়ার অপশন পাবেন।
এরপর কোন সিট নিতে চান সেটা সিলেক্ট করুন। এবার অনলাইনে পেমেন্ট করুন সম্পন্ন করলেই টিকিট আপনার নামে বুক হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: ঢাকা থেকে কলকাতা যেতে ট্রেনের টিকিট কাটবেন যেভাবে
এছাড়া চাইলে ‘rail sheba app’ এ গিয়ে সাইন আপ করেও টিকিট কাটা যাবে এজন্য একই ধরণের তথ্য দিয়ে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে।
আবার কাউন্টারে টিকিট করার ক্ষেত্রে মোবাইল থেকে মেসেজ অপশনে গিয়ে টাইপ করতে হবে BR<space>NID নম্বর <space> জন্ম তারিখ (সাল/মাস/দিন) এসএমএস পাঠাতে হবে ২৬৯৬৯ নম্বরে।
ফিরতি এসএমএস এর মাধ্যমে নিবন্ধন সফল বা ব্যর্থ হয়েছে কি না, তা জানিয়ে দেওয়া হবে। এরপর কাউন্টারে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, জন্ম নিবন্ধন সনদ বা পাসপোর্ট দেখালেই টিকিট পেয়ে যাবেন।
যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই বা যাদের বয়স ১২ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে, তারা বাবা বা মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে নিবন্ধন করা অ্যাকাউন্ট অথবা নিজেদের জন্মনিবন্ধন নম্বর দিয়ে কিংবা জন্মনিবন্ধন সনদ আপলোড করে নিবন্ধনকৃত অ্যাকাউন্ট দিয়ে টিকিট কিনতে পারবেন।
আরও পড়ুন: একাই ১০০ দেশ ঘুরলেন ভ্রমণকন্যা মালিহা, ঘুরতে চান পুরো বিশ্ব
এমন ক্ষেত্রে টিকিটের ওপরে মুদ্রিত নামের সঙ্গে যাত্রীর সম্পর্ক যাচাইয়ের জন্য ভ্রমণের সময় বাধ্যতামূলকভাবে জন্মনিবন্ধন সনদের ফটোকপি সঙ্গে রাখতে হবে।
বিদেশি নাগরিকরা পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে ও পাসপোর্টের ছবি আপলোড করে নিবন্ধন সম্পন্ন করবেন। সফলভাবে এনআইডি/পাসপোর্ট/জন্মনিবন্ধন যাচাই করে নিবন্ধন ছাড়া কোনো যাত্রী আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট কিনতে পারবেন না।
ভ্রমণকালে যাত্রীকে অবশ্যই নিজস্ব এনআইডি বা জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি অথবা পাসপোর্ট/ছবি সম্বলিত আইডি কার্ড সঙ্গে রাখতে হবে।
পরিচয়পত্রের সঙ্গে টিকিটের ওপরে মুদ্রিত যাত্রীর তথ্য না মিললে যাত্রীকে বিনা টিকিট ভ্রমণের দায়ে অভিযুক্ত করা হবে ও বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আর যদি টিকিট সংক্রান্ত কোনো সমস্যা হয় কিংবা টাকা কেটে নিলেও যদি ই-টিকিট ইস্যু না হয়, তাহলে বিকাশের ১৬২৪৭ নাম্বারে কল করে আপনার সমস্যার কথা জানান। এছাড়া ই-মেইল করুন ‘[email protected]’ এই ঠিকানায়।
জেএমএস/জেআইএম