ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ভ্রমণ

দেড় হাজার দর্শনার্থীতে প্রতিদিন মুখরিত থাকে আহসান মঞ্জিল

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৭:৪০ পিএম, ০১ ডিসেম্বর ২০২২

ঢাকার বুড়িগঙ্গার তীরে প্রাচীন বাংলার ইতিহাস নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে পুরান ঢাকার আহসান মঞ্জিল। এই নান্দনিক স্থানটিতে প্রতিদিনই থাকে দর্শনার্থীদের ভিড়। তবে সাধারণ দিনের চেয়ে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বেশি ভিড় থাকে। এতে দেখা যায়, প্রতিদিন প্রায় দেড় হাজার দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখরিত থাকে আহসান মঞ্জিল।

বুধবার (৩০ নভেম্বর) রাজধানীর সদরঘাট এলাকায় অবস্থিত আহসান মঞ্জিলে গেলে দেখা যায়, বিভিন্ন বয়সী মানুষ নবাবী আমলের স্থাপনাটিতে ঘুরে দেখছেন। রাজধানীতে যে কয়টি পর্যটন স্থান রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম আহসান মঞ্জিল। নানা ব্যস্ততায় যারা ঢাকার বাইরে যেতে পারেন না তাদের অনেকে এখানে আসেন।

মিরপুর থেকে মাহমুদ হাসান নামে এক দর্শনার্থী জাগো নিউজকে বলেন, নবাবী আমলের রাজাদের বিষয়ে বই পড়লেও এসব স্থান নিজ চোখে দেখার একটা আনন্দ আছে। এতে করে ইতিহাস সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

দেড় হাজার দর্শনার্থীতে প্রতিদিন মুখরিত থাকে আহসান মঞ্জিল

কেরানীগঞ্জ থেকে আসা মো. জুনায়েদ হোসেন বলেন, বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানোর পাশাপাশি ঐতিহাসিক স্থান ঘুরে দেখা হবে তাই এখানে আসা। নবাবদের সম্পর্কে অনেক কিছুই জেনেছি।

যাত্রাবাড়ী থেকে আসা আরেক দর্শনার্থী ফয়সাল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ঢাকায় ঘুরতে যাওয়া যে কয়টি স্থান রয়েছে এটাই দেখা বাকি ছিল। খুব ভালো লাগছে।

আহসান মঞ্জিল জাদুঘরের নিরাপত্তা পরিদর্শক মো. হাসিবুল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ঢাকার একটি ঐতিহাসিক স্থান আহসান মঞ্জিল। ছুটির দিনে ও বিশেষ দিনগুলোতে কয়েক হাজার দর্শনার্থী ঘুরতে আসেন এখানে। প্রতিদিন গড়ে প্রায় দেড় হাজার দর্শনার্থী আসেন। করোনার সময় টিকিট সংখ্যা সীমিত থাকলেও এখন টিকিট রয়েছে পর্যন্ত।

দেড় হাজার দর্শনার্থীতে প্রতিদিন মুখরিত থাকে আহসান মঞ্জিল

ইতিহাস থেকে জানা যায়, অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে আহসান মঞ্জিলের এ জায়গায় একটি রংমহল ছিল। যা নির্মাণ করেন তখনকার জমিদার শেখ এনায়েত উল্লাহ। তার ছেলে মহলটি ফরাসি বণিকের কাছে বিক্রি করে দেন। পরে খাজা আলিমুল্লাহ ফরাসিদের কাছ থেকে আবার এটি কিনে নেন। তার ছেলে নওয়াব আবদুল গণি ১৮৫৯ সালে এখানে আহসান মঞ্জিলের নির্মাণ শুরু করেন। কাজটি শেষ হয় ১৮৭২ সালে। ১৮৯৭ সালের এক টর্নেডোয় ভবনটির অনেক ক্ষতি হলে নবাব আহসানুল্লাহ তা সংস্কার করেন। ১৯০৬ খ্রিষ্টাব্দে এখানে এক অনুষ্ঠিত বৈঠকে মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত হয়।

জমিদারি উচ্ছেদ আইনে ১৯৫২ সালে ঢাকার নবাব এস্টেট তৎকালীন সরকার অধিগ্রহণ করে। নবাব পরিবারের সম্পত্তির মধ্যে অধিগ্রহণ বহির্ভূত ছিল আহসান মঞ্জিল ও তৎসংলগ্ন আঙিনা।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর নবাব পরিবারের উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিরা বিদেশে পাড়ি জমান। এ দেশে যারা ছিলেন তারা বিরাট এ প্রাসাদ ভবনের রক্ষণাবেক্ষণে সক্ষম ছিলেন না। ফলে এটি ক্রমাগত ধ্বংসের দিকে যেতে থাকে। ১৯৭৪ সালে নবাব পরিবারের উত্তরসূরিরা আহসান মঞ্জিল নিলামে বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু দূরদৃষ্টি সম্পন্ন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভবনটির রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনুধাবন করেন। ১৯৭৪ সালের ২ নভেম্বর প্রাসাদ ভবনটি নিলামে বিক্রির সিদ্ধান্ত বাতিল করে দেন।

এরপর সংস্কার করে এখানে জাদুঘর ও পর্যটনকেন্দ্র স্থাপনের নির্দেশ দেন তিনি। ১৯৮৫ সালের ৩ নভেম্বর আহসান মঞ্জিল প্রাসাদ ও তৎসংলগ্ন চত্বর সরকার অধিগ্রহণ করে সেখানে জাদুঘর স্থাপনের কাজ শুরু করে। ১৯৯২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর আহসান মঞ্জিল জাদুঘরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ও জনসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

আরএসএম/জেডএইচ/জেআইএম