ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ভ্রমণ

সারিয়াকান্দি গিয়ে যা দেখবেন, যেভাবে যাবেন

ভ্রমণ ডেস্ক | প্রকাশিত: ১২:৪৭ পিএম, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

মুশফিকুর রহমান

উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার বগুড়ায় অবস্থিত মহাস্থানগড়। যা পূর্বে পুণ্ড্র রাজ্যের রাজধানী ছিল। এই মহাস্থানগড়ে প্রতিদিনই দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ভিড় দেখা যায়।

তবে মহাস্থানগড় ছাড়াও বগুড়া থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার পূর্বে যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত সারিয়াকান্দিতে আছে বেশ কয়েকটি দর্শনীয় স্থান।

সেসব দর্শনীয় স্থানগুলোতে অনেকেই ভ্রমণ করেন না। আবার অনেকে আছেন যারা সেসব স্থান সম্পর্কে জানেনই না।

একজন নদীপ্রেমী মানুষ কিংবা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে সারিয়াকান্দির দর্শনীয় স্থানে যেতে পারেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক সারিয়াকান্দির সেসব দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে–

কালিতলা ঘাট

অন্যান্য ঘাটের তুলনায় এ ঘাটেই পর্যটকদের ভীড় বেশি লক্ষ্য করা যায়। এখানে আছে বেশ কয়েকটি খাবারের দোকান ও হোটেল।

jagonews24

ছবি: সাজেদুর আবেদীন শান্ত

হোটেলগুলোতে গিয়ে নদীর রান্না করা মাছের স্বাদ উপভোগ করতে পারেন। এছাড়া নদীর সৌন্দর্য উপভোগ অথবা চরে গিয়ে ঘুরে আসতে চাইলে নৌকায় চড়তে পারেন।

প্রেম যমুনার ঘাট

দৃষ্টিনন্দন ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এ ঘাট। কালীতলা ঘাট ঘুরে অটোতে করে সরাসরি এখানে পৌঁছাতে পারবেন। এখানে এসে প্রেম করে বলে নাম প্রেম যমুনার ঘাট কি না তা জানা না থাকলেও, প্রেম যমুনার ঘাট নামটি শুনলে যেকেউ বেশ মজা পান।

এই ঘাটের খোলামেলা পরিবেশ দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। এরকম পরিবেশের সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে আপনিও এখানে যেতে পারেন।

দেবডাঙ্গা ফিস পাস

এটি কুতুবপুর ইউনিয়নের দেবডাঙ্গা গ্রামে অবস্থিত একটি স্থান। স্থানীয়দের কাছে এটি ‘সুইচ গেট’ হিসেবেও বেশ পরিচিত। সারিয়াকান্দি উপজেলা থেকে সিএনজি, অটো, রিকশা যোগে এখানে পৌঁছাতে পারবেন।

বর্ষা মৌসুমে এর সৌন্দর্য থাকে অন্যরকম। এই সুইচ গেটের বৈশিষ্ট্য হলো যখন যমুনা নদীর পানি বেড়ে যায় তখন এটি খুলে দেওয়া হয়। এতে যমুনা নদীর পানি বাঙালি নদীতে প্রবাহিত হয়।

দেবডাঙ্গা গ্রোয়েন বাঁধ

কালিতলা ঘাট কিংবা প্রেম যমুনার ঘাটে দর্শনার্থীরা গেলেও এটি সারিয়াকান্দি উপজেলা থেকে কিছুটা দূরে হওয়ায় এই স্থান অতোটাও পরিচিত হয়নি। তবে এর মনোরম পরিবেশ দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। এখানে সিএনজি, অটো অথবা ভ্যান যোগে পৌঁছাতে পারবেন।

jagonews24

ছবি: সাজেদুর আবেদীন শান্ত

এসব ঘাটে আছে ইঞ্জিনচালিত ও ইঞ্জিন ছাড়া নৌকা ও লঞ্চ পাবেন। আপনি চাইলে সেসবে চড়ে মাত্র ২০-৪০ টাকা খরচ করে নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন।

নদীপ্রেমী মানুষ অথবা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে অবসরে এর সবকটি স্থানে গিয়ে একদিনেই ঘুরে আসতে পারেন। এক্ষেত্রে প্রথমে কালীতলা ঘাট, এরপর প্রেম যমুনার ঘাট, তারপর ফিসপাস ও সবশেষে দেবডাঙ্গা গ্রোয়েন বাঁধে ঘুরতে যেতে পারেন।

এছাড়া যেতে পারেন সারিয়াকান্দির মথুরাপাড়া মসজিদে। মসজিদটি যমুনা নদীর পাড় ঘেঁষে হওয়ায় দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। এজন্য অনেকেই মসজিদটি দেখতে ভীড় করে।

স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, বন্যা হয়ে উঁচু উঁচু স্থান ডুবে গেলেও এখন পর্যন্ত এ মসজিদটি ডুবে যায়নি, এমনকি পানি পর্যন্তও প্রবেশ করে না।

বগুড়ায় কীভাবে যাবেন?

ঢাকাসহ যেকোনো জায়গা থেকে বগুড়া আসতে পারবেন। বাসের মধ্যে শ্যামলী পরিবহন, এসআর ট্রাভেলস, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শাহ ফতেহ আলী পরিবহন, ডিপজল এক্সপ্রেস, মানিক এক্সপ্রেস ইত্যাদির মধ্যে যে কোনোটি বেছে নিন।

ঢাকা থেকে বগুড়া রুটে বেশ কয়েকটি ট্রেন চলাচল করে। এরমধ্যে লালমনী এক্সপ্রেস অথবা রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনে বগুড়া পৌঁছাতে পারেন।

jagonews24

ছবি: সাজেদুর আবেদীন শান্ত

বগুড়া থেকে সিএনজি যোগে সরাসরি সারিয়াকান্দি পৌঁছাতে পারবেন। সিএনজি ভাড়া জনপ্রতি ৫০ টাকা। এরপর সারিয়াকান্দি সিএনজি স্ট্যান্ড থেকে একটি অটো অথবা রিক্সা ভাড়া নিয়ে এসব দর্শনীয় স্থানে যেতে পারেন।

থাকবেন ও খাবেন কোথায়?

সারিয়াকান্দি থাকার সেরকম কোনো ব্যবস্থা নেই। সেজন্য বগুড়া শহর থেকে কিছুটা দূরে ফাইভ স্টার হোটেল মম ইন, হোটেল নাজ গার্ডেন (চারমাথা), পর্যটন মোটেল (বনানী), নর্থওয়ে মোটেল (কলোনী) সহ আরও বেশ কয়েকটি হোটেল আছে।

বগুড়ার প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় বেশ কয়েকটি হোটেল আছে। এর মধ্যে হোটেল আকবরিয়া, সেলিম হোটেলসহ আছে নানা মানের হোটেল। এর মধ্যে যে কোনোটি বেছে নিতে পারেন।

লেখক: গণমাধ্যমকর্মী ও শিক্ষার্থী

জেএমএস/এমএস