বছরের পর বছর জলপ্রপাতের মাঝেও জ্বলছে অগ্নিশিখা
নিউ ইয়র্কের বাফেলোর দক্ষিণে চেস্টনাট রিজ পার্কের গভীরে বিস্ময়কর এক স্থানের দেখা মিলবে। বিশাল এক জলপ্রপাতের মাঝেই সেখানে দাউ দাউ করে জ্বলছে অগ্নিশিখা।
প্রাকৃতিক এই বিস্ময়ের ঘটনা সবার চোখকেই ছানাবড়া করে দেয়! অবাক করা এই ঘটনা ঠিক কীভাবে ঘটছে তার সঠিক কারণ আজও জানা যায়নি।
জানা যায়, জলপ্রপাতের নিচেই আছে এক প্রাকৃতিক গ্যাস পকেট। এ কারণে সেখানে আছে জলন্ত অগ্নিশিখা। এই চিরন্তন শিখা জলপ্রপাতের ঠিক কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। এই জ্বলন্ত শিখার মূল কারণ হলো ভূগর্ভস্থ প্রাকৃতিক গ্যাস পকেট।
এরি কাউন্টিতে অবস্থিত এই রহস্যময় জলপ্রপাত একটি বিশাল পার্কের অংশ হিসেবে পরিচিত। এই পার্কে বেশ কয়েকটি হাইকিং ট্রেইল, সাইকেল চালানোর পথ ও খেলার মাঠ আছে।
পর্যটক ও দর্শনার্থীদের ভিড় সব সময়ই লেগে থাকে সেখানে। জলপ্রপাতটি পার্কের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত। যদিও জলপ্রপাতের পানির স্রোতে মাঝে মধ্যেই অগ্নিশিখা নিভে যায়। তবে হাইকাররা গ্যাসের পকেট পুনরায় আলোকিত করে ও শিখাকে জ্বালিয়ে রাখে।
বছরের পর বছর ধরে এই জলপ্রপাতের মাঝখানে জ্বলছে অগ্নিশিখা। যদিও এই রহস্যময় জলপ্রপাত নিয়ে অনেক কিংবদন্তি গল্প ছড়িয়ে আছে। তবে বৈজ্ঞানিকভাবে কিছুই প্রমাণিত এখনো হয়নি।
প্রাথমিক বৈজ্ঞানিক তত্ত্বগুলো বলে, শিল নামক প্রাচীন ও অত্যন্ত উত্তপ্ত শিলার উপস্থিতির কারণে চিরন্তন শিখাটি প্রজ্বলিত আছে।
ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটির সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, জলপ্রপাতের নীচে ছোট চেম্বারের শিলাগুলো এ ধরনের প্রতিক্রিয়া তৈরি করার জন্য যথেষ্ট গরম নয়। তারা এক কাপ চায়ের সমান তাপমাত্রা সহ্য করে। আবার শিলটি ততটা পুরোনো নয় যতটা ভাবা হয়েছিল। সুতরাং জলপ্রপাতের নীচে শিল এমন প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে না।
এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর জন্য, শিলাগুলোর তাপমাত্রা জলের স্ফুটনাঙ্কের কাছাকাছি হতে হবে বা আরও গরম। যা ফলস্বরূপ কার্বন অণুগুলোকে ভেঙে দেয়, এভাবে প্রাকৃতিক গ্যাস দেয় ও জ্বলে অগ্নিশিখা।
প্রাকৃতিক চিরন্তন শিখা তখনই দেখা দেয়, যখন গ্যাস মাটির মধ্য দিয়ে প্রবেশ করে ব্যাকটেরিয়া মিথেন খায় ও এটি কার্বন ডাই অক্সাইডে রূপান্তর করে। শাশ্বত শিখা জলপ্রপাতে, গ্যাস থাকে তবে রূপান্তরিত হয় না, যা একটি চিরন্তন শিখার দিকে পরিচালিত করে।
সূত্র: ডেইলি মেইল/আউটলুক ইন্ডিয়া/ডিসকভারি
জেএমএস/জেআইএম