ঢাকার কাছেই মৈনট ঘাট
ছটির দিনে অবসর কাটাতে অনেকেই কাছাকাছি কোনো স্থানে ঘুরতে যেতে চান। বিশেষ করে রাজধানীবাসীরা ঢাকার খুব কাছাকাছি স্থানের সন্ধান করেন ভ্রমণের উদ্দেশ্যে। তেমনই এক দৃষ্টিনন্দন স্থান হলো মৈনট ঘাট। এটি মিনি কক্সবাজার নামেও পরিচিত।
ঢাকার খুব কাছাকাছি হওয়ায় মাত্র ২ ঘণ্টার মধ্যেই আপনি মিনি কক্সবাজারে যেতে পারবেন। আর খরচও হবে খুব কম। একদিনের ডে লং টুরে মৈনট ঘাট ভ্রমণে গিয়ে সারাদিন ঘুরে আবার সন্ধ্যায় আবার ঢাকায় ফিরে আসতে পারবেন খুব সহজেই।
পদ্মা নদীর কোলে মৈনট ঘাট। রাজধানীর দোহার থেকে দূরত্ব প্রায় ৮ কিলোমিটার। নদীর ওপারে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন। ঢাকার গুলিস্তান থেকে সরাসরি ঘাট পর্যন্ত বাস চলাচল করে। অন্যান্য সময়ের চেয়ে ছুটির দিনে খুব দ্রুত পৌঁছানো যায় মৈনট ঘাটে।
সেখানে গেলে আপনার কক্সবাজারের মতো মনে হবে। শুধু পাহাড়ের অভাব। ঘাটে সাজানো আছে সারি সারি বাহারি রঙের ছাতা। সেখানে হেলানো চেয়ার সাজানো আছে। দূরে তাকালে পদ্মার উত্তাল ঢেউ আপনাকে সমুদ্রের কথা মনে করিয়ে দেবে।
দেখতে পাবেন বড় বড় নৌকা, ছুটে চলা স্পিডবোট। বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই মিনি কক্সবাজার। ঘাটের কাছাকাছি দুই পাশে হোটেলের সারি। সেখানে চাইলে দুপুরের খাবার খেতে পারবেন খুব কম খরচেই।
ইলিশ ৬০ থেকে ৯০ টাকা। বড় সাইজের ইলিশ খেতে চাইলে আগেই অর্ডার দিতে হবে। এ ছাড়াও বোয়াল ৮০ থেকে ১০০ টাকা, চিংড়ি ৬০ থেকে ৮০ টাকা। ভাত ২০ টাকা প্লেট।
সেখান থেকে অবশ্যই মিষ্টি খেয়ে আসবেন। নিরঞ্জন মিষ্টান্নভান্ডার, মুসলিম সুইটস, রণজিৎ মিষ্টান্নভান্ডারসহ কিছু মিষ্টির দোকান আছে সেখানে। চমচম ও কালোজাম ১৬০ টাকা কেজি।
মৈনট ঘাটে কমবেশি সবাই স্পিডবোটে চড়ে পদ্মার বুকে ঘুরে বেড়ান। এক্ষেত্রে একটি মাঝারি সাইজের ট্রলার প্রতিঘণ্টার জন্য ৩০০-৫০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া নিতে পারে। সূর্যাস্তের সময় মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের সাক্ষী হবেন আপনি।
মৈনট ঘাটে যাবেন যেভাবে
ঢাকা থেকে মৈনট ঘাটে যাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো গুলিস্তানের গোলাপ শাহ’র মাজারের সামনে থেকে সরাসরি মৈনট ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া যমুনা পরিবহনে চেপে বসা।
৯০ টাকা ভাড়া আর দেড় থেকে ২ ঘণ্টা সময়ের বিনিময়ে আপনি পৌঁছে যাবেন মৈনট ঘাটে। ফেরার সময় একই বাসে আবার ঢাকা চলে আসবেন। মৈনট থেকে ঢাকার উদ্দেশে শেষ বাসটি ছেড়ে আসে সন্ধ্যা ৬টায়।
ডে লং টুরে গেলে এর পাশাপাশি আরও দেখে আসতে পারেন লক্ষ্মীপ্রসাদ নামক স্থানের পোদ্দারবাড়ি। জজবাড়ি, উকিলবাড়ি, কোকিলপ্যারি দালান, খেলারাম দাতার বাড়িসহ যাকে স্থানীয়ভাবে আন্ধার কোঠা বলা হয়।
এসব দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে দেখতে চাইলে মাঝিরকান্দার আগে কলাকোপা নামক স্থানেই নামতে হবে।
তবে মনে রাখবেন, সাঁতার না জানলে গোসল করার সময় পদ্মার বেশি গভীরে যাবেন না।
জেএমএস/এমএস