একদিনেই সোমেশ্বরী-চীনামাটির পাহাড় ভ্রমণ
মেহেদী হাসান তালহা
মগরা ও কংস নদী পরিবেষ্টিত এই জেলা দেখতে অনেকটা চোখ বা নেত্রের মতো। তাই সোজাসাপ্টা নাম নেত্রকোনা। ময়মনসিংহ বিভাগের অন্তর্ভুক্ত বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের জেলা নেত্রকোনা। রাজধানী থেকে গাজীপুর, ময়মনসিংহ জেলা মাড়িয়ে পৌঁছাতে হয় সীমান্তবর্তী জেলা নেত্রকোনায়।
সিদ্ধান্ত হলো ট্রেনে করেই যাবো, রাজধানী থেকে বের হওয়ার সাথে সাথেই ট্রেনের পরিবেশ অন্যরকম হয়ে গেল। সবাই ঘুমানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, আর আমি দরজায় দাঁড়িয়ে বাইরের আবহাওয়া উপভোগ করার চেষ্টা করছি।
নির্দিষ্ট একটা তারার ওপর চোখ আটকে গেল। আকাশে তখন সে একাই জ্বলজ্বল করছিল। শীতল পরিবেশ। ট্রেনের ঝকঝকাঝক শব্দের সাথে তারকার অদ্ভুত সৌন্দর্য্য, পরিবেশটাকে করে তুলেছিল আরও রোমান্টিক।
উদ্দেশ্য যেহেতু নেত্রকোনা ঘুরে দেখার, তাই গিয়ে থামলাম শ্যমগঞ্জ রেলস্টেশনে। ট্রেন থেকে নেমে সব যাত্রীরা যে যার মতো করে চলে গেল আপন গন্তব্যে। অপরিচিত এক স্টেশনে গভীর রাতে আমরা কয়েকজনই শুধু রয়ে গেলাম।
স্টেশন খুব একটা বড় না। অন্যান্য স্টেশনের মতো এখানে তেমন ব্যস্ততা নেই। নিয়ম করে প্রতিদিন কয়েকটা ট্রেন থামে এখানে। কিছুটা ব্যস্ততা বাড়ে স্টেশন মাস্টার আর টং দোকানদারদের। তারপর আবার শূন্যতা।
স্টেশন থেকে ট্রেন ছেড়ে যেতেই ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন স্টেশন মাস্টার। রাতে আর কোনো ট্রেন আসবে না। তাই সকাল পর্যন্ত জেগে থাকার কোনো মানে হয় না। আমাদের কারণে সেটাও হয়ে উঠলো না তার। এদিকে ফোনেও চার্জ নেই। স্টেশন মাষ্টারের সঙ্গে কথা বললাম ফোন চার্জ দেওয়ার বিষয়ে।
প্রথমে রাজি না হলেও পরে রাজি হলেন, ফোনগুলো ভেতরে চার্জে দিয়ে উনি ঘুমিয়ে পড়লেন। স্টেশনজুড়ে সুনশান নীরবতা। শুধু বয়স্ক একজন লোক খুলে রেখেছেন তার দোকান। ছোট্ট খুপরি ঘরের মতো দোকানে স্ত্রীর সঙ্গে নিয়ে বসে আছেন তিনি। তাই স্টেশন ছেড়ে গিয়ে আশ্রয় নিলাম তার দোকানে।
গভীর রাতেও তিনি আমাদের জন্য চায়ের ব্যবস্থা করলেন। প্রচন্ড কুয়াশায় একটু সামনেও কিছু স্পষ্ট দেখা যায় না। হঠাৎ ইচ্ছে হলো আগুন পোহাবো। তখন মনে করার চেষ্টা করছিলাম শেষ কবে এমন শীতের রাতে আগুনের সামনে বসেছিলাম। কিছুটা অতীতে ফিরে গেলাম, মনে করার চেষ্টা করেও লাভ হলো না।
সময় যত গড়াচ্ছে ভোরের সময় ততই ঘনিয়ে আসছে। সঙ্গে যারা ছিলেন কয়েকজন শীতের কাপড় নেননি। তারা শীতে খুব ভালোভাবেই কাবু হলেন। আগুন পোহানোর পর চা খাওয়ার ইচ্ছে জাগলো, টং দোকানদার আমাদের জন্য চায়ের ব্যবস্থা করে দিলেন। এই প্রচণ্ড শীতের রাতে চায়ের আড্ডা বেশ ভালোই জমে উঠেছিল।
একটু পরই মসজিদ থেকে ফজরের আজান ভেসে আসলো। একটু একটু করে আলো ফুটতে শুরু করেছে। স্টেশনেও ভিড় জমাতে শুরু করেছে। আলো ফুটতেই আমরা রওনা দিলাম পরবর্তী গন্তব্যে। স্টেশন থেকে হেঁটেই পৌঁছে গেলাম শ্যামগঞ্জ বাজারে।
মুক্তিযুদ্ধে যখন পাকিস্তানীরা নেত্রকোণা আক্রমণ করে, তখন মুক্তিবাহিনীর যুদ্ধের রসদ আর ব্যাংক থেকে লুট করা অর্থ ও স্বর্ণ নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার সময় স্থানীয়রা শ্যামগঞ্জেই তাদের বাঁধা দেয়। তাই এ এলাকায় আসার পর কিছুটা নস্টালজিক হয়ে গেলাম।
শ্যামগঞ্জ বাজারে এসে সকালের নাস্তাটা সেরে নিলাম। তখন সময় বাজে সকাল ৭টা। নাস্তা সেরে কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে উতরাইল বাজারগামী বাসের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম ৯টার আগে সেখানে কোনো লোকাল বাস পাওয়া যাবে না। আর দূরপাল্লার বাস মাঝপথ থেকে যাত্রী ওঠায় না।
যেহেতু একদিনের ট্যুরে বেরিয়েছিলঅম, তাই সময় নষ্ট না করে সিএনজি ভাড়া করলাম ৬০০ টাকায়। তিনি আমাদেরকে নিয়ে যান সোমেশ্বরী ব্রীজ পর্যন্ত। সিএনজি যখন ছুটতে শুরু করলো তখন শীতের তীব্রতা খুব ভালোভাবে বুঝতে পারলাম। শীতের কাপড় থাকা স্বত্ত্বেও প্রচণ্ড ঠান্ডায় কাঁপছিলাম।
ট্রেনে ঘুমাইনি, স্টেশনেও ঘুমানোর সুযোগ পাইনি, তাই গাড়িতে বসা মাত্রই চোখ জুড়ে নেমে এলো রাজ্যের ঘুম। একসময় নিজের সঙ্গে লড়াই করে হেরে গেলাম। গাড়ি ছুটছে আর আমি ঘুমাচ্ছি। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই আমরা পৌঁছে গেলাম সোমেশ্বরী ব্রীজে। মনে হচ্ছিল, এটা কোনো নদী নয়, যেন পাহাড় থেকে নেমে আসা ছোট্ট কোনো খাল।
শীতের ভরা মৌসুমের আগেই পুরোপুরি শুকিয়ে গেছে। ছোট্ট ঝিরির মতো এক জায়গা দিয়ে কোনো মতে পানি চলাচল করে নিজের বেঁচে থাকার অস্থিত্বের জানান দিচ্ছে। শুধু সোমেশ্বরী নয়, সীমান্তবর্তী প্রায় সবগুলো নদীরই এখন এই অবস্থা। শুকনো মৌসুম আসার আগেই পানিশূন্য হয়ে যায়। সোমেশ্বরীর বুকচিড়ে তখন কেবল বালুর বিচরণ থাকে।
সোমেশ্বরী ব্রিজের কাছে নেমে জনপ্রতি ১০ টাকা করে একটি অটো ভাড়া করলাম টেরিবাজার ঘাট পর্যন্ত। ভাঙ্গাচোরা রাস্তা, এই রাস্তা দিয়ে চলার সময় অটোরিকশা দোলনার মতো দুলছিল। ৫ মিনিটের মধ্যেই আমরা পৌঁছে গেলাম টেরিবাজার ঘাটে। এখানে এসে এক অদ্ভুত সুন্দর দৃশ্যের স্বাক্ষী হলাম।
সোমেশ্বরী নদীর ওপর পারাপারের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে অস্থায়ী বাঁশের সেতু। মানুষজন হাঁটতে গেলেও এটা দুলতে থাকে। তবুও এটা দিয়ে স্থানীয়রা নির্দ্বিধায় অটোরিকশা, মোটর বাইক দিয়ে পার করছেন। কেউ কেউ প্রাইভেট কারও নিয়ে যাচ্ছেন এর উপর দিয়ে।
সোমেশ্বরীর এই অংশে কিছুটা পানি আছে। এখানকার পানিগুলোও বেশ স্বচ্ছ। সুন্দরের কারণে অনেকটা নীলবর্ণ ধারণ করেছে। পানির এই সুন্দর রূপ দেখে ছবি তোলার লোভ সামলাতে পারলাম না। বেশ কিছুক্ষণ এখানে থেকে কয়েকটা ছবি তুলে নিলাম। এখানে ছবি তোলা শেষ করে আমরা চলে আসলাম শিবগঞ্জ বাজারে।
এখান থেকে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম অটোরিকশা কিংবা মোটর সাইকেল। আমাদের পরবর্তী গন্তব্য রানিখং মিশনারী। একটা অটো ভাড়া করলাম জনপ্রতি ২৫ টাকা দিয়ে। আমাদের নিয়ে অটো ছুটে চললো রানিখং মিশনারীর উদ্দেশ্যে।
সমতল ভূমি থেকে রাস্তা বেশ কিছুটা ওপরে, দু পাশে সারি সারি ইউক্লিপ্টাস গাছ, গাছের নীচে আবার নাম না জানা পাহাড়ি ফুল। রাস্তার একপাশে গ্রাম আর অন্য পাশে ধানের ক্ষেত। এ যেন এক মনোরম দৃশ্য!
প্রায় ৩০ মিনিট চলার পর আমরা পৌঁছে গেলাম রানিখং মিশনারিতে। সেখানে আমাদের গন্তব্য ছিল খ্রিস্টান মিশনারি ক্যাম্প। অনেকটা পাহাড়ের উঁচুতে থাকা এই ক্যাম্প থেকে সোমেশ্বরী নদীর সৌনদর্য্য বেশ উপভোগ করার মতো। তবে আমরা যখন গেলাম তখন দেখি গেট বন্ধ, তাই একদম উপরে যাওয়ার আর সুযোগ হলো না। কিছুটা ওপরে উঠে সোমেশ্বরী নদীর কয়েকটি ছবি তুলে নিলাম।
নীচে নীল পানির সোমেশ্বরী নদী আর ঠিক ওপারে ভারতের বড় বড় পাহাড়। এমন একটি দৃশ্য যে কোনো প্রকৃতি প্রেমীর মন ভুলিয়ে দিতে যথেষ্ট। মিশনারী ক্যাম্প থেকে নেমে হেঁটেই রওনা দিলাম বিজয়পুর বিজিবি ক্যাম্পের দিকে।
উদ্দেশ্য সেখান থেকে সোমেশ্বরী নদীকে একদম কাছ থেকে দেখা। সময় পেলে সেখানকান উপজাতী পল্লীও ঘুরে আসবো। কিছুক্ষণ সামনে যাওয়ার পরই পেয়ে গেলাম বিজিবি ক্যাম্প। এর পাশেই রাস্তার মধ্যে চেকপোস্ট, আর বড় করে লেখা ‘সাবধান সামনে ভারত’।
বুঝতে পারলাম আমাদের আর সামনে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এখানে একপাশে পাহাড়, আরেক পাশে সোমেশ্বরী নদী। স্থানীয়রা তাদের বাইসাইকেল নিয়ে আসছেন, চেকপোস্টে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের আরও সামনে যেতে দেওয়া হচ্ছে। তবে পর্যটকদের জন্য সামনে যাওয়ার আর কোনো সুযোগ নেই।
আমরা চলে এলাম সোমেশ্বরী নদীতে। অন্যান্য অংশের তুলনায় এই জায়গার পানি অনেক বেশি স্বচ্ছ ও নীল। ঘাটে বেঁধে রাখা সারি সারি নৌকা। ২০০-৫০০ টাকার বিনিময়ে পর্যটকদের ঘুরিয়ে নিয়ে আসে জিরো পয়েন্ট থেকে।
সোমেশ্বরীর স্বচ্ছ পানিকে একটু কাছ থেকে ছুঁয়ে দেখতে ও জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ঘুরে আসতে বেশিরভাগ পর্যটকই এসব নৌকা ভাড়া করেন। যেখান থেকে নৌকা ছাড়ে এর পাশেই একজন জেলেকে মাছ ধরতে দেখলাম। শহুরে জীবনে নদীর তাজা মাছ কল্পনা করাই কঠিন।
বয়সের ভারে ন্যুজ বৃদ্ধ জেলের জালের দিকে উপস্থিত সবার চোখ। প্রতিবার জাল ফেলছে আর জালে উঠে আসছে ছোট ছোট মাছ। সেখানে ঘণ্টাখানেক থাকার পর আমরা বিরিসিরি যাওয়ার জন্য রওনা হলাম। বিজিবি ক্যাম্পের পাশেই একটা ছোট্ট বাজার।
সেখানে পাওয়া যায় ভারতীয় বিভিন্ন প্রসাধনী ও খাবার, ঘুরতে আসা অনেকেই এসব কেনেন। বিজয়পুর বিজিবি ক্যাম্প থেকে চীনামাটির পাহাড় যাওয়ার জন্য পুনরায় একটা অটো ভাড়া করলাম ১৮০ টাকা দিয়ে। প্রায় ২০ মিনিট চলার পর আমরা পৌঁছে গেলাম আমাদের কাঙ্খিত চীনা মাটির পাহাড়ে।
ততক্ষণে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হচ্ছে, ক্ষুধাও লেগেছে সবার। সেই ভোরবেলা নাস্তা করার পর আর খাবারের কথা মনেই ছিল না। চীনা মাটির পাহাড়গুলোর পাশেই কয়েকটি দোকান বসেছে। যেগুলোতে বিভিন্ন ধরনের ভারতীয় চকলেট ও প্রসাদনী পাওয়া যায়। এর পাশে আবার কয়েকটি রেস্ট্রুরেন্টও আছে। তবে খাবারের মানের তুলনায় দাম অনেক বেশি।
দূর থেকে ঘুরতে আসা পর্যটকরা অনেকটা বাধ্য হয়েই সেখানে খাবার খান। আর ব্যবসায়ীরাও এই সুযোগটা কাজে লাগায়। আশেপাশে কোনো বাজার কিংবা খাবারের মতো কিছুই নেই, তাই কোন উপায়ান্তর না পেয়ে আমরাও বাধ্য হয়েই এরকম একটা রেস্ট্রুরেন্টে খেতে বসলাম।
সারাদিনের ক্লান্তি আর দুপুরবেলার খাবারের পরই চোখ জুড়ে আসলো রাজ্যের ঘুম, রেস্ট্রুরেন্টের টেবিলেই মাথা এলিয়ে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। কাস্টমারদের ভিড় ছিল না তাই ম্যানেজারও কোনো কিছু বললেন না। এখানে কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে তারপর চলে গেলাম চীনা মাটির পাহাড়ে। পাহাড় বলা হলেও এগুলো মূলত ছোট ছোট টিলা।
একপাশে গ্রাম আর অন্যান্য পাশে বিস্তৃত ফসলের মাঠ। মাঠের পরেই আবার ছোট-বড় অসংখ্য পাহাড়, এ যেন কল্পনায় ভাসতে থাকা ছবির মতো এক দৃশ্য। শুধু এই দৃশ্য দেখার জন্য কত দূর দূরান্ত থেকে লোকজন ছুটে আসেন। পাহাড়ের মাঝখানে খননকাজের ফলে গর্ত তৈরি হয়েছে। সেই গর্তে জমে থাকা স্বচ্ছ পানিগুলো এই জায়গার সৌন্দর্য্য যেন আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
ঘুরতে আসা পর্যটকরা অনেকেই এখানে গোসল করেন। কেউ কেউ যাওয়ার সময় স্মৃতি হিসেবে সঙ্গে সাদা মাটি নিয়ে যান। এদিকে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হচ্ছিল তখন। সূর্য লাল বর্ণ ধারণ করে পাহাড়ের আড়ালে লুকিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। আমরাও ফিরে আসার জন্য প্রস্তুতি নিলাম।
যেখানে এসে অটো থেকে নেমেছিলাম সেখান থেকে আরেকটা অটো ভাড়া করে ছুটলাম উতরাইল বাজারের উদ্দেশ্যে। প্রায় ২০ মিনিটের মধ্যেই আমরা পৌঁছে গেলাম সোমেশ্বরীর তীরে। এখানেও একটা কাঠের সাঁকো আছে। যেটি দিয়ে শুধু মানুষ আর মোটর সাইকেলই চলাচল করে। এই সাঁকো পার হতে ৫ টাকা ভাড়া দিতে হয়।
সাঁকো পার হয়ে আমরা চলে আসলাম নদীর ওপারে। এপারে চলছে বালু উত্তোলণের মহোৎসব। এখানকার বালুগুলো তুলনামূলক ভালো হওয়ায় চাহিদাও বেশি। তাই বিশাল জায়গাজুড়ে চলছে বড় বড় মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন। কয়েকজনকে দেখা গেল কয়লার খোঁজ করছেন। প্রতিদিন যা পান, তা বিক্রি করেই চলে তাদের সংসার।
বালুচর পার হয়ে রাস্তায় উঠে আবার একটা অটো ভাড়া করলাম রানিখং বাজার পর্যন্ত যাওয়ার জন্য। জনপ্রতি ১০টাকা ভাড়ায় আমরা সোজা চলে আসলাম রানিখং বাজারে। সেখান থেকে আমাদের পরবর্তী গন্তব্য ময়মনসিংহ রেলস্টেশন। নেত্রকোণা থেকে কোন ট্রেনের টিকিট ম্যানেজ করতে না পারায় আমাদের ছুটতে হচ্ছে এতদূর।
বাসে চড়ে রওয়ানা দিলাম ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে। তখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে। গাড়িতে যাত্রীর প্রচণ্ড ভিড়, কোনোমতে একটি বসার সিট পেলাম। সারাদিনের ক্লান্তির কারণে বাসে উঠে বসতেই ঘুম চলে আসলো। ময়মনসিংহ পর্যন্ত যেতে প্রায় ৩ ঘণ্টা লেগেছিল। তবে ঘুমিয়ে পড়ার কারণে এই দীর্ঘ যাত্রাপথের কোনো কিছুই মনে নেই।
নেত্রকোনা যেতে হলে খুব একটা পূর্ব পরিকল্পনার দরকার নেই। তবে ট্রেনে যেতে চাইলে ৩-৪ দিন আগে টিকিট কেটে নিতে হবে। তাৎক্ষণিক টিকিট কাটার কথা চিন্তা মাথায় রাখলে টিকিট নাও পেতে পারেন।
যদি বাজেট ট্যুরের প্ল্যান করেন তাহলে কমপক্ষে ৫ জন হলে ভালো হয়, যেহেতু বেশিরভাগ জায়গা ঘুরে দেখতে হয় অটোরিকশা দিয়ে, এতে অন্তত ৫ জন হলে খরচ কিছুটা কম পড়বে।
লেখক: শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যমকর্মী
জেএমএস/এএসএম