ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ভ্রমণ

পাখির চোখে খাগড়াছড়ি দেখতে যেখানে যাবেন

জেলা প্রতিনিধি | খাগড়াছড়ি | প্রকাশিত: ০১:৪০ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর ২০২১

খাগড়াছড়ি জেলা শহরের অদুরে ঢাকা-খাগড়াছড়ি সড়কের পাশে পাথুরে প্রাকৃতিক সুরঙ্গখ্যাত আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র। সেখানে নির্মাণ করা হয়েছে নান্দনিক কুঞ্জছায়া। প্রবেশমুখেও নির্মাণ করা স্বর্ণ তোরণ। কুঞ্জছায়া থেকে পাখির চোখে দেখা মিলবে নয়নাভিরাম খাগড়াছড়ি শহর আর দূরের সবুজ পাহাড়। কুঞ্জছায়া আর স্বর্ণ তোড়ণ নির্মাণের মাধ্যমে পাল্টে যেতে শুরু করেছে অবহেলিত আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র।

পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়ির এক সময়ের একমাত্র পর্যটন কেন্দ্র দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ছিল। তবে খাগড়াছড়ির পর্যটন বান্ধব জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাসের হাত ধরে বদলে যেতে শুরু করেছে আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র। জেলা শহর থেকে পাহাড়ি সড়কের পাশে মাত্র ৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই পর্যটন কেন্দ্রটি।

jagonews24

কবর্তমানে স্থানটি পর্যটনবান্ধব করতে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন। বাস্তবায়ন করা হচ্ছে মাস্টার প্ল্যান। গৃহিত মাষ্টার প্লান বাস্তবায়ন হওয়ার পর আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র পর্যটকদের দৃষ্টি কাড়বে।

১৯৮৩ সালে খাগড়াছড়ি জেলা ঘোষণার পর রহস্যময় সুরঙ্গ খ্যাত আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রটির দায়িত্ব গ্রহণ করে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন। তখন এ পর্যটন কেন্দ্রের একমাত্র আকর্ষণ ছিল পাথুরে প্রাকৃতিক সুরঙ্গ।

jagonews24

দেশের অন্যতম র্দীঘ প্রাকৃতিক সুরঙ্গকে ঘিরে পর্যটনের ব্যাপক সম্ভাবনা থাকলেও এখানে প্রাকৃতিক এ সুরঙ্গ ছাড়া পর্যটনবান্ধব তেমন কোন স্থাপনা ছিল না। ফলে প্রাকৃতিক এ সুরঙ্গ দেখেই ফিরে যেত পর্যটকরা।

অবশেষে দীর্ঘ বছর পরে আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রকে র্পয়টকদের কাছে আকর্ষণীয় ও পর্যটন বান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে মাষ্টারপ্লান গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন। মাষ্টারপ্লানের অংশ হিসেবে ইতিমধ্যেই নির্মিত হয়েছ ভিউপয়েন্ট কুঞ্জছায়া ও প্রবেশমুখে নির্মাণ করা হয়েছে নান্দনিক ‘স্বর্ণ তোড়ণ’। নির্মাণ করা হচ্ছে ঝুলন্ত ব্রিজ, নন্দনকানন পার্ক, এমপি থিয়েটার ও খুমপুই রেস্ট হাউস।

jagonews24

আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র জেলার প্রধান পর্যঠন কেন্দ্র হলেও সম্ভাবনা অনুযায়ী তেমন কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি জানিয়ে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, এরই মধ্যে কয়েক কোটির টাকা ব্যয়ে আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের উন্নয়নে মাস্টার প্ল্যান গ্রহণ করা হয়েছে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজও এগিয়ে যাচ্ছে। পাহাড়ের যে ধরনের স্থাপত্য শৈলী দেখা যায় তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই প্রায় ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে দৃষ্টিনন্দন স্বর্ণ তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। নির্মাণ করা হয়েছে ভিউ পয়েন্ট কুঞ্জছায়া।

jagonews24

আলুটিলার দুই পাহাড়ের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের জন্য ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে ঝুলন্ত ব্রিজ। প্রাকৃতিক সুরঙ্গ দেখে ঝুলন্ত ব্রিজের মাধ্যমে পর্যটকরা এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ের যেতে পারবে।

পাহাড়গুলোতেও পর্যটনবান্ধব স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এরই মধ্যে আছে ল্যান্ডস্কেল গার্ডেনিং করা হচ্ছে। যেখানে বসে পর্যটকরা পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবে।

jagonews24

আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রে নির্মাণ করা হবেব ভিউ পয়েন্ট বা ছবি কর্ণার। পাহাড়ের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে নির্মাণ করা হচ্ছে এএমপি থিয়েটার। সেখানে দর্শক গ্যালারিতে বসে ৫০০ পর্যটক একসঙ্গে পাহাড়ি সংস্কৃতি দেখতে পারবেন।

সাজেক বেড়াতে আসা পর্যটকরা খাগড়াছড়ি শহরে রাতযাপন করে জানিয়ে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক বলেন, পর্যঠকরা আলুটিলা পাহাড়ে রাতযাপনসহ পাহাড়ের সৌন্দর্য্য উপভোগ তরতে পারে সেজন্য আলুটিলা পাহাড়ে দুই কোটি টাকা ব্যয়ে চার তলা বিশিষ্ট ‘খুমপুই রেস্ট হাউস’ নির্মাণ করা হচ্ছে।

jagonews24

আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের উন্নয়নে জেলা প্রশাসন ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে জানিয়ে আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের তত্বাবধায়ক চন্দ্র কিরণ ত্রিপুরা ও কোকোনাথ ত্রিপুরা বলেন, এরইমধ্যে কুঞ্জছায়া ও প্রবেশমুখে নান্দনিক ‘স্বর্ণ তোড়ণ’ নির্মাণ করা হয়েছে।

পর্যটনের উন্নয়নে আরো বেশকিছু স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে পর্যটকদের আগমনও বেড়েছে। সরকারি ছুটিতে প্রতিদিন ১০০০ পর্যটক আলুটিলা বেড়াতে যান। ঝুলন্ত ব্রিজসহ অন্যান্য উন্নয়ন কাজ শেষ হলে পর্যটকদের আগমন আরও বাড়বে।

jagonews24

আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রে দিনে ও রাতে আলাদা আলাদা সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। এ বিষয়ে কপি হাউজের কর্ণধার সজিব বলেন, একটা সময় সন্ধ্যার পর আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রে ভুতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি হলেও বর্তমানে আলোর ব্যবস্থা করার পর এখানকার রাতের দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। রাতের বেলায় আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রে বসে খাগড়াছড়ি জেলা শহরের সৌন্দর্য্য উপভোগ করা যায়।

jagonews24

খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রে ঝুলন্ত ব্রিজ, নন্দন পার্ক ও রেস্টহাউসসহ মাষ্টার প্লানের কাজ শেষ হলে আলুটিলা পর্যটকদের কাছে আরো আর্কষণীয় হয়ে উঠবে। পর্যটন খাগড়াছড়ির অর্থনীতির অন্যতম প্রধান খাত মন্তব্য করে তিনি বলেন, এজন্যই আলুটিলাকে পর্যটক বান্ধব করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

মুজিবুর রহমান ভুইয়া/জেএমএস/এএসএম

আরও পড়ুন