বর্ষায় একদিনেই যেভাবে ঘুরবেন নিকলী হাওর
হাওরের সবটুকু সৌন্দর্য যেন নিকলীতে গেলেই দেখা যায়। চারপাশে জলরাশি তার মাঝখান দিয়ে পিচঢালা পথ। এই পথ ধরে যতই এগিয়ে যাবেন; ততই হাওরের সৌন্দর্য মুগ্ধ করবে আপনাকে।
বর্ষার এই মৌসুমে হাওরের সৌন্দর্য দ্বিগুণ বেড়ে যায়। এখনই উত্তম সময় হাওরে ঘুরে বেড়ানোর। চাইলে সময় করে একদিনেই ঘুরে আসতে পারেন নিকলী হাওরে।
কিশোরগঞ্জের নিকলী, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম ও ইটনা উপজেলাজুড়ে বিস্তৃত নিকলী হাওর। এ হাওরের সৌন্দর্যে খুঁজে পাওয়া যায় গ্রামীণ পরিবেশের স্বকীয়তা। আর শহুরে জীবনে বেড়ে ওঠা তরুণ বন্ধুদের কাছে জানা-অজানার মধ্যে লুকিয়ে থাকা এমন সব জায়গাই সবচেয়ে আকর্ষণীয়।
ঢাকা কিংবা দেশের যেকোনো জায়গা থেকে নিকলী হাওরে গেলে প্রথমে নিকলী বেড়িবাঁধে যেতে হবে। বেড়িবাঁধ থেকে একটি নৌকা ভাড়া করে ঘুরতে পারবেন পুরো হাওর। যদিও নৌকা মালিকেরা আপনার কাছে বেশি দাম চাইতে পারে। সেক্ষেত্রে বিচক্ষণতার সঙ্গে দরদাম করে মূল্য নির্ধারণ করে নিতে হবে।
যতই নৌকা পানির স্রোতের সঙ্গে সামনে এগিয়ে যাবে; ততই হাওরের আসল সৌন্দর্য দেখতে পারবেন। ভাগ্য যদি ভালো হয় আর সেদিন যদি বৃষ্টি পড়ে তাহলে হাওরে আরও সুন্দর একটা সময় কাটাতে পারবেন।
হাওরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে ছাতিরচরে যেতে পারবেন। সেখানে দেখবেন বিস্ময়কর এক দৃশ্য। পানির নিচে ডুবন্ত এক সবুজ বন। স্তরে স্তরে সাজানো সবুজ গাছ। এসব গাছের বুক বরাবর পানিতে ভাসতে থাকবেন আপনি। অনেকটা রাতারগুলের মতোই।
নিকলী বেড়িবাঁধ থেকে নৌকায় ছাতিরচর যেতে সময লাগবে ঘণ্টাখানেক। নৌকায় ৩ ঘণ্টা ঘুরলেই মোটামুটি অনেকটা জায়গা ঘুরে আসতে পারবেন। যদি সময় থাকে তাহলে যেতে পারেন মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সংযুক্ত রাস্তাটি দেখতে।
এক থেকে দেড় ঘণ্টায় নিকলী থেকে সেখানে পৌঁছাতে পারবেন। সবশেষে আবারও ফিরে যেতে হবে নিকলী বেড়িবাঁধ। একদিনের মধ্যেই চাইলে ঘুরে আসতে পারেন নিকলী হাওর।
কোথায় খাবেন?
নিকলীতে খাবারের জন্য বেড়িবাঁধ এলাকায় কিছু খাবারের হোটেল পাবেন। সেখানে চাইলে দুপুরের খাবার সেরে নিতে পারেন। খাবারের মেন্যু হিসেবে প্রথম পছন্দ হতে পারে হাওরের তাজা ও সুস্বাদু মাছ। জনপ্রতি ১৫০-২০০ টাকার ভেতর এখানে আপনার খাবার সেরে নিতে পারবেন।
কীভাবে যাবেন?
দেশের যেকোনো স্থান থেকেই আপনি গাড়ি কিংবা বাস অথবা ট্রেনে নিকলী হাওরে আসতে পারেন। বাসে ঢাকার মহাখালী কিংবা সায়দাবাদ থেকে ১৯০-২২০ টাকার ভেতর আসতে পারবেন। মহাখালী থেকে জলসিঁড়ি বাসের মাধ্যমে এবং সায়দাবাদ থেকে অনন্যা সুপার দিয়ে আপনি সরাসরি কটিয়াদি বাস স্ট্যান্ডে চলে আসবেন।
ঢাকা থেকে কটিয়াদি আসতে সময় লাগবে প্রায় ৩ ঘণ্টা। আসার পর সেখান থেকে সিএনজি রিজার্ভ করে নিকলী হাওর যেতে পারবেন। রিজার্ভ করলে ভাড়া ৩৫০ টাকার ভেতর হবে।
ট্রেনে আসতে হলে আপনাকে ঢাকার কমলাপুর কিংবা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে এগারসিন্দুর প্রভাতী ট্রেনে (বুধবার বন্ধ) সকাল ৭টার দিকে কমলাপুর থেকে রওনা দিয়ে আপনি সরাসরি গচিহাটা রেলস্টেশনে চলে আসবেন।
ট্রেনে আসতে আপনার খরচ হবে ১২৫ থেকে ২০০ টাকার ভেতর শ্রেণিভেদে। ট্রেনে সময় প্রায় ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট কিংবা ৩ ঘণ্টার মত লাগবে। গচিহাটা আসার পর রেলস্টেশন থেকে বের হয়ে একটি ইজি বাইক কিংবা সিএনজি দিয়ে ভাড়া ৩৫ টাকা কিংবা রিজার্ভ করে ২৫০ টাকার ভেতর ১ ঘণ্টার ভেতর নিকলী হাওর এ পৌঁছে যাবেন।
জেএমএস/জিকেএস