যে গ্রামে গেলে উধাও হয়ে যায় মানুষ!
রহস্যময় পৃথিবীতে বিস্ময়ের শেষ নেই। পৃথিবীতে অনেক রহস্যময় স্থান রয়েছে। যেগুলো সম্পর্কে খুব কম মানুষই জানেন। তেমনই এক স্থান হলো রাশিয়ার উত্তর ওসেটিয়ার দারগাভসে। রূপ-বৈচিত্র্যে অনন্য গ্রামটির প্রতি আকর্ষণ বোধ করে পর্যটকরা। আর সে সুযোগেই নিজ সৌন্দর্যের মায়াজালে গ্রামটি উধাও করে দেয় তাদের।
রহস্যময় গ্রামটি ‘মৃতের শহর’ বলেও পরিচিত। রাশিয়ার গ্রামটি খুবই নির্জন। ভয়ে কেউ সেখানে যাওয়ার সাহস দেখায় না। উঁচু পাহাড়ের মাঝে লুকিয়ে থাকা এ গ্রামে সাদা পাথরের প্রায় ৯৯টি সেলার রয়েছে। যেখানে স্থানীয়রা তাদের পরিবারের মৃতদেহ সমাহিত করে।
বলা হয়, এ সমাধিগুলো ১৬ শতকে নির্মিত হয়। বিশাল এক কবরস্থানের এলাকা এটি। জায়গাটি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে বিভিন্ন অন্ধ বিশ্বাস রয়েছে। তারা বিশ্বাস করেন, এ গ্রামে যদি কেউ ঘুরতে আসেন; তবে তিনি আর ফিরতে পারেন না।
গ্রামটি দুই পাহাড়ের মাঝে হওয়ায় সেখানে পৌঁছতেও বেগ পেতে হয়। পাহাড়ের মাঝের সরু রাস্তা দিয়ে সেখানে পৌঁছতে প্রায় তিন ঘণ্টা সময় লাগে। আবার সেখানকার আবহাওয়া সব সময় খারাপ থাকে। যা ভ্রমণের ক্ষেত্রে বেশ ঝুঁকির বিষয়।
প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে, সেখানকার বেশিরভাগ সমাধির কাছে নৌকা পাওয়া গেছে। স্থানীয়দের ধারণা, ওই নৌকা স্বর্গে নিয়ে যেতে পারে আত্মাকে। এ জন্য মৃতদের সমাধি দেওয়ার পর সেখানে রেখে দেওয়া হয় নৌকা।
প্রত্নতাত্ত্বিকরা সেখানকার প্রতিটি সমাধির সামনে থেকে একটি করে কূপও আবিষ্কার করেছেন। যেখানে মৃতের স্বজনরা সমাধি দেওয়ার পর মুদ্রা রেখে দেয়। ধারণা করা হয়, মুদ্রা ফেলার সময় যদি পাথরের সঙ্গে লেগে ঝনঝন শব্দ করে; তাহলে মৃতের আত্মা স্বর্গে পৌঁছায়।
ইতিহাসের তথ্যানুযায়ী, ১৭ ও ১৮ শতকে প্লেগ মহামারির সময় মৃত শহরের ছোট ছোট সেলগুলোয় রোগীরা আশ্রয় নেন। প্লেগ সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে এ জন্যই তখন সবাই সেখানে আশ্রয় নেন। পরে না-কি সেখানেই তারা মারা গিয়েছিলেন।
গ্রামটিকে ‘মৃতের শহর’ বলার কারণ হলো, সেখানে মৃতদের কবর দেওয়ার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। আর স্বাভাবিকভাবেই মৃতরা আর ফিরে আসতে পারেন না গ্রামটি ছেড়ে। মৃতদের বসবাস রাশিয়ার ওই ছোট্ট গ্রামটিতে।
নিউজ ক্র্যাব/বিবিসি/জেএমএস/এসইউ/এমএস