ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে রাঙ্গামাটির পর্যটন
রাঙ্গামাটির পাহাড়, হ্রদ ও ঝরনার সৌন্দর্য দেখতে ঢাকা থেকে এসেছেন ফারজানা রহমান। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এ শিক্ষার্থী করোনায় দীর্ঘদিন ধরে বাসায় বন্দি থাকার পর স্বামীসহ রাঙ্গামাটি বেড়াতে এসেছেন। এসে ঘুরতে গিয়েছেন ঝুলন্ত সেতুতে। সেখান থেকে ইঞ্জিনচালিত বোটে ঘুরে এসেছেন সুবলং ঝরনা। ঝুলন্ত সেতুতেই কথা হয় তার সাথে।
তিনি বলেন, ‘ভার্সিটি বন্ধ হওয়ার পর বাসায় বন্দি ছিলাম। কোথাও যেতে পারিনি করোনার কারণে। দীর্ঘ ছয় মাস পর নিজেদের রিফ্রেশ করার জন্য স্বামীসহ ঘুরতে এলাম। সত্যিই অসাধারণ জায়গা। প্রকৃতির সান্নিধ্যে এসে নিজেকেই উজাড় করে দিতে মন চাইছে।’
ফারজানা রহমানের মতোই ধীরে ধীরে পর্যটকরা আসতে শুরু করেছেন রাঙ্গামাটিতে। পর্যটনের এ জেলা করোনায় প্রায় পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর গত মাস থেকে সবার জন্য খুলে দেওয়া হয়। তাতেই প্রতিদিনই আস্তে আস্তে করে ভিড় করছেন পর্যটকরা।
নরসিংদী থেকে বেড়াতে আসা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এখানকার প্রকৃতি দেখে মনটা ভালো হয়ে যায়। চারদিকে সবুজ, স্বচ্ছ হ্রদের পানি তার ওপর ঝুলন্ত সেতু। অসাধারণ এক মুহূর্ত। দীর্ঘদিন বন্দি জীবনযাপনের পর কিছুটা সময় মুক্ত বাতাসে শ্বাস নিতেই পরিবারের সবাইকে নিয়ে রাঙ্গামাটি আসা।’
বহ্নি হাসান নামে আরেক পর্যটক জানান, করোনার কারণে ঘরবন্দি থেকে তারাও বিরক্ত হয়ে পড়েছেন। তাই পরিবার নিয়ে পাহাড় দেখতে এসেছেন। আগে রাঙ্গামাটি এলেও এবার দীর্ঘদিন ঘরবন্দি হওয়ার পর ঘুরতে এসে নিজেদের মধ্যে সজীবতা খুঁজে পেয়েছেন।
রাঙ্গামাটি পর্যটন কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ আগস্ট থেকে ঝুলন্ত সেতু খুলে দেওয়ার পর থেকেই প্রতিদিন অল্প অল্প করে পর্যটক আসতে শুরু করেছেন। আগে বাসে করে বিভিন্ন গ্রুপ এলেও এখনো সেরকম কোনো গ্রুপ আসছে না। পরিবার, স্বামী-স্ত্রী বা বন্ধুরা মিলে ঝুলন্ত সেতুতে ঘুরতে আসছেন। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক না হলেও নভেম্বর মাস থেকে রাঙ্গামাটির পর্যটন অনেকটা স্বাভাবিক হবে।
হোটেল স্কয়ার পার্কের সত্ত্বাধিকারী মো. নিয়াজ আহম্মেদ বলেন, ‘আপাতত করোনার কারণে খুব বেশি পর্যটক না এলেও অল্প অল্প করে পর্যটক আসছেন। নভেম্বর থেকে পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে পারে।’
হোটেল নাদিশার ব্যবস্থাপক জসিম উদ্দীন বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটকদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা রেখেছি। আশা করছি সামনেই প্রচুর পর্যটকের সমাগম হবে।’
পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া বলেন, ‘পর্যটন মোটেল ও ঝুলন্ত সেতু খুলে দেওয়ার পর প্রথম কয়েকদিন ভালো ব্যবসা করেছি। তবে এখনো গ্রুপভিত্তিক পর্যটক আসছেন না। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ না হলে আশা করছি পর্যটন মৌসুমে ভালো ব্যবসা হবে।’
এ ছাড়া করোনাকালীন রাঙ্গামাটি পর্যটন কর্পোরেশনের কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান।
এসইউ/এএ/পিআর