ঘুরে আসুন পাহাড়ি গ্রাম তাবাকোশি
অরূপ কুমার ভট্টাচার্য পেশায় শিক্ষক। পেশাগত জীবনের পাশাপাশি ভ্রমণ করতে ভালোবাসেন। নিজের ভ্রমণের পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীদের ভ্রমণ পরিকল্পনাও করে দেন। এবার জানিয়েছেন ভারতের উত্তরবঙ্গের তাবাকোশি গ্রামের কথা। তাবাকোশি ভ্রমণের বিস্তারিত জানাচ্ছেন তিনি-
প্রায় ২০ বছরের শিক্ষকতা জীবন অতিবাহিত করে ফেললাম। দেখতে দেখতে আমার অনেক ছাত্র-ছাত্রী আজ জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত। অনেকে আবার বিবাহিত জীবনেও প্রবেশ করেছে। এরা সবাই জানে, আমি পেশায় একজন শিক্ষক আর নেশায় একজন ভ্রমণপিপাসু মানুষ। আমি চেষ্টা করি আমার ছাত্র-ছাত্রীদের মনের মধ্যে ভ্রমণের নেশাটা বপন করতে। কারণ আমার বিশ্বাস, ভ্রমণ আমাদের হৃদয়কে প্রসারিত করে, মনের কলুষতা দূর করে। তাই আজ অনেক ছাত্র-ছাত্রীই ভ্রমণের পরিকল্পনা করার আগে আমার কাছে জানতে চায়, ‘স্যার, কোথায় গেলে ভালো হয়।’
গতমাসে এক ছাত্রী, পেশায় সরকারি হাসপাতালের নার্স। ফোন করে জানতে চাইল, ‘স্যার, বিয়ের পর সেভাবে কোথাও যাওয়া হয়নি। আমার আর কর্তার একসাথে ছুটির ব্যবস্থা করতে পারিনি বলে। আপনি চারদিনের একটা ট্যুর প্ল্যান করে দিন।’ আমার এ রকম প্রস্তাব খুব ভালো লাগে। আর যা-ই হোক, ভ্রমণ নিয়ে চর্চা করার একটা সুযোগ পাওয়া যায়। আমি সেই ছাত্রীকে বললাম, ‘উত্তরবঙ্গের মিরিকের কাছে চা বাগানের কোলে রংভং নদীর কূলে তাবাকোশি চলে যাও।’ বর্ষায় পাহাড় ধসের ভয় থাকে। তাই কম উচ্চতায় সবুজ পরিবেশের কোলে তাবাকোশি নবদম্পতির উপযুক্ত ভ্রমণের জায়গা বলেই আমার কাছে বিবেচিত হলো।
তারা তাবাকোশি পৌঁছেই মেসেজ করেছে, ‘স্যার, দারুণ জায়গা। আমরা ঠিক এ রকম একটা নিরিবিলি, পাহাড়ি গ্রামে আসতে চাইছিলাম।’ শুনে খুব ভালো লাগলো। আমি সঙ্গে সঙ্গে বললাম, ‘আমার জন্য উপহারস্বরূপ ওই জায়গার ছবি পাঠাও।’ তারপরই একের পর এক ছবি আসতে শুরু করল। আমিও ঘরে বসে তাবাকোশি মানস ভ্রমণ শুরু করে দিলাম।
আমার আবার একা একা ভ্রমণ করতে ভালো লাগে না। মনে হলো, জায়গাটা সম্পর্কে অনেকের আজও অজানা। তাই তাবাকোশি থেকে আমার ছাত্রী ও তার স্বামীর কাছ থেকে সকল তথ্য নিয়ে আপনাদের জন্য ডালি সাজিয়ে দিলাম।
পথ নির্দেশ: নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে রিজার্ভ গাড়িতে তাবাকোশি যাওয়া যায়। এছাড়াও শিলিগুড়ি থেকে শেয়ার গাড়িতেও যেতে পারেন। হোমস্টের মালিককে বললে ওরাও গাড়ি পাঠিয়ে দেয়।
কোথায় থাকবেন: তাবাকোশিতে যে যে হোমস্টের কথা আমার জানা আছে। সেগুলো হলো-
১. টি ভিলেজ হোমস্টে। যোগাযোগ- বিজয় সুব্বা ৯৪৩৪১৩১৭৩৭।
২. খুশি ফার্ম হাউস। যোগাযোগ- ৯১৬৩৪২৮৩৮৫।
হোমস্টের খরচ: জনপ্রতি একদিনের থাকা-খাওয়াসহ প্রায় ১২০০ টাকা।
আরও যা দেখবেন: একদিন গাড়ি নিয়ে জোড়পোখরি, লেপচাজগৎ, পশুপতির মার্কেট (ভারত-নেপাল সীমান্ত), গোপালধারা চা বাগান ইত্যাদি। দ্বিতীয় দিন মিরিক লেক, মিরিক মনস্ট্রি ও পার্শ্ববর্তী এলাকা দেখতে পারবেন।
এসইউ/পিআর