বাড়ি ফেরার আনন্দ অশেষ!
ঈদের আর বেশিদিন বাকি নেই। ব্যস্ততম শহর ছেড়ে মানুষ ছুটছে বাড়ির দিকে। তাদের ফেরার অপেক্ষায় অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছেন বাবা-মা, ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তান, আত্মীয়-স্বজন। তাই ঈদের ছুটিটা আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে কাটানোর জন্যই ছুটছে তারা। শবে কদরের ছুটি উপলক্ষে ১৩ জুন থেকেই ফাঁকা হতে শুরু করেছে ব্যস্ততম নগরী। পাল্টে যেতে শুরু করেছে ঢাকার চিত্র। রমজানের মাঝামাঝি থেকেই জমে উঠেছে সারা দেশের ঈদ বাজার।
ঈদের কেনাকাটা শেষে অগ্রীম টিকিট কেটে রেখেছেন অনেকেই। সিডিউল অনুযায়ী ট্রেন, লঞ্চ, পরিবহণ যোগে ছুটছে মানুষ। বাড়ি ফেরার চাপা একটি উত্তেজনা বিরাজ করছে সবার মধ্যে। এই মহোৎসবে বাবার হাতে তুলে দেবেন প্রিয় পাঞ্জাবি, মায়ের হাতে শাড়ি, বোনের হাতে প্রিয় পোশাক, ভাইয়ের হাতে নতুন ফ্যাশন, প্রিয়তমার হাতে রেশমি চুড়ি, সন্তানের হাতে বছরের সেরা উপহার। বাড়ি ফিরতে ফিরতে চোখের তারায় নামে কত স্বপ্ন। ভাবনায় পাখা মেলে উড়ে যায় সীমাহীন দিগন্ত পেরিয়ে।
আরও পড়ুন- ঈদে ঘুরে আসুন কাট্টলী সমুদ্রসৈকত
সেই উত্তেজনার সঙ্গে কখনো কখনো যুক্ত হয় দুর্ভোগ। তবুও ছুটছে মানুষ। পৌঁছতে হবে বাড়ি- একটাই লক্ষ্য তাদের। যদিও ঢাকার জ্যামের চিত্র সারা বছরই এক। তবে ঈদের এই সময়টা ঢাকা শহর হতে থাকে ফাঁকা। আর জ্যাম বাড়তে থাকে শহরের বাইরের বিভিন্ন পয়েন্টে। সেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় ঘরমুখো মানুষকে। অপেক্ষার প্রহর যেন ফুরায় না ফেরিঘাটেও। বিশাল লাইন ধরে অপেক্ষায় থাকে বিভিন্ন ধরনের পরিবহন। কখনো কখনো একদিনেরও বেশি সময় কেটে যায় এসব দুর্ভোগের করাল গ্রাসে।
এসব দুর্ভোগের সঙ্গে যুক্ত হয় অতিরিক্ত ভাড়া। কখনো কখনো দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হয় যাত্রীদের। তাতেও যেন আক্ষেপ নেই কারো। উদ্দেশ্য কেবল বাড়ি পৌঁছানোর। পাশাপাশি ট্রেন, বাস, লঞ্চের ছাদেও ঠাঁই নিতে হয় ঘরমুখো মানুষকে। অতিরিক্ত যাত্রী নিয়েই ছাড়ে এসব বাহন। কখনো কখনো ঘটে দুর্ঘটনা। প্রাণহানী ঘটে অসংখ্য মানুষের। সড়ক দুর্ঘটনা বাড়তে তাকে আশঙ্কাজনক হারে। কখনো কখনো আনন্দ রূপ নেয় বিষাদে। স্বজনের হাসিমাখা মুখের বিপরীতে ভেসে ওঠে নিদারুণ চোখের জল।
আরও পড়ুন- ঈদে সিলেটের কোথায় কোথায় ঘুরবেন
শত দুর্ভোগের পরও বাড়ি ফেরার আনন্দটা অশেষ। অনেকটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। প্রিয়জনের সান্নিধ্য মুহূর্তেই ভুলিয়ে দেয় সব কষ্ট-যাতনা। একটি আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয় গ্রামের বাড়িতে। নির্ধারিত ছুটির মধ্যে আত্মীয়-স্বজনের সাক্ষাৎ যেন স্বর্গীয় অনুভূতি এনে দেয়। কর্মব্যস্ত মানুষগুলো হয়ে ওঠে হাস্যোজ্জ্বল, শিশুর মতো চঞ্চল। আনন্দ যেন আনন্দ হয়েই ধরা দেয় মানুষের মাঝে।
এসইউ/জেআইএম