নতুন বাংলাদেশ গড়তে প্রযুক্তির সহযোদ্ধা কোডমলি
তথ্যপ্রযুক্তির যুগে আইটি ফার্মগুলো শুধু ব্যবসায়িক সফলতার জন্য নয় বরং সমাজ পরিবর্তনেও বড় ভূমিকা পালন করছে। এমনই একটি প্রতিষ্ঠান কোডমলি।
ইআরপি, ই-কমার্স অটোমেশন, অফিস অটোমেশন এবং অন্যান্য আধুনিক সফটওয়্যার উন্নয়নের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি বহুদিন ধরেই দেশে ও বিদেশে সুনামের সঙ্গে প্রযুক্তি-নির্ভর সেবা দিয়ে আসছে।
সম্প্রতি কোডমলি ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে নীরব কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে প্রযুক্তির নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। প্রতিষ্ঠানটি দেখিয়েছে, প্রযুক্তি সামাজিক পরিবর্তন এবং গণতন্ত্রের সুরক্ষায় কতটা কার্যকর হতে পারে।
গণঅভ্যুত্থানে কোডমলি আইটি ফার্মের সহায়তার উল্লেখ্যযোগ্য দিকগুলো হলো- আন্দোলনের তথ্য দ্রুত এবং সঠিকভাবে ছড়িয়ে দিতে সোশ্যাল মিডিয়া এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা হয়েছে। ডিজিটাল টুলসের মাধ্যমে আন্দোলনকারীরা সময়মতো প্রয়োজনীয় তথ্য পেয়েছে, যা আন্দোলনকে আরও কার্যকর করেছে।
বিশেষ করে যখন দেশব্যাপী ইন্টারনেট শাট-ডাউন চলছিল তখন নেপাল ও ইন্ডিয়ায় বিশেষ প্রতিনিধির হাতে বিভিন্ন মেমরি চিপ্সের সহায়তায় সরাসরি তথ্য প্রেরণের মাধ্যমে বিশ্ব-বাসীর দরবারে আন্দোলনের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে কোড-মলি সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিল। ডিজিটাল টুলস এবং বিশেষায়িত সফটওয়্যার ব্যবহার করে বিভিন্ন স্থানে থাকা আন্দোলনকারীদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা ও সমন্বয় কার্যক্রমকে সহজ ও নিরাপদ করে তুলেছিল।
আন্দোলনের জোরদার ধারা বজায় রাখার জন্য কোডমলি তাদের নিজস্ব তহবিল থেকে বিশেষ আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করেছে। এছাড়া ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করে আন্দোলনের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহে সহায়তা করেছে কোডমলি। অন্তর্বর্তী-কালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর পরই ফেনীসহ বাংলদেশের একাংশ যখন ব্যাপক ফ্ল্যাশ ফ্লাডের স্বীকার হয় তখনও কোড-মলি নিজস্ব তহবিল ও লোকবলের সাহায্যে বানভাসি মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল।
ডিজিটাল বিজ্ঞাপন এবং অনলাইন ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মধ্যে আন্দোলনের উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। ‘কোডমলি’ আন্দোলনকারীদের তথ্য ও যোগাযোগ সুরক্ষিত রাখতে উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করে। এর ফলে তথ্য ফাঁসের ঝুঁকি কমে আসে এবং আন্দোলনের নিরাপত্তা বজায় থাকে।
কোডমলি আন্দোলনকারীদের সুরক্ষিত রাখতে তাদের জন্য সেফ হোমের ব্যবস্থা করেছে। ফলে সেই সময়ে আন্দোলনকারীদের তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তারের ঝুঁকি কমে আসে এবং দেশব্যাপী আন্দোলনের জোরদার ধারা বজায় থাকে।
কোডমলি প্রমাণ করেছে, প্রযুক্তি শুধু ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে নয় বরং সামাজিক পরিবর্তন এবং গণতন্ত্রের সুরক্ষায়ও অত্যন্ত কার্যকর। প্রযুক্তি-সক্ষম যুব শক্তি আজ সমাজ পরিবর্তনের অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। এই উদাহরণ নতুন প্রজন্মকে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার অনুপ্রেরণা দেবে। আশা করা যায়, ভবিষ্যতে আরও বেশি প্রতিষ্ঠান এই ধরনের উদ্যোগ নিয়ে প্রযুক্তি ও সমাজের সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে।
এমআরএম/জিকেএস