ভিডিও EN
  1. Home/
  2. তথ্যপ্রযুক্তি

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য টেলিনর-গ্রামীণফোন-প্ল্যানের যৌথ উদ্যোগ

বিজ্ঞাপন বার্তা | প্রকাশিত: ১১:০২ এএম, ২৬ মে ২০২৪

‘ডিজিটাল ইনক্লুশন: সেফ ডিজিটাল স্পেস ফর গার্লস অ্যান্ড ইয়ুথ প্রজেক্ট’ এর মাধ্যমে দেশের ২৩ লাখ ৫০ হাজার প্রান্তিক নারী ও তরুণ-তরুণীদের ক্ষমতায়নে যৌথ উদ্যোগ নিয়েছে টেলিনর, গ্রামীণফোন ও প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল। উদ্যোগটির লক্ষ্য ডিজিটাল স্বাক্ষরতা, দক্ষতা ও সহনশীলতা বাড়ানো এবং আর্থসামাজিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে থাকা নারী ও তরুণ-তরুণীদের জন্য নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ প্রশিক্ষিত করা।

প্রকল্পের অংশ হিসেবে গত ১৯, ২০ ও ২১ মে যথাক্রমে সাভার, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জ সফর করে টেলিনর, গ্রামীণফোন ও প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের একটি দল। প্রযুক্তিকে কাজে লাগানোর অভিন্ন অঙ্গীকার নিয়ে ডিজিটাল বৈষম্য নিরসনে এবং সমাজের সবার জন্য, বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করতে টেলিনর, গ্রামীণফোন ও প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল এই উদ্যোগ নিয়েছে।

ডিজিটাল টুল ও সম্পদগুলো কীভাবে তাদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনছে তা জানার জন্য সাভার, সিলেট, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জ সফরের সময় প্রকল্পে অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন প্রতিনিধিরা। পিছিয়ে থাকা এই জনগোষ্ঠীর মধ্যে শিক্ষার সুযোগ থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন সব ক্ষেত্রে উদ্ভাবন ও অন্তর্ভুক্তির সংস্কৃতি গড়ে তুলছে এই প্রকল্প।

ডিজিটাল দক্ষতা ও নিরাপদ অনলাইনে প্রশিক্ষিত করে তোলার মাধ্যমে আটটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে এই প্রকল্পে বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। জনগোষ্ঠীগুলো হচ্ছে- বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তি, চা বাগানের শ্রমিক, ট্রান্সজেন্ডার, জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি (হাওর ও চর), জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু, নারী প্রধান পরিবার, পথশিশু এবং জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলের মাধ্যমে চিহ্নিত অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ।

প্রকল্পের আওতায় ডিজিটাল দক্ষতা ও নিরাপদ অনলাইনে প্রশিক্ষিত করার লক্ষ্যে সরাসরি প্রশিক্ষণ প্রদান, স্থানীয় নেতাদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং যুবসমাজের নেতৃত্বে ক্যাম্পেইন পরিচালনা, রেডিও অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হচ্ছে। বেসলাইন জরিপ এবং স্থানীয়দের প্রয়োজন বিবেচনায় নিয়ে প্রশিক্ষণের কনটেন্টগুলো সাজানো হয়েছে। কমিউনিটির সঙ্গে আলাদা আলাদাভাবে কথা বলে প্রশিক্ষণ মডিউলগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যা খুব বাস্তবসম্মত।

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য টেলিনর-গ্রামীণফোন-প্ল্যানের যৌথ উদ্যোগ

প্রকল্পগুলো পরিদর্শন করেন গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর কবিতা বোস, টেলিনর এশিয়ার হেড অব এক্সটার্নাল রিলেশনস মনীষা ডোগরা, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের প্রোগ্রাম ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড লার্নিং’র ডিরেক্টর জলি নূর হক, গ্রামীণফোনের চিফ মার্কেটিং অফিসার (সিএমও) মোহাম্মদ সাজ্জাদ হাসিব, চিফ হিউম্যান রিসোর্স অফিসার (সিএইচআরও) সৈয়দা তাহিয়া হোসেন, চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার (সিসিএও) হ্যান্স মার্টিন হেনরিক্সন, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল নরওয়ের ওয়াইইই অ্যান্ড ডিজিটাল এমাপাওয়ারমেন্ট’র অ্যাডভাইজর আলেক্সান্ডার লেটেলিয়ের, ডিরেক্টর অব পার্টনারশিপস অ্যান্ড বিজনেস ডেভেলপমেন্ট জোহান য়ুন এবং টেলিনরের হেড অফ সাসটেইনেবিলিটি জোহান মার্টিন।

গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, এই প্রকল্পের অংশ হতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। কারণ এই প্রকল্পের মাধ্যমে ডিজিটাল বৈষম্য দূর এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল সমাজ গড়ার অগ্রযাত্রায় কেউ যেন পিছিয়ে না থাকে তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। প্রান্তিক নারী ও তরুণ-তরুণীদের প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করা হচ্ছে যেন তারা আজকের ডিজিটাল বিশ্বের সঙ্গে নিজেদের খাপ খাওয়াতে পারেন। এর ফলে তারা নিজেরা বিভিন্ন সুবিধা গ্রহণের পাশাপাশি তাদের কমিউনিটি ও কমিউনিটির বাইরের মানুষদের জীবনেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারবেন।

তিনি বলেন, ক্রমবর্ধমান সংযুক্ত বিশ্বে অনলাইন নিরাপত্তার গুরুত্ব কতটা তা আমরা বুঝতে পারি। এ কারণে আমাদের প্রকল্প শুধু ডিজিটাল দক্ষতা প্রদানে মনোনিবেশ করছি না, বরং তারা যেন নিরাপদে অনলাইন ব্যবহার করতে পারেন এবং অনলাইনে আচরণের দিক দিয়ে দায়িত্বশীল হন সে দিকটিতেও গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। কৌশলগত অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা এমন একটি সহায়ক পরিবেশ তৈরি করার লক্ষ্য রাখি যা প্রতিভাকে লালন করে এবং প্রতিটি ব্যক্তির পূর্ণ সম্ভাবনাকে উন্মুক্ত করে, তাদের পটভূমি বা পরিস্থিতি নির্বিশেষে।

প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর কবিতা বোস বলেন, শিশু ও বালিকাদের অধিকার নিয়ে কাজ করা একটি সংস্থা হিসেবে গ্রামীণফোন ও টেলিনরের সঙ্গে এই প্রকল্প পরিচালনা করতে পেরে আমরা আনন্দিত, যা অনলাইন নিরাপত্তা ও ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তির মতো সময়োপযোগী বিষয় নিয়ে কাজ করছে। প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ তার অংশীদারদের নিয়ে সব স্তরের শিশু ও তরুণদের সমতা ও ন্যায্য অধিকারের লক্ষ্যে কাজ করে থাকে। এই উদ্যোগ সেই লক্ষ্য অর্জনের একটি মাইলফলক। গ্রামীণফোন ও টেলিনরের এই স্বতঃস্ফূর্ত উদ্যোগে আমরা আশাবাদী যে বাংলাদেশে আমরা পরবর্তী প্রজন্মে যে পরিবর্তন আনতে চাই তা এমন বহুমুখী ও বহু পক্ষের সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই সম্ভব। তথ্য, দক্ষতা ও জ্ঞান তাদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়ে আমরা পিছিয়েপড়া জনগোষ্ঠীদের ক্ষমতায়ন অব্যাহত রাখবো।

টেলিনর এশিয়ার হেড অব এক্সটার্নাল রিলেশনস মনীষা ডোগরা বলেন, আজকের পৃথিবীতে যখন বেশিরভাগ মানুষ ইন্টারনেটের জন্য মোবাইল ফোনের ওপর নির্ভর করে তখন ডিজিটাল স্বাক্ষরতা একটি অত্যাবশ্যকীয় দক্ষতা। এটি শুধু কীভাবে একটি কম্পিউটার বা স্মার্টফোন ব্যবহার করতে হয় তা নয়, বরং প্রয়োজনীয় সেবা গ্রহণে, শিক্ষা উপকরণের উৎস হিসেবে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ গ্রহণ করতে কার্যকর ও নিরাপদভাবে অনলাইন দুনিয়ায় বিচরণের দক্ষতা। এই প্রকল্পে অংশগ্রহণকারীরা ডিজিটাল দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে দেশের উদীয়মান ডিজিটাল অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারবেন। এই দক্ষতা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন ঘটায় যেন তারা দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে পারেন।

প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল নরওয়ের অ্যাডভাইজার-ওয়াইইই অ্যান্ড ডিজিটাল আলেক্সান্দ্রা লেটেলিয়ের বলেন, প্রকল্পটির আওতায় এখন পর্যন্ত সাত লাখ ৭২ হাজার ৩৪৭ জন মোবাইল ফোনের ব্যবহার, অনলাইন নিরাপত্তা, ই-কমার্স এবং সরকারি সেবা গ্রহণের ওপর প্রশিক্ষণ বা শিক্ষা পেয়েছেন। এছাড়া কমিউনিটি রেডিওর মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের পাঁচ লাখ ২০ হাজার মানুষের কাছেও আমাদের প্রকল্পের সুফল পৌঁছে দিয়েছি।

ইএ/এমএস