বাইকারদের আরও ধৈর্যশীল হতে হবে
মানিক মুনতাসির। পেশায় একজন সাংবাদিক। সংবাদ সংগ্রহে ছুটতে হয় শহরের বিভিন্ন স্থানে। তবে যানজটের শহরে ঠিক সময়ে কোথাও পৌঁছানো দায়। তাই তো যাতায়াতের জন্য মোটরসাইকেল কিনেছেন। অবাক করার বিষয় তিনি হর্ন না বাজিয়েই বাইক চালানোর চেষ্টা করেন। একদিন ছেলেকে স্কুলে দেওয়া, সচিবালয়, প্রেস ক্লাব, ডিআরইউ থেকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা এবং সেখান থেকে খিলগাঁও যেতে একবারের জন্যও হর্ন বাজাননি তিনি। প্রয়োজন যে হয়নি তা নয়, হয়েছে কিন্তু ধীরগতিতে চালিয়ে সবকিছু সামলে নিয়েছেন।
মোটরসাইকেল বিভ্রাট নগরবাসীর জন্য নতুন সমস্যা নয়। রাস্তায় জ্যাম থাকলে অহেতুক হর্ন বাজানো, চালকদের ফুটপাতে উঠে আসা রোজকার চিত্র। তখন কোনটি যানবাহন চলাচলের রাস্তা আর কোনটি হাঁটার রাস্তা, তার পার্থক্য বোঝার উপায় নেই। দ্রুত পৌঁছাতে যাত্রীবাহী মোটরসাইকেল চালকরা ফুটপাতে উঠে যান। কেউ তো আবার সিগন্যাল না মেনে ছুটে চলেন আপন গতিতে।
আরও পড়ুন: নতুন লুকে ফিরছে হিরো কারিজমা
এতে নানা ভোগান্তি-বিড়ম্বনার শেষ নেই রাজধানীবাসীর। প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। ফার্মগেট, কলাবাগান, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, পান্থপথ, গ্রীণরোডসহ বিভিন্ন এলাকায় ফুটপাতে মোটরসাইকেল উঠে আসার দৃশ্য হরহামেশা চোখে পড়বেই। সময় বাঁচানোর অজুহাতে মোটরসাইকেল আরোহীরা এই অপরাধকে তোয়াক্কা করছেন না।
ফুটপাতে অত্যধিক মোটরসাইকেল চলাচলের কারণে শিশুরা ফুটপাতে হাঁটতেও ভয় পায়। পেছন থেকে আসা মোটরসাইকেলের হর্নে আতকে ওঠে শিশুদের হৃদয়। তাই ফুটপাতেও শিশুদের হাত ছাড়তে নারাজ অভিভাবকরা। এদিকে মোটরসাইকেল চালকদের কেউ কেউ উগ্র মেজাজের। এই উগ্রতার কারণে কিছু মানুষ বাইকারদের হেও চোখে দেখেন। তাই ঝামেলা এড়াতে অনেকেই মোটরসাইকেল চালকদের কিছু বলেন না।
এই সমস্যার সমাধানে একেক সময় একেক ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। ২০১৮ সালে একটি সড়ক দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিরাপদ সড়কের দাবিতে গোটা দেশের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমেছিল। যা সে সময় তুমুল আলোচনার জন্ম দেয়। শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে রাস্তায় দেখতে পাওয়া গিয়েছিল গাড়ি চলাচলের শৃঙ্খলা।
আরও পড়ুন: বাইকে হঠাৎ আগুন লাগলে কী করবেন?
তখন সরকারি উদ্যোগেও সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়। হাঁটার রাস্তায় চিকন লোহার পাইপ বসানো, ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহারেও উৎসাহ প্রদান করা হয়। তবে তার ব্যবহার থাকলেও কতটা নিরাপদ তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই যায়।
মানিক মুনতাসির মনে করেন, হর্ন না বাজিয়ে কিংবা প্রয়োজনের চেয়ে কম বাজিয়েও বাইক চালানো সম্ভব। তার জন্য দরকার সদিচ্ছা এবং ধৈর্য্য। বাইকারদের হতে হবে আরও ধৈর্যশীল।
কেএসকে/এমএস