স্টার্টআপ এক্সপ্লোরার ঋণসহ কো-ব্র্যান্ড ভিসা কার্ড উদ্বোধন
ইস্টার্ন ব্যাংক (ইবিএল) ও ভিসার সহযোগিতায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ফ্ল্যাগশিপ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডর উদ্যোগে কো-ব্র্যান্ড ভিসা কার্ডসহ স্টার্টআপদের জন্য বিশেষ ঋণ (লোন) প্রোডাক্ট চালু করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে ইবিএল প্রধান কার্যালয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক প্রধান অতিথি হিসেবে বিশেষ ঋণ প্রোডাক্টের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তুরাণ।
অনুষ্ঠানে পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনীতিতে অভূতপূর্ব প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে ও ডিজিটাল স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করার জন্য তার দূরদর্শী চিন্তাধারা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশের মতো বিশ্বের আর কোনো দেশ এত অল্প সময়ের মধ্যে ডিজিটালাইজড হয়নি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ স্টার্টআপ এবং নতুন উদ্ভাবনী ধারণার জন্য একটি সমৃদ্ধ ক্ষেত্র হয়ে উঠছে, যা স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমকে রূপান্তরিত করছে। সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষা অনুসারে, বাংলাদেশে বর্তমানে ১২০০ টিরও বেশি সক্রিয় স্টার্টআপ রয়েছে এবং প্রতি বছর ২০০টি নতুন স্টার্টআপ ইন্ডাস্ট্রিতে যোগ দিচ্ছে। এ ক্রমবর্ধমান সংখ্যক স্টার্টআপগুলো আমাদের তরুণদের জন্য কর্মসংস্থানের ইঞ্জিন হিসেবে কাজ করছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মোস্তফা ওসমান তুরাণ বলেন, যে স্টার্টআপগুলো সমাজে চেঞ্জ-মেকার এবং প্রভাবকের ভূমিকা পালন করে। একটি কর্মচঞ্চল স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম তৈরির স্বার্থে সরকারি এবং বেসরকারি খাতের একযোগে কাজ করা প্রয়োজন। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রোগ্রামের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ পার্টনারশিপ গঠনের জন্য আমি আইসিটি ডিভিশন এবং ইবিএলকে অভিনন্দন জানাই।
ইবিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী আলী রেজা ইফতেখার বলেন, ইবিএল ইনোভেশন এবং টেকনোলজিতে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে। তাই যারা বা যেসব সংস্থা বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তরের লক্ষ্যে কাজ করছেন, তাদের সঙ্গে সহযোগিতাকে আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকি। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত স্টার্টআপ বাংলাদেশ দেশের প্রথম এবং একমাত্র ভেঞ্চার ক্যাপিটাল তহবিল।
তিনি বলেন, দেশের ডিজিটাল অবকাঠামো তৈরিতে স্টার্টআপ বাংলাদেশ যে ভূমিকা পালন করছে তা অনুপ্রেরণাদায়ক। এই অবকাঠামোকে ভিত্তি করেই দেশে প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের বিকাশ ঘটবে, বলার অপেক্ষা রাখে না এই যাত্রায় সঙ্গী হতে পেরে ইবিএল গর্বিত।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্টার্টআপ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদ। তিনি বলেন, স্টার্টআপ ইন্ডাস্ট্রির জন্য ভেঞ্চার ক্যাপিটাল বিনিয়োগের লক্ষ্যে বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিশীল সুযোগ রয়েছে। স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করার জন্য এবং একটি টেকসই স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার জন্য কাজ করছে ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধও যেন বাংলাদেশকে এই অঞ্চলের পরবর্তী স্টার্টআপ হাব হিসাবে স্থান করে নিতে পারে। এখানেই আমরা ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের লক্ষ্যের সাথে এক, যার উদ্দেশ্য বাংলাদেশে স্টার্টআপের গ্রোথ এর জন্য এই কো-ব্র্যান্ডেড ব্যাংকিং পণ্যগুলো চালু করার মাধ্যমে তরুণ স্টার্টআপ উদ্যোক্তাদের সুবিধা প্রদান করা।
স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের সদস্যদের জন্য যে ঋণ প্রোডাক্টটি উদ্বোধন করা হয়েছে তার নাম ‘স্টার্টআপ এক্সপ্লোরার’। বাংলাদেশের স্টার্টআপদের জন্য এই প্রোডাক্টটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পাশাপাশি বাংলাদেশে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমকে আরও শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পলিসির অংশ হিসেবে মাত্র চার শতাংশ সুদে এক কোটি টাকা পর্যন্ত এ ঋণ পেতে পারে স্টার্টআপরা।
অন্যদিকে, ক্রেডিট, ডেবিট ও প্রি-পেইড এই তিন ধরনের কার্ড ইস্যু করা হবে। কো-ব্র্যান্ড কার্ডগুলোতে বিশেষ কিছু সুবিধা অফার করা হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে প্রথম বছরে ‘জিরো’ ইস্যু ফি, আঠারোটি লেনদেনের ক্ষেত্রে ‘জিরো’ নবায়ন ফি, দুটি সাপ্লিমেন্টারি কার্ড ইত্যাদি। দেশে ও বিদেশে এই কার্ডগুলো ব্যবহার করা যাবে।
এইচএস/আরএডি/জিকেএস