বেলুন বিক্রেতা থেকে রাতারাতি তারকা হলেন কিশোরী
একবিংশ শতাব্দীতে এসে যে শব্দগুলো অনেক বেশি চর্চিত তার মধ্যে একটি হচ্ছে ‘ভাইরাল’। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম মুহূর্তের মধ্যেই যে কাউকে ভাইরাল করতে পারে। তবে সব সময় যে এতে খারাপ হয় তা কিন্তু নয়। অনেকের জীবন বদলে গেছে এজন্য।
এর হাজারটা উদাহরণ দিতে পারবেন আপনিও। ভুবন বাদ্যকর নামের এক বাদাম বিক্রেতার দিন বদলেছে কাঁচা বাদাম গান গেয়ে। যা কিন্তু সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের কারণেই। তেমনি আরেকজন কিসবো মোল। কিসবো কেরালার স্থানীয় বাসিন্দা। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার কিছু ছবি নজর কেড়েছে পুরো বিশ্বের।
সাদা শাড়ি, লাল ব্লাউজের সঙ্গে মানানসই সাজ। দেখে মনে হবে পুরোদস্তুর এক মডেল তিনি। তার হাসি চোখে লেগে থাকার মতোই। আদতে এই কিশোরী পেশায় বেলুন বিক্রেতা। এ কাজ করেই তার সংসার চলে। মা আর কিসবো এই তাদের পরিবার।
ছোটবেলায় বাবা মারা যাওয়ার কারণে ছোট্ট বয়সেই সংসারের হাল ধরতে হয়েছে কিসবোকে। তার ও মায়ের মুখে খাবার তুলে দিতে রঙিন বেলুনই হয়ে ওঠে কিসবোর বর্ণহীন জীবনের ভরসা। কিসবোর মাও এই পেশায় জড়িত।
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাসে মাহেশের রথের মেলায় বনফুলের মালা বিক্রি করতে যাওয়ার ঘটনা আমূল পাল্টে দিয়েছিল দরিদ্র বালিকা রাধারাণীর জীবন। তেমনই কিসবোর জীবনের পটপরিবর্তন হলো মেলায় বেলুন বিক্রি করতে গিয়ে।
হ্যাঁ, কুন্নুরের এক মেলায় বেলুন বিক্রি করছিলেন কিসবো। এমন সময় এক ফটোগ্রাফারের নজরে পরে যান তিনি। কিসবো ও তার মায়ের অনুমতি নিয়েই ছবি তোলা হয়। কিসবোর ছবি তুলে সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেন সেই আলোকচিত্রী। সেই ছবি ইন্টারনেটে শেয়ার হতেই রাতারাতি ছড়িয়ে পড়ে পুরো বিশ্বে।
সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হতেই কিসবোর মেক ওভারের দায়িত্ব নেন কুন্নুরের এক বিউটি সেলুন। নতুন রূপে নতুন সাজে আবার কিসবোর ছবি তোলা হয়। কিশোরী বেলুনওয়ালীর সেই ছবিও ভাইরাল হয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। রাতারাতি তারকা বনে যান কিসবো।
পাল্টে যাওয়া জীবনে যেন মেয়েকে আর বেলুন বেচতে না হয়, স্বপ্ন দেখছেন কিসবোর মা। দারিদ্র্যের জীবন থেকে মুক্তি পাক মেয়ে, একান্ত ইচ্ছা কিসবোর মার। তার ইচ্ছা মেয়ে লেখাপড়া করুক। যাতে ভবিষ্যতে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে।
সূত্র: দ্য লজিক্যাল ইন্ডিয়ান
কেএসকে/জিকেএস