মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ থেকে তথ্য পাবেন যেভাবে
ইতিহাসের জরুরি উৎস পত্রপত্রিকা। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের মাধ্যমে একসময়ে সংঘটিত নানা ঘটনার বিশ্লেষণ করা যায়। মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক ও বহুমুখী দিকগুলো অনুধাবন ও বিশ্লেষণ করতে সে সময়ে প্রকাশিত পত্রিকার রিপোর্টগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিশ্বকে নাড়া দিয়েছিল। শীতল যুদ্ধ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর বৃহৎ গণহত্যা, স্বাধিকারের জন্য লড়াই, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রিফিউজি ক্রাইসিসসহ নানা কারণে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিশ্বে প্রভাব ফেলেছিল। এর বহিঃপ্রকাশ আমরা দেখতে পাই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রকাশিত আন্তর্জাতিক পত্রপত্রিকায়।
কিন্তু বিশ্বের নানা দেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংবাদপত্রে প্রকাশিত এসব রিপোর্ট আমাদের দেশে সহজলভ্য নয়। সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ মুক্তিযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রকাশিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রায় ১,২৪,৮৫৬টি সংবাদ, ফিচার, চিঠি তথা কনটেন্ট সংগ্রহ করেছে।
এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভের প্রতিষ্ঠাতা সাব্বির হোসাইন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ মুক্তিযুদ্ধের সময় বিশ্বে প্রকাশিত নিউজ রিপোর্ট ডিজিটাইজেশন করে সংরক্ষণ করার কাজ করছে। আন্তর্জাতিক পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত মুক্তিযুদ্ধের রিপোর্ট সংগ্রহের প্রকল্পটি মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ শুরু করেছিল ২০১৭ সালে।’
তিনি বলেন, ‘মোট ১,২৪,৮৫৬টি কনটেন্ট সংগ্রহ করা হয়েছে। এগুলোকে আমরা পাঁচ খণ্ডে ভাগ করে কাজ করছি। সম্প্রতি আমরা প্রথম খণ্ড প্রকাশ করেছি। প্রথম খণ্ডে মোট কনটেন্টের সংখ্যা ২৬,৭৯২টি। প্রথম খণ্ডে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার আঞ্চলিক পত্রিকাগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’
মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ থেকে প্রকাশিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক পত্রিকার রিপোর্ট সমগ্রের প্রথম খণ্ডে মূল ডেটার সাইজ প্রায় ৫ টেরাবাইট, যা পাঠকদের পাঠের সুবিধার জন্য কমপ্রেস করে মোট ১১৯ জিবিতে আনা হয়েছে।
ই-আর্কাইভ সূত্রে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের ইতিহাস বিষয়ক গবেষকরা এ কনটেন্ট মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভের ওয়েবসাইট থেকে বিনামূল্যে ব্যবহার করতে পারবেন। পাঠক-গবেষকদের পাঠের সুবিধা ও মুক্তিযুদ্ধের কনটেন্টের সহজলভ্যতার জন্য মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ পত্রিকার সংগ্রহটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্র, বিশ্ববিদ্যালয় ও পাবলিক লাইব্রেরিগুলোতে বিনা মূল্যে দেয়ার কাজ করছে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক মামুন সিদ্দিকী এ পত্রিকা সংগ্রহের গুরুত্ব নিয়ে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা একটি জায়গায় আটকে আছে। এর কারণ তথ্যের অভাব ও অপ্রতুলতা। এর থেকে বেরিয়ে আসতে হলে নতুনভাবে সঞ্জীবন ঘটাতে হবে। সেখানে মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভের এ সংগ্রহমালা ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি।’
অনলাইনে এ সংগ্রহ অ্যাকসেস করতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভকে ই-মেইল করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]। মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভের ঠিকানা https://www.liberationwarbangladesh.org।
এসইউ/এমকেএইচ