ভিডিও EN
  1. Home/
  2. তথ্যপ্রযুক্তি

প্রতিদ্বন্দ্বিদের ওপর নজরদারি করছে ফেসবুক

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৯:৩৩ এএম, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

‘ওনাভো’ নামের ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন) অ্যাপ ব্যবহার করে প্রতিদ্বন্দ্বিদের ওপর নজরদারি করছে ফেসবুক। এ অভিযোগে তীব্র সমালোচনার মুখে পেড়েছে জনপ্রিয় এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি।

যুক্তরাজ্যের কমন্স কমিটির এক প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে। ১০০ পাতার ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ওনাভোর সহায়তায় ব্যবহারকারী ও প্রতিদ্বন্দ্বিদের ওপর নজরদারির কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে ফেসবুক। সংশ্লিষ্টরা ইচ্ছাকৃতভাবে জেনেবুঝে তথ্য গোপনীয়তা ও অ্যান্টিকম্পিটিশন আইন ভেঙেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৩ সালে সুনজরে থাকা পাঁচ হাজার অ্যাপের একটি তালিকা করেছিল ফেসবুক। এসব অ্যাপ ফেসবুক ব্যবহারকারী এবং তাদের বন্ধুদের তথ্যে প্রবেশাধিকার পেয়েছিল। এর মধ্যে রাইড শেয়ারিং অ্যাপ লিফট, এয়ারবিএনবি ও নেটফ্লিক্সের মতো জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠান ছিল। এক অভ্যন্তরীণ ইমেইলের তথ্যমতে, কোম্পানি প্রতি আড়াই লাখ ডলারের বিনিময়ে বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের জন্য ব্যবহারকারীদের তথ্যে প্রবেশাধিকার দিয়ে আসছে ফেসবুক।

ডিজিটাল, কালচার, মিডিয়া অ্যান্ড স্পোর্টস কমিটির অভিযোগ, ফেসবুক ব্যবহারকারীদের অতিরিক্ত নিরাপত্তা দিতে ওনাভো অ্যাপ তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু ওনাভোর মাধ্যমে গ্রাহকদের অ্যাপ ব্যবহারসংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করেছে ফেসবুক। অর্থাৎ ব্যবহারকারীরা কে কত সময় অ্যাপ ব্যবহার করছেন, কতবার ডাউনলোড করছেন, এমন অনেক তথ্য ফেসবুক সংগ্রহ করেছে। ফলে কোন কোম্পানির পারফরম্যান্স ভালো, তা যাচাই করে প্রতিদ্বন্দ্বিদের সম্পর্কে আগেভাগেই তথ্য সংগ্রহ করে ফেসবুক। পরবর্তী সময়ে তারা হয় ওই প্রতিদ্বন্দ্বির অ্যাপ বা কোম্পানিকে অধিগ্রহণ করে কিংবা কৌশলে বন্ধ করার ব্যবস্থা করে। কমন্স কমিটি তাদের প্রতিবেদনে ওনাভোর মাধ্যমে সংগ্রহ করা তথ্যের একটি গ্রাফ যুক্ত করেছে, তাতে অ্যাপের ব্যবহারসংক্রান্ত তথ্য দেখা যায়।

ফেসবুকের নিরাপত্তা অ্যাপ ওনাভো নিয়ে আরও আগেই বিতর্ক শুরু হয়েছিল। গোপনীয়তা নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় গত বছর ওনাভো সিকিউরিটি অ্যাপ নিজেদের অ্যাপ স্টোর থেকে সরিয়ে ফেলে অ্যাপল। ওই সময় প্রতিষ্ঠানটি জানায়, একটি অ্যাপ একজন ব্যবহারকারীর ডিভাইসে ইনস্টল করা অন্য কোনো অ্যাপ সম্পর্কে কোনোভাবেই তথ্য সংগ্রহের অধিকার রাখে না।

২০১৩ সালে ৩০০ কোটি ডলারে ছবি শেয়ারিংয়ের জনপ্রিয় অ্যাপ স্ন্যাপচ্যাটকে কিনতে চেয়েছিল ফেসবুক। এর এক বছর আগে ১০০ কোটি ডলারে ইনস্টাগ্রামকে কিনে নেন ফেসবুকের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ। ২০১৪ সালে ১ হাজার ৯০০ কোটি ডলারে ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং সেবা হোয়াটসঅ্যাপ কিনে নেয় ফেসবুক। যুক্তরাজ্যের কমন্স কমিটির অভিযোগ, কোনো প্রতিষ্ঠান ফেসবুকের অধিগ্রহণ প্রস্তাব নাকচ করলে তাদের সেবাগুলোকে ফেসবুক কৌশলে বাধাগ্রস্ত করার বন্দোবস্ত করে। এর আগে টুইটারের ভাইন সেবার ক্ষেত্রে এ রকম পদক্ষেপ নিয়েছিল ফেসবুক।

২০১৩ সালে টুইটারের ভাইন ভিডিও সেবার কথা জানার পর মার্ক জাকারবার্গ জানিয়েছিলেন, প্রতিদ্বন্দ্বি সেবাটির ব্যবহারকারীরা ফেসবুক প্লাটফর্ম থেকে বন্ধু খুঁজতে পারবেন। তখন ভাইনের জন্য ফেসবুকের ফ্রেন্ডস এপিআই অ্যাকসেস বন্ধ করা হয়। অর্থাৎ ভাইন ব্যবহারকারীদের জন্য ফেসবুকের মাধ্যমে নতুন বন্ধু খোঁজার পন্থা পুরোপুরি বন্ধ করা হয়, যে কারণে সুবিধা করতে না পেরে ২০১৬ সালে ভাইন বন্ধ হয়ে যায়।

সূত্র : বিবিসি

জেডএ/এমকেএইচ

আরও পড়ুন