এসএমপি অপারেটর হিসেবে আটকানো হচ্ছে গ্রামীণফোনকে
মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানি গ্রামীণফোনকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সিগনিফিকেন্ট মার্কেট পাওয়ার বা এসএমপি অপারেটর হিসেবে ঘোষণার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে আগামীকাল বৃহস্পতিবার।
টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, এ বিষয়ে আলোচনার জন্য মঙ্গলবার শুরু হওয়া বৈঠক মুলতবির পর আজ (বুধবার) আবার শুরু হলেও এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব হয়নি।
জহুরুল হক জানান, এসএমপি অপারেটর হিসেবে ঘোষণা করা হলে নতুন গ্রাহক নেয়া বা সেবার ক্ষেত্রে নানা ধরনের বাধ্যবাধকতার মুখে পড়বে গ্রামীণফোন।
নতুন গ্রাহক নেয়া বন্ধ কিংবা উল্টো পুরোনো গ্রাহক কমার মতাে ঘটনাও ঘটতে পারে বলেও মনে করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
তিনি বলেন, তরঙ্গের সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষা করে সবাইকে বাজারে থাকতে হবে। প্রয়োজনে এসএমপি অপারেটর হিসেবে ঘোষণা করার পর নতুন গ্রাহক নেয়া বন্ধ এবং পুরান গ্রাহকও কমাতে হতে পারে। সেবার ক্ষেত্রে নানা ধরনের বাধ্যবাধকতার বিধান রাথা হচ্ছে অনুমোদিত নীতিমালায়।
এদিকে মঙ্গলবার রাজধানীর একটি রেস্টুরেন্টে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে গ্রামীণফোনের শীর্ষ কর্মকর্তারা বলেছেন, আসন্ন নীতিমালা যেন গ্রামীণফোনকে বিপদে ফেলার জন্যে না করা হয়। তারা এসএমপির বিপক্ষে নন। তবে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে তা প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।
গত নভেম্বরে এসএমপি নীতিমালা অনুমোদন দেয় সরকার। এটি বাস্তবায়নে একটি কমিটি গঠন করে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। ওই কমিটির সুপারিশ অনুসারে গ্রামীণফোকে এসএমপি অপারেটর হিসেবে ঘোষণার সিদ্ধান্ত আসতে যাচ্ছে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, একটি অপারেটর গ্রাহক বা রাজস্ব আয়ের দিক থেকে বাজারের মোট হিসাবের ৪০ শতাংশ পেরিয়ে গেলে, তাকে এসএমপি অপারেটর হিসেবে ঘোষণা করা হবে।
গত ডিসেম্বর শেষের হিসাব অনুসারে, গ্রাহকের হিসেবে গ্রামীণফোনের মার্কেট শেয়ার এখন ৪৬ দশমিক ৩৩ শতাংশ। রাজস্বের বিচারে ৫০ শতাংশের বেশ ওপরে রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
গত সোমবার ২০১৮ সালের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে গ্রামীণফোন। এতে দেখা যায়, ২০১৮ সালে সব মিলে সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় করেছে তারা। এ থেকে কর পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা।
ডিসেম্বরের শেষের হিসাবে রবির মার্কেট শেয়ার ৩০ শতাংশ, বাংলালিংকের ২২ শতাংশ ও টেলিটকের আড়াই শতাংশ।
এখন বাজারে মোট কার্যকর সিম সংযোগ সাড়ে ১৫ কোটি। এর মধ্যে জিপির গ্রাহকদের হাতে রয়েছে ৭ কোটি ২৭ লাখ সিম।
এসএমপি হলে নতুন গ্রাহকের বিষযে সিদ্ধান্তের পাশাপাশি ব্যবসাতেও লাগাম টানতে কিছু কড়াকড়ির মুখে পড়তে হতে পারে অপারেটরটিকে। এর মধ্যে কোয়ালিটি অব সার্ভিস মানদণ্ড আরও কঠিন করা হতে পারে।
কলড্রপের ক্ষেত্রে অন্য অপারেটরের চেয়ে আরও বেশি শর্ত আরোপ করা হতে পারে। কল সাকসেস রেট শতভাগ করা, কলরেট ও সেবার দাম বাড়িয়ে দিতে বলাসহ বিভিন্ন নির্দেশনা দেয়া হতে পারে।
আরএম/এমবিআর/পিআর