আইজিডব্লিউ খাতে আয় কমছে
২০১২ সালের আগ পর্যন্ত বছরে বিদেশি ফোন কল আনা-নেয়ার ব্যবসা আন্তর্জাতিক গেটওয়ে (আইজিডব্লিউ) খাত থেকে এক হাজার ৬০০ কোটি টাকার ওপরে আয় হতো। এখন সেটি নেমে ৫০০ কোটি টাকায় এসেছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে নিকট ভবিষ্যতে বড় ধরনের রাজস্ব বঞ্চিত হবে সরকার।
প্রয়োজনের চাইতে বেশি লাইসেন্স দেয়ার কারণে এমন হচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে। তারা বলছেন, বাজার যাচাই না করেই অতিরিক্ত লাইসেন্স দেয়ায় ব্যবসা নিয়ে সমস্যায় পড়ছেন অপারেটররা। এই অবস্থায় গত সেপ্টেম্বরে আবারও বিদেশি ফোন কল আনা-নেয়ার ব্যবসার লাইসেন্স নেয়ার আহ্বান জানায় বিটিআরসি। এতে সাড়া দিয়ে এখন আবেদন করেছে ১৪টি কোম্পানি। দেশে বর্তমানে ২৩টি আইজিডব্লিউ প্রতিষ্ঠান ব্যবসা পরিচালনা করছে। কিন্তু এই লাইসেন্স বাড়তে থাকলেও আইজিডব্লিউ খাত থেকে আয় কমছে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সূত্রে জানা গেছে, সবগুলো অপারেটর মিলে দিনে ১১ কোটি মিনিটের বেশি কল দেশে আনতো। কল কমতে কমতে এখন সেটি দিনে চার কোটি মিনিটে নেমে এসেছে।
আগে সরকারের ঠিক করে দেয়া রেট ছিল প্রতি মিনিটের জন্যে দেড় সেন্ট। কিন্তু অপারেটররা নিজেরা জোটবদ্ধ হয়ে দুই সেন্টের নিচে কোনো কল দেশে ঢুকতে দেয়নি। ফলে দ্রুত বেড়েছে অবৈধ কলের পরিমাণ।
গত ২০ সেপ্টেম্বর আইজিডব্লিউ লাইসেন্স দিতে আগ্রহীদের কাছ থেকে আবেদন চায় বিটিআরসি। ১০ অক্টোবর দুপুরের মধ্যে এ আবেদন করতে বলা হয়। এতে সাড়া দিয়ে নতুন আবেদন করেছে ১৪টি কোম্পানি।
এর আগে ২০১২ সালে ২৬টি নতুন প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দেয় বিটিআরসি। নতুন-পুরাতন মিলিয়ে তখন মোট আইজিডব্লিউ লাইসেন্সের সংখ্যা দাঁড়ায় ২৯টিতে। ১৫ কোটি টাকা দিয়ে তখন লাইসেন্স নিয়েছিল প্রতিষ্ঠানগুলো। ২৯টি আইজিডব্লিউ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বর্তমানে ২৩টি কোম্পানি ব্যবসা পরিচালনা করছে। নতুন আইজিডব্লিউ লাইসেন্স নেয়ার পর ব্যবসা পরিচালনা করতে না পেরে নবায়ন ও অন্যান্য ফি দিতে না পারায় ইতোমধ্যে ৬টির লাইসেন্স স্থগিত করে বিটিআরসি।
নতুন আবেদনকারী ১৪টি কোম্পানির মধ্যে রয়েছে সোলজার্স গিয়ারস, রেড বিচ রিসোর্স লিমিটেড, এভিস টেকনোলজিস লিমিটেড, রুটস টেক কমিউনিকেশন, ইনফিনিটি টেলিকম লিমিটেড, জয়েন আস নেটওয়ার্ক, আই বিজনেস হোল্ডিংস লিমিটেড, পদ্মা কমিউনিকেশন লিমিটেড, আমান টেল, রা ইনফোটেক, লেভেল থ্রি টেলিকম লিমিটেড, ওয়েল ইনফরমেশন টেক, টুজি টেলিকম এবং রানা ট্রেডিং লিমিডেট।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিটিআরসির সিনিয়র সহকারী পরিচালক সামিউল খান বলেন, ২০০৮ সালে সরকার প্রথম আন্তর্জাতিক গেটওয়ে বা আইজিডব্লিউর লাইসেন্স চালু করে এবং চারটি লাইসেন্স দেয়। পরে ২০১২ সালে এসে আরও ২৫টি লাইসেন্স দেয়া হয়। অনেক দিন হতেই নানা প্রতিকূলতায় চলতে থাকা এই ব্যবসায় সরকার আরও নতুন লাইসেন্স দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল।
আরএম/জেডএ/পিআর