ভিডিও EN
  1. Home/
  2. তথ্যপ্রযুক্তি

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ ৪ মে

সাইফুজ্জামান সুমন | প্রকাশিত: ১২:১৮ পিএম, ১১ এপ্রিল ২০১৮

দেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট- ১’ মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হবে আগামী ৪ মে। বুধবার বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ প্রকল্পের পরিচালক মো. মেসবাহুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের জন্য আগামী ৪ মে সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ওই দিনই দেশের প্রথম কৃত্রিম এই উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করা হবে।

‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ উৎক্ষেপণ উপলক্ষে তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের নেতৃত্বে ২২ সদস্যের প্রতিনিধি দল যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা যাওয়ার কথা রয়েছে। ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুইচ টিপে উদ্বোধনের পর যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের কেপ কার্নিভাল থেকে স্যাটেলাইটটির মহাকাশ যাত্রা শুরু হবে।

মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা স্পেসএক্সের ‘ফ্যালকন-৯’ রকেটে করে স্যাটেলাইটটি মহাকাশে পাঠানো হবে। এর আগে, গত ২৭ মার্চ স্যাটেলাইট নির্মাণে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ফ্রান্সের থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেস বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ ২৪ এপ্রিল করা হতে পারে বলে জানায়।

থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেস টুইট বার্তায় জানায়, ২৮ মার্চ (বুধবার) কানের থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেস প্ল্যান্ট ত্যাগ করে স্যাটেলাইটটি। পরে স্যাটেলাইট বহনকারী কার্গো বিমান অ্যানতোনোভ নাইস বিমানবন্দর থেকে ২৯ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে।

ওই দিন ফ্রান্সের স্থানীয় সময় সকালে বিমানটি যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার উদ্দেশ্যে উড্ডয়ন করে। ২৯ মার্চ বোস্টনে যাত্রাবিরতির পর ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট- ১’ বহনকারী কার্গোবিমানটি ফ্লোরিডার কেপ কার্নিভালে পৌঁছায় ৩০ মার্চ।

স্পেসএক্সের লঞ্চ ফ্যাসিলিটিতে লঞ্চ ভেহিকল ফ্যালকন ৯-র ইন্ট্রিগ্রেশনসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়েছে কেপ কার্নিভালে। দীর্ঘ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এটি মহাকাশের উদ্দেশ্যে উৎক্ষেপণ করা হবে। এর মাধ্যমে বিশ্বের ৫৭তম স্যাটেলাইট ক্ষমতাধর দেশের তালিকায় নাম লেখাবে বাংলাদেশ।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের জন্য রাশিয়ার উপগ্রহ কোম্পানি ইন্টারস্পুটনিকের কাছ থেকে কক্ষপথ (অরবিটাল স্লট) কেনা হয়েছে। মহাকাশের ১১৯ দশমিক ১ পূর্ব দ্রাঘিমায় প্রায় ২১৯ কোটি টাকায় ১৫ বছরের জন্য এ কক্ষপথ কেনা হয়।

স্যাটেলাইট পাঠানোর কাজটি বিদেশে হলেও এটি নিয়ন্ত্রণ করা হবে বাংলাদেশ থেকেই। এজন্য গাজীপুরের জয়দেবপুর ও রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায় দুটি গ্রাউন্ড স্টেশন নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। যা নিয়ন্ত্রণে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে গ্রাউন্ড কন্ট্রোল স্টেশনের যন্ত্রপাতিও আমদানি করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

সম্প্রতি নিউইয়র্কে সংবাদ সম্মেলন করেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ। এসময় তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট খরচ হচ্ছে ২ হাজার ৯০২ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১ হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা ও ঋণ হিসেবে এইচএসবিসি ব্যাংক ১ হাজার ৩৫৮ কোটি টাকা দিচ্ছে।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মোট ৪০টি ট্রান্সপন্ডার থাকবে। এর মধ্যে ২০টি ট্রান্সপন্ডার বাংলাদেশের ব্যবহারের জন্য রাখা হবে। বাকি ২০টি ট্রান্সপন্ডার বিদেশি কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রির জন্য সংরক্ষিত থাকবে।

এই কৃত্রিম উপগ্রহ স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল, ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, ভি-স্যাট ও বেতারসহ ৪০ ধরনের সেবা দেবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ টেরিস্ট্রিয়াল অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হলে সারা দেশে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা বহাল থাকা, পরিবেশ যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে ই-সেবা নিশ্চিত করবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট।

এসআইএস/জেআইএম

আরও পড়ুন