ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডের জন্য ১২ কোটি টাকা চায় আইসিটি বিভাগ
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের বড় আসর ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৭ আয়োজনে সরকারের কাছে ১২ কোটি টাকার বরাদ্দ চায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। তবে প্রস্তাবনাটি যথাযথ না হওয়ায় সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হলো ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৭ এর উপদেষ্টা কমিটি সভা। নতুন করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে ফের আগামী ১১ নভেম্বর বসবে কমিটি।
সোমবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বেসামরিক পর্যটন ও বিমান পরিবহন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, অর্থ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব মুসলিম চৌধুরী, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব সুশান্ত কুমার সাহা, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান, বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ, বেসিস সভাপতি মোস্তফা জব্বার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সভার শুরুতে ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৭ আয়োজনের ওপর একটি ডিজিটাল প্রতিবেদন দেখানো হয়। এরপর তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানান, ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৬ আয়োজনে ব্যয় হয়েছে ১১ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার দিয়েছে ৬ কোটি টাকা। বাকি অর্থ স্পন্সর থেকে নেয়ার কথা থাকলেও পুরো অর্থ এখনো আদায় করা যায়নি। কেউ কমিটমেন্ট ভঙ্গ করলে সে অর্থ দেবার ক্ষমতা আইসিটি বিভাগের নেই।
তিনি বলেন, এ বছর আরও একদিন বাড়িয়ে চারদিন হবে ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৭। এ জন্য এ বছর ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ কোটি টাকা। এ পুরো অর্থ সরকারকে বরাদ্দ দেয়ার জন্য অনুরোধ জানান প্রতিমন্ত্রী।
এ প্রসঙ্গে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, এবার বাজেট ১২ কোটি। তাহলে ইনকাম কী? পুরো ১২ কোটি যদি সরকার দেয়। তাহলে স্পন্সর, স্টল থেকে নেয়া অর্থ কী হবে। তাই আইসিটি বিভাগকে অর্থ ব্যয় এবং সম্ভাব্য আয়ের একটি সুষ্পষ্ট প্রস্তাবনা দেয়ার পরামর্শ দেন নসরুল হামিদ।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব সুশান্ত কুমার সাহা বলেন, বৈঠকে ১২ কোটি টাকা বরাদ্দের নীতিগত অনুমোদন দেয়া হোক। পরে সচিব পর্যায়ে বসে ঠিক করা হবে- কতটা স্টল থেকে আসবে, কতটা বেসিস দেবে, স্পন্সররা দেবে।
এর জবাবে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, নীতিগত অনুমোদন মানে কী? সরকার পুরোটা দেবে?
এ সময় ১২ কোটির প্রস্তাবনাটির যৌক্তিকতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন আছে কি না, জানতে চান জুনাইদ আহমেদ পলক। না থাকলে অর্থায়ন কীভাবে নিশ্চিত করা যায় কমিটিকে তা দেখতে বলেন তিনি।
পলক বলেন, প্রতি বছরই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। ২১ সাল পর্যন্ত সহায়তা অব্যাহত থাকলে আইসিটি খাত দঁড়িয়ে যাবে। এ জন্য সরকারি-বেসরকারি খাত হতে ১২ কোটি টাকার অর্থায়ন নিশ্চিত করার কথা বলেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, অর্থায়ন কোথা হতে হবে এটা ভাগ করতে হবে। স্টলগুলো হতে এক কোটি টাকা আসতে পারে। যাই হোক আগামী ১১ নভেম্বর আবার বসে অর্থায়নের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।
এদিকে, সভায় জানানো হয় ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৭ আগামী ৬-৯ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে। এর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১১ সাল থেকে আইসিটি বিভাগের উদ্যোগে এ আয়োজন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সহযোগী হিসেবে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, বেসিস এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্প থাকবে।
এ সম্মেলনের মাধ্যমে বিগত সাড়ে আট বছরে দেশের অগ্রগতি, অর্জন এবং আগামীর পরিকল্পনা সম্পর্কে অবহিত করা হবে। সম্মেলনে ২৭টি সেমিনারের পাশাপাশি সাতটি প্রদর্শনী করা হবে। স্টল সংখ্যা হবে ৫০। সরকারের ৪০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের পাশাপাশি শীর্ষস্থানীয় আইসিটি প্রতিষ্ঠান গেইম, সাইবার নিরাপত্তা, ইনোভেশন নিয়ে অংশ নেবে।
এমইউএইচ/বিএ