মানব পাচারে ব্যবহৃত হচ্ছে ফেসবুক
ফেসবুক, টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহৃত হচ্ছে নানারকম অবৈধ ব্যবসায়। মক্কেলদের ধরার জন্য চোরাকারবারিরা এখন ফেসবুকের মতো যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর সহায়তা নিচ্ছে। ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চোরাকারবারিরা ফেসবুকের মাধ্যমে মরিয়া অভিবাসীদের ভূমধ্যসাগর পার করে ইউরোপে পৌঁছে দেয়ার বিজ্ঞাপন দিয়ে যাচ্ছে। খবর ইন্দো-এশিয়ান নিউজ সার্ভিস।
পাচারকারীরা লিবিয়া থেকে ইতালি এবং তুরস্ক থেকে গ্রিস পর্যন্ত পৌঁছে দেয়ার জন্য বিজ্ঞাপন দিয়ে ফেসবুকে আরবি ভাষায় বেশ কয়েকটি পেজ খুলেছে বলে জানিয়েছে পত্রিকাটি। পেজগুলোয় তারা অভিবাসীদের জন্য আরামদায়ক যাত্রার নিশ্চয়তা দিয়েছে। এমনকি ‘নৈতিকতা বজায় রেখে’ মানব পাচারের নিশ্চয়তা দিচ্ছে কোনো কোনো পেজ।
শুধু তাই নয়, আবু মোয়াজ (ছদ্মনাম) নামে এক পাচারকারী তো আরো এক কাঠি সরেস। রাবার বোটে চড়ে নিরাপদে গ্রিস যাত্রার বিজ্ঞাপন দিয়ে ফেসবুকে একটি ক্লোজড গ্রুপ চালাচ্ছেন তিনি। গ্রুপটিতে অভিবাসীদের জন্য সম্ভাব্য বিভিন্ন সমস্যা ও নিরাপদ যাত্রার বিষয়ে নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যান মোয়াজ। তার ভাষ্য অনুযায়ী, যাত্রার সময় নেবে মাত্র দেড় ঘণ্টা। জনপ্রতি খরচ পড়বে ৯৫০ ডলার। আগ্রহী যাত্রীরা গ্রুপে দেয়া হোয়াটসঅ্যাপ ও ভাইবার নম্বরে কল দিয়ে তার সঙ্গে কথা বলতে পারবে। তুরস্ক উপকূলের বোদরুম ও ইজমিরের মাঝামাঝি কোনো এক জায়গা থেকে ছেড়ে যায় তার রাবার বোট। তবে নিজ পেশার ব্যাপারে বেশ খোলামেলা মোয়াজ।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানায়, এ ব্যাপারে গ্রুপটিতে তার নিজেরই পোস্ট করা মন্তব্য হলো, ‘এটা স্রেফ মানব পাচার। এর বেশি বা কম কিছু নয়।’ অন্য পাচারকারীদের সঙ্গে একটা পার্থক্য বজায় রাখেন মোয়াজ। নিজে সঙ্গে থেকে অভিবাসীদের নিরাপদে ভূমধ্যসাগর পার করে দেয়ার কথা সে বেশ জোর গলায়ই দাবি করে থাকে।
এ ধরনের ফেসবুক পেজ চালানো লোকদের পরিচয় নিশ্চিত করা প্রায় অসম্ভব। তার পরও ‘মাইগ্রেশন ফ্রম লিবিয়া টু ইতালি’ পেজ ঘাঁটলে তাতে ৪ হাজার ৬০০ লাইক, নিয়মিত পোস্টিং এবং কমেন্ট ফিডভর্তি মন্তব্য দেখা যাবে।
এআরএস/এমএস