ভিডিও EN
  1. Home/
  2. তথ্যপ্রযুক্তি

গ্রামীণফোনের ভিআরএস ঘোষণা : ছাঁটাই আতঙ্কে হাজারো কর্মী

প্রকাশিত: ০৮:৫৮ এএম, ১০ জুন ২০১৬

স্বেচ্ছা অবসর স্কিম (ভিআরএস) ঘোষণা করেছে শীর্ষ মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন। বৃহস্পতিবার এ ভিআরএস ঘোষণা করেছে অপারেটরটি। শুক্রবার পর্যন্ত ৯৭ জন কর্মী অবসরে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। স্বেচ্ছা অবসর নিতে আগ্রহী কর্মীদের ১৫ জুনের মধ্যে আবেদন করতে সার্কুলার জারি করা হয়েছে। এদিকে প্রতিষ্ঠানটির ভিআরএস ঘোষণায় হাজারো কর্মী ছাঁটাই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।

সূত্রে জানা গেছে, মোবাইল ফোন অপারেটর বাংলালিংকের চেয়েও দ্বিগুণ স্বেচ্ছা অবসর স্কিম ঘোষণা করেছে গ্রামীণফোন। প্রতিষ্ঠানটি আশা করেছিল তাদের কাঙ্ক্ষিত ৯শ কর্মী এতে অংশগ্রহণ করবে।

বাংলালিংকে ৩০ জন থেকে ৪৭০ জন কর্মী স্বেচ্ছায় অবসর স্কিমে নাম লিখিয়েছিলেন। কিন্তু গ্রামীণফোনে কর্মীদের থেকে সে ধরনের সাড়া পাচ্ছেন না কর্তৃপক্ষ। আরো পাঁচদিন সময় হাতে থাকলেও এখনো পর্যন্ত মাত্র ৯৭ জন আগ্রহ দেখিয়েছেন। তবে যে কর্মীদের বয়স ৫৮ বছর বা তার বেশি তারা এ স্কিমে আসতে পারবেন না।

এ ব্যাপারে গ্রামীণফোনের হেড অব এক্সটার্নাল কমিউনিকেশন্স সৈয়দ তালাত কামাল বলেন, ‘গ্রামীণফোন কর্তৃক প্রস্তাবিত স্কিমটি সম্পূর্ণ ঐচ্ছিক। গ্রামীণফোনে কর্মীদের মূল্যবান অবদান রাখায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশের অংশ হিসেবেই এই সুবিধা চালু করা হয়েছে। তারা চাইলে প্রতিষ্ঠানের বাইরে ক্যারিয়ার শুরুর কথা বিবেচনা করতে পারবেন।’

গ্রামীণফোনের কর্মীদের মতে, কর্তৃপক্ষ এটাকে স্বেচ্ছা অবসর স্কিম (ভিআরএস) বললেও আসলে ম্যানেজমেন্ট নিজেদের মতো করে এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এখানে যে কেউ ভিআরএসের জন্য আবেদন করতে পারলেও তিনি আদৌ যেতে পারবেন কি না তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কর্তৃপক্ষ। কর্মীদের স্বেচ্ছায় অবসরের কথা বলা হলেও স্কিমে যাওয়ার ব্যাপারে কোনো স্বাধীনতা নেই।

গ্রামীণফোনে ‘এফ’ থেকে ‘এ’ ক্যাটাগরি অর্থাৎ পিয়ন থেকে প্রধান নির্বাহী পর্যন্ত চাকরির পদমর্যাদা রয়েছে। এরমধ্যে ভিআরএস স্কিমের আওতায়, যারা ‘এফ’ ক্যাটাগরিতে চাকরি করেন তাদের মূল বেতনের ৬০ থেকে ৭০টি মূল বেতন, ই-ক্যাটাগরিতে ৫৪ থেকে ৬৪টি মূল বেতন, ডি ক্যাটাগরিতে ৪২ থেকে ৫২টি এবং সি ও বি ক্যাটাগরিতে জন্য ২৪ থেকে ৩৪টি মূল বেতনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।

‘ই’ ক্যাটাগরিতে ইউনিয়নের লিডারের সংখ্যা বেশি এবং ডি ক্যাটাগরিতে মধ্য সারির ম্যানেজমেন্টের সংখ্যা বেশি। এই দুটি ক্যাটাগরিতে যারা চাকরি করছেন তাদের নিয়েই মূলত প্রতিষ্ঠানের মাথা ব্যাথা। ‘ই’ ক্যাটাগরির প্রতিটি কর্মীর বেতন বাবদ ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা খরচ করতে হয়। অথচ এই শ্রেণির কর্মীদের কাজ আউটসোর্সিং করলে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যে করা সম্ভব।

কর্মী ছাঁটাই বিষয়ে গ্রামীণফোন এমপ্লয়ি ইউনিয়নের (জিপিইইউ) সাধারণ সম্পাদক মিয়া মাসুদ জাগো নিউজকে বলেন, বিদায় নেয়া কর্মীরা এখন মধ্যবয়সে রয়েছেন। তারা কেউ এখন সরকারি চাকরিতেও আবেদন করতে পারবেন না। গ্রামীণফোন ২ হাজার কোটি টাকার লাভজনক কোম্পানি। তারা যদি এভাবে কর্মী ছাঁটাই করে তাহলে বড় বড় প্রতিষ্ঠানও তাদের অনুসরণ করতে শুরু করবে। এ বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি কামনা করেন তিনি।

২০০৭-০৯ সাল পর্যন্ত গ্রামীণফোনের কর্মী ছিল ৫ হাজারের মতো। ২০০৯ সালে এসে ১২ শতাধিক কর্মী ছাঁটাই করে কর্তৃপক্ষ। ২০১২ সালে এসে আরো তিন শতাধিক কর্মী ছাটাই করে প্রতিষ্ঠানটি। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির ভেতরে নানা ঝামেলা শুরু হলে শেষ পর্যন্ত একটি ইউনিয়ন গড়ে ওঠে। ২০১৩ সালে গ্রামীণফোন পিপলস কাউন্সিল গড়ে ওঠে। ওই বছর ১৮৮ জনকে সম্মানের সঙ্গে বিদায় জানানো হয়।

২০১৪ সালে কোনো সমস্যা হয়নি। ২০১৫ সালের ২৩ এপ্রিল ৪ থেকে ১০টি বেসিক বেতন দিয়ে ২৮ জনকে বিদায় দেয়া হয়। ২০১৬ সালে এসে গ্রামীণফোনের বর্তমানে ২ হাজার ৯৬৮ জন কর্মী থেকে অন্তত ৯০০ জনকে স্বেচ্ছায় অবসর স্কিমে ছাঁটাই করে ২ হাজার কর্মীর প্রতিষ্ঠান করার জন্য নতুন একটি পরিকল্পনা হাতে নেয় গ্রামীণফোন। তবে এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে ভালো কোনো সাড়া পাচ্ছে না কর্তৃপক্ষ।

আরএম/আরএস/এনএফ/পিআর