ডিজিটাল সংযুক্তি শিক্ষাবিস্তারের অন্যতম বাহন: মোস্তাফা জব্বার
ডিজিটাল প্রযুক্তি এবং ডিজিটাল সংযুক্তি শিক্ষা বিস্তারের অন্যতম বাহন বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেন, আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রচলিত গতানুগতিক পদ্ধতিতে শিক্ষাদানের বিদ্যমান ধারা সম্পূর্ণ পরিবর্তন করা অপরিহার্য। শিক্ষার পদ্ধতি হতে হবে ডিজিটাল প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পছন্দনীয় পদ্ধতিতে। এর ফলে তারা আনন্দের সাথে সহজে পাঠ গ্রহণ ও ধারণ করতে পারবে।
শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীতে ‘ভবিষ্যৎ চাহিদা মেটাতে মিশেল পদ্ধতিতে শিক্ষা প্রদান’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। আন্তর্জাতিক সংগঠন জেইআইএসটি এ সেমিনারের আয়োজন করে।
মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তি বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছে। এই পরিবর্তিত ব্যবস্থায় শিখন ও শেখানোর পদ্ধতিসমূহকে আরও সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে শিক্ষাবিদ ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সড়কের নাম হচ্ছে ডিজিটাল সংযুক্তির মহাসড়ক। কোভিডকালে স্বাস্থ্য, শিক্ষা বাণিজ্যসহ এমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ নেই ডিজিটাল সংযুক্তির মাধ্যমে করা হয়নি।
আরও পড়ুন>>সব গ্রামে উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেওয়া হবে
মিশেল শিক্ষা পদ্ধতির জন্য নানা আধুনিক মডেল প্রচলিত রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেগুলো সহজ, আনন্দময়, মাল্টিমিডিয়া ও ইন্টারঅ্যাকটিভ সেগুলো সব দেশের সব বয়সী মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য। তবে এগুলো বাস্তবায়নের জন্য যেসব উপকরণের কথা বলা হয়েছে, তা জোগান ও সামাল দেওয়া নিশ্চিত করতে হবে।
টেলিযোগাযোগমন্ত্রী বলেন, কোভিডকালে সফলতার সঙ্গে মোবাইল ও ইন্টারনেটের বিশাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে দেশের প্রত্যন্ত গ্রামের শিশুটিও অনলাইনে শিক্ষাগ্রহণের সুযোগ পেয়েছে। আজকের দিনে ডিজিটাল যন্ত্র থেকে শিক্ষার্থীদের দূরে রাখা যাবে না। এটি একটি সেকেলে ধারণা। শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল যন্ত্র বিশেষ করে স্মার্টফোন থেকে দূরে সরিয়ে রাখার গোঁড়ামি থেকে শিক্ষক ও অভিভাবকদের সরে আসতে হবে। ভালো কনটেন্ট না থাকায় অনেকে হয়তো স্মার্ট ফোনের অপব্যবহার করতে পারে, তবে এ থেকে তাদের নিবৃত রাখা কঠিন কাজ নয়।
তিনি বলেন, দেশে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে সরকার শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের কাজ শুরু করেছে। এরই মধ্যে দেশের দুর্গম অঞ্চলে সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের সুযোগ পৌঁছে দিতে ৬৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পার্বত্য অঞ্চলের ২৮টি পাড়া কেন্দ্রে ডিজিটাল শিক্ষার অভিযাত্রা শুরু হয়েছে।
উপস্থিত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তোমরা যদি ডিজিটাল দক্ষতা অর্জন না করো, ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করতে না জানো তবে আমরা স্মার্ট যুগের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সফল হবো না। শিক্ষায় ডিজিটাল রূপান্তরে ১৯৮৭ সাল থেকে দীর্ঘ পথচলায় নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখী হয়েও শিশুশিক্ষার জন্য সফটওয়্যার বানিয়েছি।
আরও পড়ুন>>আগামী দিনের শিক্ষা হবে সম্পূর্ণ ডিজিটাল: মোস্তাফা জব্বার
ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় গত ১৪ বছরে বাংলাদেশ পৃথিবীর অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, করোনাকালেও প্রবৃদ্ধি অর্জনে সেরা সফল দেশসমূহের মধ্যে অন্যতম অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, আজকের বাংলাদেশ ৩৫তম অর্থনৈতিক শক্তিশালী দেশই নয় শুধ, অগ্রগতির এই ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৪১ সালে বাংলাদেশ বিশ্বের সেরা দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে।
জেইআইএসটি চেয়ারম্যান বিপ্লব কুমার দেবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে জেইআইএসটি গ্লোবালের প্রেসিডেন্ট ড. সব্যসাচি মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এসএম হাফিজুর রহমান, প্রফেসর আবু বিন সুশান্ত, জেইআইএসটি পরিচালক বেদুরা জাহান এবং এটুআই কর্মকর্তা তৌফিকুর রহমান বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা ব্লান্ডেড শিক্ষা বিস্তারে কনটেন্ট এবং ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারের অপর্যাপ্ততাসহ বেশ কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
এইচএস/ইএ/এমএস