পিসি ও ল্যাপটপ পরিষ্কারে এসব ভুল করছেন না তো
ঘরে পিসি, বাইরে গেলে ল্যাপটপ এখন সর্বক্ষণের সঙ্গী। নানা কাজে ব্যবহার করছেন যন্ত্রটি। কখনো অনলাইন ক্লাস, কখনো বা অফিস মিটিং সেরে নিচ্ছেন ল্যাপটপ বা ডেস্কটপে। ইন্টারনেট কানেকশন দিয়ে সারা বিশ্বের খবরাখবর জানতে পারছেন এর মাধ্যমে।
তবে আপনার অবসর কিংবা কাজের সঙ্গী যন্ত্রটির যত্ন নিচ্ছেন তো? নিয়মিত পরিষ্কার না করলে এর কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে। আপনার চাহিদা মতো কাজও করতে পারবে না। তাই তো নিয়মিত পিসির কিবোর্ড, মাউস, মাদারবোর্ড, হার্ডডিস্কসহ প্রায় সব যন্ত্রাংশই নিয়মিত পরিষ্কার করুন। এতে আপনার কম্পিউটার ও ল্যাপটপের আয়ু বাড়বে।
জানেন কি, ১৪ ফেব্রুয়ারি কিন্তু কম্পিউটার পরিষ্কারের দিন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিত হয় দিনটি। মূলত ব্যবহারকারীকে তার ডেস্কটপ পরিষ্কার রাখার উৎসাহ দিতেই এই দিবসের সূচনা।
তবে অনেকেই পিসি ও ল্যাপটপ পরিষ্কারের সময় কিছু ভুল করে থাকেন। এতে উল্টো পিসি ও ল্যাপটপের আয়ু কমে যায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক পিসি ও ল্যাপটপ পরিষ্কার করার সঠিক পদ্ধতি-
> প্রথমেই আপনার পিসি কিংবা ল্যাপটপ যেটাই হোক না কেন সব ধরনের কানেকশন অফ করে দিন।
> কম্পিউটারের কোনো অংশে সরাসরি কোনোকিছু স্প্রে করবেন না বা সরাসরি কোনো লিকুইড ঢালবেন না। একটি কাপড়ের উপর লিকুইড বা স্প্রেটি প্রয়োগ করুন তারপর সেটি কম্পিউটারের নির্দিষ্ট অংশে ব্যবহার করুন। এক্ষেত্রে কটন বা সুতি কাপড় ব্যবহার করুন।
> পরিষ্কার করার সময় সাবধান থাকুন যেন কোনো নব বা কানেকশন নড়ে না যায় । বিশেষ করে যখন কম্পিউটারের পেছনের দিকটি পরিষ্কার করবেন তখন অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যেন কোন প্লাগ ছুটে না যায়।
> ফ্যান পরিষ্কারের সময় ফ্যানটি ধরে রাখুন অথবা কোন কিছু দিয়ে আটকে রাখুন যেন এটি না ঘুরে। ভ্যাকুয়াম বা কম্প্রেসড এয়ার স্প্রে করার ফলে আপনার ফ্যানটি এর কার্যকারিতা হারাতে পারে।
> কম্পিউটারের কাছাকাছি কোনো খাবার খাবেন না বা পানীয় পান করবেন না। কম্পিউটারের কাছে বসে ধূমপান করবেন না বা করলেও কম করার চেষ্টা করুন।
> মাসে একবার না পারলে প্রতি ৫ মাস অন্তর আপনার কম্পিউটার ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন।
> ধুলা, ময়লা, সিগারেটের ছাই ইত্যাদি পরিষ্কার করার জন্য ভ্যাকুয়াম ব্যবহার করুন। কিন্তু অবশ্যই ব্যাটারিযুক্ত পোর্টেবল ভ্যাকুয়াম ব্যবহার করতে হবে। কারণ সরাসরি এসি প্লাগের ভ্যাকুয়াম প্রচুর পরিমাণ স্ট্যাটিক ইলেকট্রিসিটি উৎপাদন করে যা আপনার কম্পিউটারকে নষ্ট করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
> পোর্টেবল ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের বিকল্প হিসেবে কম্প্রেসড এয়ার ব্যবহার করতে পারেন। বিশেষ করে মাদারবোর্ড পরিষ্কার করার সময় এটি ব্যবহার করুন।
> কম্পিউটার কেইস পরিষ্কারের ক্ষেত্রে প্রথমে কেইস আপনার সিপিইউ কেইসটি পরিষ্কার করে নিন। ভ্যান্টিলেশন স্লটগুলো পরিষ্কার হওয়ার ফলে কম্পিউটারের ভেতরে যথাযথ বাতাস চলাচল করবে। এতে ভেতরের সব যন্ত্রপাতি ঠাণ্ডা থাকবে। যে কেইসটি আপনার কম্পিউটারের যন্ত্রপাতিকে আবদ্ধ করে রেখেছে সেই কেইসটিকে আপনি পাতলা সুতি কাপড় দিয়ে মুছে নিন।
> কিবোর্ড, সিডির কভার খুলে পরিষ্কার করে নিন। কিবোর্ড উল্টে একটু ঝেড়ে নিতে পারেন প্রথমে। তাপর ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করে নিন।
> মাউসটি প্রয়োজনে প্রতিদিন মুছে নিন। এতে আপনার ব্যবহারেও যেমন স্বাচ্ছন্দ্য হবে তেমনি দেখতেও নতুন থাকবে অনেকদিন।
> মনিটর পরিষ্কারের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করুন। মনিটরের স্ক্রিন পরিষ্কার করতে সাধারণ কাপড় ব্যবহার করবেন না। কারণ কাপড়ে অনেক সময় বালি বা ধুলোর কনা লেগে থাকে। এতে স্ক্রিনের উপর দাগ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই মাইক্রোফাইবার কাপড় ব্যবহার করুন।
> মাইক্রোফাইবার কাপড় দিয়ে কম্পিউটার বা ল্যাপটপের স্ক্রিন পরিষ্কারের সময় উপয় পিঠ ব্যবহার করুন। প্রথমে একদিক দিয়ে পুরো স্ক্রিনটি পরিষ্কার করুন। তারপর কাপড়টি উল্টে নিয়ে বিপরীত দিক দিয়ে স্ক্রিনটি পরিষ্কার করুন। এতে দাগ পরবে না স্ক্রিনে।
> এলোমেলোভাবে পরিষ্কার করবেন না। এতে স্ক্রিনের উপর দাগ পড়ে যেতে পারে। তাই একমুখীভাবে স্ক্রিন পরিষ্কার করুন। অর্থাৎ প্রথমে ভার্টিক্যালভাবে পরিষ্কার করুন, তারপর হরিজনট্যালি। এতে স্ক্রিনটি আরও ভালোভাবে পরিষ্কার দেখাবে।
> আপনার হেডফোনগুলোও পরিষ্কার করুন নিয়মিত। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করলে এতে ব্যাকটেরিয়া জমতে পারে। যার ফলে আপনার কানেরও সমস্যা হতে পারে। ইয়ারফোনের ইয়ারপ্যাডগুলো খুলে গরম পানিতে ধয়ে শুকিয়ে নিন। একটি সুতি কাপড় গরম পানিতে ভিজিয়ে হেডফোনটি ভালোভাবে মুছে শুকিয়ে নিন।
কেএসকে/জেআইএম