মোটরসাইকেল চুরি রোধের উপায়
মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা নতুন কিছু নয়। অনেকে তো এই ভয়ে মোটরসাইকেল কিনতেই চান না। ব্রিটেনে করা এক জরিপে দেখা যায়, এক বছরে সেখানে ২০ হাজার মোটরসাইকেল চুরি হয়েছে। যার মাত্র কয়েক শতাংশই উদ্ধার করা গিয়েছে। বাকিগুলো থাকে ধরা ছোয়ার বাইরে। চুরি হওয়া মোটরসাইকেলের ৭০ শতাংশই চুরি হয় নিজ বাড়ি থেকে থেকে।
ভীতিকর এই পরিসংখ্যান দেখে সারাবিশ্বেই বেশ আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। তবে দেশের বাইরে থেকে যদি আমরা এবার দেশের ভেতরে একটু নজর দেই তাহলে দেখা যায়, বাংলাদেশে মোটরসাইকেল চুরির সংখ্যা নেহাত কম নয়। তবে এ থেকে পরিত্রাণের একমাত্র কার্যকরী উপায় হচ্ছে নিজে সচেতন থাকা।
আপনার মোটরসাইকেলের নিরাপত্তা বাড়িয়ে নিতে সচেতনতার পাশাপাশি কিছু বিষয় মাথায় রাখতে পারেন-
> মোটরসাইকেল লক করার জন্য চেইন ব্যবহার করতে পারেন। এই ধরনের শেকলকে বলা হয় মেরিন এঙ্কর, কেস হার্ডেন্ড স্টিলের তৈরি শেকল বা চেইন ব্যবহার করতে পারেন। খুব বেশি দাম নয়। তবে সুরক্ষা দেবে শতভাগ।
> চেইন বা শেকল যেটাই ব্যবহার করুন না কেন মাটি থেকে উপরে লাগান। কারণ চোর মাটিতে রাখা চেইন দ্রুত বোল্ট কাটার ব্যবহার করার সুযোগ পায়। খুব সহজেই চেইনের যে কোনো একটা রিং ফাঁকা করিয়ে শেকল খুলে ফেলতে পারে।
> ডিস্ক লক ব্যবহার করতে পারেন। যদিও এটি খুব বেশি কার্যকরী নয়। তবে চাকাতে যখন ডিস্ক লক লাগানো হয়, তখন এতে লাথি কিংবা হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করা কঠিন হয়ে পড়ে।
> দৃশ্যমান জায়গায় পার্ক করুন। অন্ধকার গ্যারেজ থেকে মোটরসাইকেল বা গাড়ি প্রায়ই চুরি হলেও পার্কিং লট থেকে বাইক বা গাড়ি চুরির হার খুবই কম। তাই এমন জায়গায় পার্ক করুন যেন সেটা সবসময় দৃশ্যমান থাকে।
> সিকিউরিটি এ্যালার্ম ব্যবহার করতে পারেন। মোটরসাইকেল বা গাড়ির লকে এখন প্রায় সবাইই এ্যালার্ম ব্যবহার করছে। মোটরসাইকেল অন্য কেউ টাচ করলেই তীব্র শব্দে এ্যালার্ম বেজে উঠে। এতে চোরও যেমন ভড়কে যায় তেমনি আশেপাশের মানুষকেও সচেতন করে তোলে।
> ডাটা ট্যাগ ব্যবহার করতে পারেন। ডাটা ট্যাগের কারণে চার-পাঁচ হাজার টাকা হয়তো খরচ হবে আপনার। তবে এই প্রযুক্তি ব্যবহারে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত মোটরসাইকেল নিরাপদ হয়ে যায় চোরদের হাত থেকে। মোটরসাইকেল চোরদের জন্য আরো বড় সুবিধা হচ্ছে, ডাটা ট্যাগযুক্ত মোটরসাইকেল চুরির পর উদ্ধারের হার প্রায় শতভাগ।
> ডাটা ট্যাগ স্টিকার লাগিয়ে রাখুন। শুধু বাইকে ডাটা ট্যাগ লাগালেই হবে না, চোরকে জানিয়ে দিন আপনার বাইকটি ডাটা ট্যাগযুক্ত। এজন্য বাইকের দিকে তাকালেই যেসব জায়গায় সবার আগে চোখ যায় এমন দৃশ্যমান জায়গায় ডাটা ট্যাগ স্টিকার লাগিয়ে রাখতে হবে। স্টিকারের রংও হওয়া উচিৎ চোখ ঝলসানো রঙ্গিন, যাতে না চাইলেও চোখ চলে যায় স্টিকারে।
> আপনার মোটরসাইকেলে ট্র্যাকার লাগিয়ে নিতে পারেন। মোটরসাইকেলের উপর চোরের আক্রমণ হওয়া থেকে বাঁচতে ট্র্যাকার হয়তো কোনো কাজে দেবে না। তবে এটি চুরি হওয়া মোটরসাইকেল ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ায় অনেক গুণ।
> নিয়মিত পার্কিং লোকেশন পরিবর্তন করুন। প্রতিদিন এক জায়গায় পার্ক না করে বিভিন্ন দিন বিভিন্ন জায়গায় করুন। সাম্প্রতিক কিছু সিসিটিভি ফুটেজে চুরির ভিডিও এনালাইসিস করে দেখা যায় যে, চোর প্রথম দিনেই এসে চুরি করছে না, বরং সে পর পর কয়েকদিন বাইকের কাছাকাছি ঘোরাঘুরি করছে, আশেপাশের এলাকা পর্যবেক্ষণ করছে, সময়ের হিসেব রেখে বের করছে কোন সময় লোক চলাচল বেশি, কোন সময় থাকা ফাঁকা। এসব নিয়ে বেশ একটা চৌর্য গবেষণা করে চোর মহাশয় চুরি করছেন তার জন্য সেরা দিনের সেরা সময়ে।
সূত্র: মোটরসাইকেল ক্রুজার
কেএসকে/এমএস