হোয়াটসঅ্যাপে ‘ভুয়া মেসেজ’ এলে কী করবেন?
হোয়াটসঅ্যাপে বিভিন্ন নম্বর থেকে ভুয়া মেসেজ সবার ফোনে কম-বেশি আসে। অনেকে আবার কৌতূহলবশত ভুয়া ওইসব মেসেজে পাঠানো ছবি, লিংক বা ভিডিওতে ঢুকে থাকেন। এগুলো কিন্তু হ্যাকারদের কাজ। তাই ফোনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রক্ষায় এসব অজানা লিংকে প্রবেশ না করাই ভালো।
শুধু আপনি নন, বিশ্বের অনেকেই এমন অদ্ভুত সব ভুয়া মেসেজ হোয়াটসঅ্যাপে পেয়ে থাকেন। বিশেষ করে করোনার এ সময়ে অনেকেই তাদের হোয়াটসঅ্যাপে বিভ্রান্তিকর নানা মেসেজ পেয়েছেন। স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে ওইসব মেসেজ পাঠানো হয়। যেগুলো অনুসরণ করলে স্বাস্থ্যঝুঁক বাড়তে পারে।
ওয়াবেটা ইনফোর তথ্যমতে, আপনার কোনো পরিচিত নম্বর থেকে একটি মেসেজ পাঠানো হতে পারে। যেটি অদ্ভুত বর্ণ ব্যবহার করে লেখা। আপনি সেগুলো সম্পূর্ণ পড়লেও ওই মেসেজের কোনো অর্থই বুঝতে পারবেন না। আবার দেখবেন এমন মেসেজ সবাই পরিচিতজনদের হোয়াটসঅ্যাপে ফরওয়ার্ড করছেন। এতে আপনি নিজেরও যেমন ক্ষতি করছেন; তেমন অন্যেরও বড় ক্ষতি করতে যাচ্ছেন।
অনেক সময় হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজগুলো সম্পূর্ণরূপে রেন্ডার করতে সক্ষম হয় না। কারণ এদের স্ট্রাকচার সম্পূর্ণ অদ্ভুত। মেসেজগুলোর সংমিশ্রণ এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করে, যে কারণে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজটি প্রসেস করতে পারে না। ফলে আপনার ফোন থেকে অ্যাপটি সম্পূর্ণরূপে ক্র্যাশ হয়ে যেতে পারে।
বর্তমানে হোয়াটঅ্যাপ হ্যাকিং করে তথ্য চুরির ঘটনা অহরহই ঘটছে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, মেসেজগুলো অনেকসময় ভার্চুয়াল কার্ড বা ভিকার্ড রূপেও পাঠানো হতে পারে। ওয়াবেট ইনফো আরও জানিয়েছে, আপনি যদি এ ভার্চুয়াল কার্ড মেসেজটি খোলেন, আপনি দেখতে পাবেন যে প্রায় ১০০টি অ্যাসোসিয়েট কন্টাক্ট থাকবে।
প্রতিটি কন্টাক্টের নাম খুব দীর্ঘ এবং অদ্ভুত হবে। এর মধ্যে ক্র্যাশ কোডটি লুকানো থাকে। কখনো ভার্চুয়াল কার্ডগুলোকে এডিট করে পেলোড ইনজেক্টেড করে দেওয়া হয়। যা সমস্যাটিকে আরও গুরুতর করে তোলে।
যেভাবে রক্ষা পাবেন
>> কখনো যদি আপনার হোয়াটসঅ্যাপে অনেক স্পেশাল ক্যারেক্টর ব্যবহৃত কোনো ভুয়া মেসেজ এসে থাকে, তাহলে চেষ্টা করুন হোয়াটসঅ্যাপ ওয়েবের মাধ্যমে সেই কন্টাক্টটিকে ব্লক করতে। আর সব সময় অপরিচিত নম্বর থেকে আসা মেসেজ এড়িয়ে চলুন।
>> পরিচিত কাউকে মেসেজ ফরওয়ার্ড করার আগে অবশ্যই তা সঠিক কি-না যাচাই করুন। ফরওয়ার্ড করার আগে অবশ্যই মেসেজটি সম্পর্কে গুগল করে জানার চেষ্টা করুন। আসলেই সেটির সত্যতা রয়েছে কি-না। অযথা কোনো মেসেজ পরিচিতজনকে ফরওয়ার্ড করে নিজের সম্মানহানী করবেন না। বিশেষ করে ফেক নিউজ ফরওয়ার্ড করা থেকে বিরত থাকুন।
>> হোয়াটসঅ্যাপে আপনার গোপনীয়তা রক্ষা করুন। হোয়াটসঅ্যাপ সম্প্রতি একটি নতুন গোপনীয়তা সেটিংস যুক্ত করেছে, তা মেনে চলুন। হোয়াটসঅ্যাপে খোলা বিভিন্ন গ্রুপে যাতে আপনার নম্বরটি যুক্ত না থাকে, তা খেয়াল রাখুন। এতে আপনার নম্বরটি অনেকেই জানতে পারবেন এবং হ্যাকিংয়ের ঝুঁকিও রয়েছে।
>> ভুয়া মেসেজে বিভিন্ন ছবি, অডিও ও ভিডিও দিয়ে আপনাকে বিভ্রান্ত করা হতে পারে। এজন্য সেসব ছবি বা ভিডিওর সত্যতা যাচাই করতে গুগলে সার্চ দিয়ে সঠিক তথ্য জানুন।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছয় মাস আগের তুলনায় বর্তমানে অনেকটাই কমেছে ভুয়া মেসেজ পাওয়ার ঘটনা। ভুয়া তথ্য বিশ্লেষক মারিয়ানা স্প্রিং বলেন, কয়েক মাস আগেও ভুয়া মেসেজ ভাইরাল হওয়ার ঘটনা ছিল অগণিত। এখন ৭০ শতাংশ পর্যন্ত তা কমেছে। কারণ এখন মানুষ এসব ফেক তথ্য মানতে বা অন্যকে জানাতে আগ্রহী নন। যেকোনো কিছু বিশ্বাস করার আগে তারা দ্বিতীয়বার ভাবছেন।
ইন্ডিয়ানএক্সপ্রেস/জেএমএস/এসইউ/জেআইএম