চাপ মাথায় নিয়েই ভালো কিছু করতে চান ক্রুইফ
মাঠে ঢুকেই হাত উঁচু করে গুটি কয়েক আগত মানুষকে জানান দিলেন তিনি এসেছেন। এরপর প্রায় সবার সাথে হাত মেলালেন। জায়গাটা তার খুবই পরিচিত। এখানে দাঁড়িয়েই শেষবার তাজিকিস্তানের বিপক্ষে কোচিং করিয়েছেন। সেই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেই আবার ফিরলেন বাংলাদেশ ফুটবল দলের ডাচ কোচ লোডভিক ডি ক্রুইফ। এবারও প্রতিপক্ষ সেই তাজিকিস্তান; কিন্তু প্রেক্ষাপট পুরোটাই ভিন্ন। এবার এসেছেন মাত্র দুটি ম্যাচের জন্য। মাঠে ঢুকেই নেদারল্যান্ডসের এই নাগরিক মুখোমুখি হলেন সাংবাদিকদের।
মনের কিছু চাপা ক্ষোভ কথার মাঝেই ফুটে উঠছিল। বারবারই বলছিলেন, এ দেশের ফুটবলে রয়েছে অনেক চাপ; কিন্তু এবারের চাপকে সামলাতে পারবেন কী ক্রুইফ? নতুন অধ্যায়ের সূচনা সম্পর্কে জানতে চাইলে এই ডাচ বলেন, ‘গতবছর আমি দেশে ছিলাম না। তেমন একটা যোগাযোগ ছিল না ফুটবলের সাথে। আমি আগে নানা রকম সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। আমার মনে হয়, গতবছর বাংলাদেশের ফুটবল অনেকটা নিমজ্জিত অবস্থায় ছিল। যদি আপনি জাতীয় দলের ফলাফলের দিকে তাকান তাহলে কেউই ফলাফল নিয়ে গর্ব করতে পারবে না। আমার সর্বপ্রথম কাজই হচ্ছে, আমি থাকাকালীন যে ভালো সময়গুলো ছিল সেই হারানো গৌরবান্বিত সময় গুলোকে ফিরিয়ে আনা। আমি এখানকার পরিস্থিতিটা জানি। আমি জানি কিভাবে দলকে স্বল্প সময়ে গড়ে তুলতে পারি। অবশ্যই খেলোয়াড়, মিডিয়া এবং সমর্থকদের ধন্যবাদ দিবো, কারণ তাদের কারণেই আমি এখানে ফিরে এসেছি।’
বাংলাদেশে ফিরলেও ক্রুইফের সামনের কাজটা যে খুব সহজ হবে না সেটা বলেই দেয়া যায়। ক্রুইফও জানেন কাজটা সহজ নয়। কিন্তু দু ম্যাচ দিয়েই কি পুরনো বাংলাদেশ দলকে ফিরিয়ে আনার সম্ভব? ক্রুইফ বলেন, ‘প্রায় সবাই জানে গতবার তাজিকিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাঠে আমরা ১-১ গোলে ড্র করেছিলাম; কিন্তু আমার মনে হয় আমরা ম্যাচটি জেতার ক্ষমতা রাখি। তাদের একজন লাল কার্ড পেয়েছিল। আমরা অনেক সুযোগ সৃষ্টি করেছিলাম; কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তারা শেষ সময়ে গোল করে বসে। এটি আসলেই আমাদের জন্য বড় রকমের ধাক্কা ছিল। যদি আপনি ম্যাচটি দেখেন তাহলে বুঝবেন আমরা অনেক এগিয়ে ছিলাম। তাজিকিস্তানের মাটিতে হওয়া ম্যাচটিতে আমি ছিলাম না। ইউটিউবে হাইলাইটস দেখেছি। ৫-০ তে আমরা হেরেছিলাম। এটা আসলেই অনেক কঠিন কাজ একটি দলকে কম সময়ে গড়ে তোলা; কিন্তু আমার মনে হয় দলের ফুটবলাররা মানসিক এবং শারীরিক দিক দিয়ে সুস্থ রয়েছে। ঘরের মাঠে আমরা কিছু একটা করার চেষ্টা করবো। এমনকি তাদেরকে হারানোর চেষ্টা করবো।’
কিন্তু এত কম সময়েই দলকে ভালো একটি অবস্থানে নিয়ে যেতে পারবেন ক্রুইফ? প্রশ্ন এখানেই। কয়েকদিন আগেই স্বাধীনতা কাপ খেলেছে ফুটবলাররা। যে কারণেই সবাই রয়েছে খেলার ভেতরে। এই ডাচ কোচ বলেন, সময় খুবই কম আমার জন্য; কিন্তু আমি খুশি যে সকলেই খেলার ভেতরেই রয়েছে। তারা কয়েকদিন আগেই একটি টুর্নামেন্ট খেলেছে। হ্যাঁ, আসলেই সময়টা অনেক কম; কিন্তু জাতীয় দলে আপনি কম সময় পাবেন। আপনি এখানে এক মিনিট সময়ও নষ্ট করতে পারবেন না। এখানে সব সময়েই চাপ থাকে। চাপ নিয়েই খেলতে হয়। আমি সব সময়েই আশাবাদী। আমি জানি আমরা ভালো কিছু করতে পারবো।’
তাজিকিস্তানের বিপক্ষে ২ জুন দুশানবেতে ম্যাচ দিয়েই শুরু হবে ক্রুইফের তৃতীয় অধ্যায় এবং ৭ জুন ঘরের মাঠে তাজিকিস্তানের বিপক্ষেই দ্বিতিয় লেগের ম্যাচে মাধ্যমে শেষ হবে আরো একটি ক্রুইফ অধ্যায়ের।
আরআর/আইএইচএস/এবিএস