আইপিএলের সপ্তাহ সেরা ক্রিকেটার মুস্তাফিজ
আন্দ্রে রাসেলের দুই বার ম্যান অফ দ্য ম্যাচ, বিরাট কোহলির অনবদ্য সেঞ্চুরি কিংবা শেখর ধাওয়ানের দুর্দান্তভাবে রানে ফেরা; গেল সপ্তাহে আইপিএলের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এগুলোই ছিল সবার উপরে। কিন্তু এদের সব পারফরম্যান্সকে তুচ্ছ বানিয়ে আইপিএলে গেল সপ্তাহের সেরা ক্রিকেটার হয়েছেন বাংলাদেশের কাটার মাস্টার মুস্তাফিজ। ভারতীয় পত্রিকা ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়ায়’ আয়োজিত ভোটে সকলেই ভোট দেন মুস্তাফিজকে। মূলত তার বাঁ-হাতের কারিশমার উপর ভর করেই সানরাইজার্স হায়দারাবাদ উঠে এসেছে পয়েন্ট টেবিলের দুই নম্বরে। কিন্তু গেল সপ্তাহে খেলা একটি ম্যাচেও তার হাতে ওঠেনি ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
আইপিএলের প্রথম ছয় ম্যাচে ডেভিড ওয়ার্নারের হায়দারাবাদ মোটামুটি লড়াই করলেও শেষ ম্যাচে যেন নিজেদের নিয়ে গেছে সবার উপরে। ছয় দিনের বিরতি দিয়ে কলকাতা নাইট রাইডার্স, গুজরাট লায়ন্স এবং দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের মত শক্তিশালী দলগুলোর বিপক্ষে খেলতে নামে সানরাইজার্স। কিন্তু সবাইকে তাক লাগিয়ে মুস্তাফিজের বদৌলতে প্রত্যেক ম্যাচেই দাপট দেখিয়ে জিতেছে হায়দারাবাদ।
গুজরাট লায়ন্সের বিপক্ষে শুক্রবার মুখোমুখি হয় হায়দারাবাদ। ঐ ম্যাচের ম্যান অফ দ্য ম্যাচ ভুবনেশ্বর কুমার প্রথমেই ডুয়েন স্মিথ এবং সুরেশ রায়নার উইকেট নিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে ফেলে দেন। কিন্তু মুস্তাফিজের শেষ দিকের বোলিংয়েই মূলত বেশি দূর এগুতে পারেনি গুজরাট। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে ফর্মের তুঙ্গে থাকা দীনেশ কার্তিককে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে কেন উইলিয়ামসের ক্যাচের ফাঁদে ফেলেন মুস্তাফিজ। তারপরেই আবার বোলিংয়ে আসেন ১৪তম, ১৭তম এবং ১৯তম ওভার। এই ওভারগুলোতে দিয়েছেন যথাক্রমে ১, ৬ এবং ৮ রান! শেষের দিকে নিয়েছেন রবীন্দ্র জাদেজার উইকেট। চার ওভার শেষে তার বোলিং ফিগার ৪-০-১৭-২!
গুজরাটের থেকেও বেশি উজ্জ্বল ছিলেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে। প্রথমেই ডেভিড ওয়ার্নার এবং শেখর ধাওয়ানের ব্যাটে ভর করে বড় সংগ্রহ পায় হায়দারাবাদ। এ ম্যাচের ম্যান অফ দ্য ম্যাচ আশীষ নেহরা প্রথম পাঁচ ওভারের ভেতরেই মুম্বাইর প্রথম সারির তিন ব্যাটসম্যানকে আউট করে হায়দারাবাদকে বড় জয়ের ভিত গড়ে দেন। মুস্তাফিজ যখন নবম ওভারে বোলিংয়ে আসেন তখন মুম্বাইর নেই ৬ উইকেট। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা ব্যাটসম্যানরাই যেখানে মুস্তাফিজকে বুঝতে পারে না সেখানে শেষের দিকের ব্যাটসম্যানদের জন্য তো মুস্তাফিজ সাক্ষাৎ যমদূত! বোলিং করতে এসে হার্দিক পান্ডিয়াকে প্রথম বলেই নিজের প্রথম শিকারে পরিণত করেন। তারপর একে একে টিম সাউদি এবং মিশেল ম্যাকগ্লেন্যাহানকে আউট করেন তিনি। তিন ওভার বোলিং করে শেষের ৪ উইকেটের ৩ উইকেটই নেন সাতক্ষীরার এই বিস্ময় বালক। ম্যাচ শেষে তার বোলিং ফিগার দাঁড়ায় ৩-০-১৬-৩! দুই ম্যাচে ৭ ওভার বোলিং করে ৩৩ রান দিয়ে নিয়েছেন ৫ উইকেট।
আরআর/এমআর/আরআইপি