‘সিংহের গুহা’য় নিষিদ্ধ থাকবেন সিমিওনে!
জার্মানির অন্যতম প্রধান শহর মিউনিখের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত আলিয়াঞ্জ অ্যারেনা। ২০০৬ সালে বিশ্বকাপের আগে নতুনভাবে তৈরি হওয়া এই স্টেডিয়ামের একটা বিশেষত্ব রয়েছে। ক্ষণে ক্ষণে বহিরাবরণের রঙ বদলাতে পারে এই স্টেডিয়াম। এই লাল, তো এই সবুজ, আবার পরক্ষণেই হলুদ।
আরেকটাও বৈশিষ্ট্য রয়েছে। স্থানীয় মিউনিখবাসীরা একে ‘সিংহের গুহা’ বলে ডাকেন। অনেকটা ইস্তাম্বুলের তুর্ক টেলিকম অ্যারেনার মতোই। বলা হয়, এখানে এলে কোনও দল জিতে ফেরে না। তবে সেই গর্ব এখন বিলুপ্তপ্রায়। ঘরের ছেলে বায়ার্ন মিউনিখ এখন আর ঘরের মাঠে অপ্রতিরোধ্য নয়। বিশেষ করে পরপর তিন বছর যেভাবে তাদের এই মাঠেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায় নিতে হয়েছে, তাতে আলিয়াঞ্জ অ্যারেনা এখন ‘সিংহের গুহা’র বদলে ইঁদুরের গুহায় পরিণত হয়েছে।
রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা যে বীজ রোপণ করে দিয়েছিল গত দু’বছরে, তাতে ফসল ফলিয়েই বায়ার্নকে ছিটকে দিল অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদও। খুশি যে এবার বাঁধ মানবে না তা তো স্বাভাবিক। বড় কোনও তারকা না নিয়েও তিন বছরের মধ্যে দু’বার ফাইনালে ওঠা, এটা কী কম বড় ব্যাপার! কোচ দিয়েগো সিমিওনে তাই বলেই ফেলেছেন, ‘যেভাবে আমরা খেলেছি, তা অবিশ্বাস্য! বায়ার্নের সঙ্গে খেলার চাপ, সেটা বুঝতেই দেয়নি আমার ছেলেরা। আমরা আরামে সেই চাপ কাটিয়ে দিলাম। এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না কী করে ফেললাম। ইউরোপের দুটো বড় দলকে পরপর ছিটকে দিলাম, বার্সা এবং বায়ার্ন।’
সঙ্গে যোগ তিনি করেন, ‘ওইদিন প্রথমার্ধটা বায়ার্ন অসাধারণ খেলেছে; কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে খেলাটা আমরা ধরে নিই। কাউন্টার অ্যাটাকে গোলও পেয়েছি।’ ফাইনালে অ্যাটলেটিকোর সামনে অপেক্ষা করছে আরেকটা কঠিন পরীক্ষা। যেখানে সামনে পড়ছে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদ। অর্থাৎ, ২০১৪ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের রিপিট। সেবার ৯০ মিনিট এগিয়ে থেকেও ৪-১ ধ্বংস হয়েছিল অ্যাটলেটিকো।
এবার কি তবে প্রতিশোধ? মাদ্রিদ-সিটি ম্যাচের আগে সিমিওনে বলেছিলেন, ‘প্রশ্নই ওঠে না। আমরা ফাইনালে নতুন কাউকে চাই। তবে মাদ্রিদ পড়লেও প্রতিশোধের ভাবনা নিয়ে মাঠে নামবো না। এটা শুধু আরেকটা ম্যাচ। যেখানে আমাদের সুযোগ থাকছে বিপক্ষকে হারানোর’-সপাটে জবাব সিমিওনের।
তবে একই দিন সিমিওনের একটা কাজেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন অনেকটা ধাক্কা খেতে পারে অ্যাটলেটিকোর। গোটা ম্যাচেই সাইডলাইনের পাশে প্রবল চিৎকার এবং চেঁচামেচি করছিলেন সিমিওনে। একসময় বায়ার্ন তারকা রিবেরি পাঁজাকোলা করে তাকে সরিয়ে দেন। তবে সব চেয়ে বড় ঘটনাটি ঘটে অতিরিক্ত সময়ে। থ্রো হওয়ার পরেও অ্যাটলেটিকোর ফুটবলার বদল হতে না দেওয়ায় হতাশায় চতুর্থ রেফারিকে সজোরে ধাক্কা দিয়ে বসেন সিমিওনে।
লা লিগায় ইতিমধ্যেই বাকি ম্যাচগুলিতে তিনি বেঞ্চে থাকতে পারবেন না। মঙ্গলবারের ঘটনার পরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে থাকা নিয়েও প্রশ্ন উঠে গেল তার। এখনও কিছু ঘোষণা না হলেও, সম্ভবত তিন ম্যাচ নিষিদ্ধ হতে পারেন সিমিওনে।
আইএইচএস/আরআইপি