উৎসব মুখর বাফুফে
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের বহুল আলোচিত নির্বাচন হয়েছে ৩০ এপ্রিল। নানামুখি চাপ, অপপ্রচার আর বিতর্কের মাঝেও নীরব ব্যালট বিপ্লব ঘটিয়েছেন কাজী সালাউদ্দিন। ৩৩ ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন প্রতিপক্ষ কামরুল আশরাফ খান পোটন এমপিকে। নির্বাচনের পরদিনই ছিল ১ মে। মহান মে দিবস। সুতরাং, নিবাচন পরবর্তী আনুষ্ঠানিকতার জন্য একদিন অপেক্ষা করতেই হয়েছে।
সুতরাং আজ সকাল থেকে সরগরম বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। সবার মধ্যেই দেখা যাচ্ছিল যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচার মত অবস্থা। কারণ এক মাস আগে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে পরিস্থিতি ঘোলাটে হতে শুরু করে। যে কারণে বাফুফে ভবনের অন্দরেও নানা গুঞ্জন ভেসে বেড়াতে শুরু করে। শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে কাজী সালাউদ্দিনের সম্মিলিত পরিষদের নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জিত হয়ে গেলো, মুহূর্তেই ভারী পরিবেশ কেটে গিয়ে চলে এসেছে একটা উৎসবমুখর ভাব। আজ সকাল থেকেই যেন ফুরফুরে মেজাজে পুরো বাফুফে ভবন।
সকাল ১০টায় টানা তৃতীয়বার নির্বাচিত বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন গেলেন ধানমণ্ডির ৩২ নাম্বারে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে। এরপর সদলবলে তিনি গেলেন বনানী কবরস্থানে। সেখানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানালেন শহীদদের প্রতি। এরপর ফিরে আসেন বাফুফে ভবনে।
তখন থেকেই টানা ভবনে অস্থান করেন বাফুফের নবনির্বাচিত সভাপতি। নানান মহল ফুলের তোড়া নিয়ে আসছিল তাকে শুভেচ্ছা জানাতে। শুভেচ্ছা জানানো হচ্ছিল অন্য নির্বাচিত সহ-সভাপতি কিংবা সদস্যদেরও। ২১ সদস্যের নির্বাচিত কমিটির অধিকাংশই উপস্থিত ছিলেন বাফুফে ভবনে। সবচেয়ে বেশি উচ্চলতা দেখা গেছে সর্বোচ্চ ১০৫ ভোট পেয়ে সদস্য নির্বাচিত ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাবের প্রেসিডেন্ট শওকত আলী খান জাহাঙ্গীর। বরাবরের মত মিডিয়াপ্রিয় ব্যাক্তিত্ব আমিরুল ইসলাম বাবুও ছিলেন ফুরফুরে মেজাজে। তিনি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১০৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘নানা অপপ্রচার হয়েছে। নানামুখি জ্বল্পনা-কল্পনা শোনা গেছে। তবে আমার বিশ্বাস ছিল, ভোটাররা সঠিক জায়গাতেই তাদের রায়টা দেবে। শেষ পর্যন্ত সেটাই হয়েছে।’
শওকত আলি খান জাহাঙ্গীর বলেন, ‘নির্বাচনের আগে তো খুব গালাগালি করেছেন তারা। চুপ করে ছিলাম। বলেছি, আমরা আমাদের কাজ করবো, এর বাইরে কিছু নয়। এবার আমাদের সময়।’ আমিরুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘১৩৪জন ভোটার। কে ভোট দিয়েছে আর কে দেয়নি সেটা বড় কথা নয়। ফুটবলের উন্নয়নে সবাই একসঙ্গে কাজ করবে এটাই চাই। সবাই মিলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করেছেন- এ জন্য সবাইকে জানাই ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।’
তৃতীয় সর্বোচ্চ ৯৪ ভোট পেয়ে সদস্য নির্বাচিত হারুনুর রশীদ এখনই কিভাবে তৃণমূল পর্যায় থেকে ফুটবলার তুলে আনবেন সে পরিকল্পনার কথা জানালেন। বললেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা প্রথমে তৃণমূল থেকে প্রতিভা খুঁজে বের করা। এরপর এদেরকে পর্যাপ্ত ট্রেনিং দিয়ে তুলে আনতে পারলে জাতীয় দলের জন্যই লাভ হবে বেশি।’
আইএইচএস/আরআর/এবিএস