ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

বাজেট ও শোভা দুটিই বেড়েছে দ্বিতীয় ধাপে

রফিকুল ইসলাম | প্রকাশিত: ০৮:১৬ পিএম, ০৬ মার্চ ২০২৪

তরুণদের মাদকের পথ থেকে ফিরিয়ে খেলার মাঠে আনার চিন্তা থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রতিটি উপজেলায় উম্মুক্ত মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলেন। সরকার প্রধানের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ‘উপজেলা পর্যায়ে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্প তৈরি করে তা ৪ ধাপে বাস্তবায়ন করছে। এরই মধ্যে প্রথম ধাপের ১২৫ টি মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ শেষ হয়েছে। চলছে দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পের কাজ। দ্বিতীয় ধাপের ২৫ স্টেডিয়াম এরই মধ্যে উদ্বোধন করা হয়েছে।

শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম প্রকল্প বাস্তবায়নের সরকারী চিত্রের সঙ্গে অনেকাংশেই মিল নেই বাস্তবতার। কোথাও মাঠ তৈরি করা হয়েছে; কিন্তু সেই মাঠ খেলার উপযোগী নয়, কোথাও নেই রক্ষণাবেক্ষণ। কোথাও মাঠ দখলে রয়েছে রাখালদের, খেলার কোনো বালাই নেই সেখানে। মিনি স্টেডিয়ামের জন্য যে সব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে, সে সবের অবস্থাও শোচনীয়।

জাগোনিউজের পক্ষ থেকে খোঁজ নেয়া হয়েছে সারা দেশে বাস্তবায়নরত এই মিনি স্টেডিয়াম প্রকল্পের। ধারাবাহিকভাবে সেগুলোই তুলে ধরা হলো পাঠকদের জন্য। প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ পঞ্চম পর্ব পড়ুন এখান থেকে। আজ প্রকাশিত হলো ৬ষ্ঠ ও শেষ পর্ব

১ হাজার ৬৪৯ কোটি ৩২ লাখ টাকার দ্বিতীয় প্রকল্পটি তৈরি করা হয়েছিল ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে। ২০২১ সালের মে মাসে একনেকের সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হবে ১৮৬ টি। এর মধ্যে প্রথমে কাজ শুরু হয়েছিল ৬৬টির। ২৫টি নির্মাণের পর উদ্বোধন করা হয়েছে। যদিও অনেক উপেজলায় স্টেডিয়াম পুরোপুরি তৈরি নয়। তার আগেই তড়িঘড়ি করে উদ্বাধন করেছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। বর্তমানে নির্মাণ কাচ চলছে ৪১ টির।

প্রকল্পের প্রথম ধাপে নির্মাণ করা স্টেডিয়ামগুলোর চেয়ে দ্বিতীয় ধাপের স্টেডিয়ামগুলোর বাজেট অনেকগুণ বেশি। যে কারণে, এসব স্টেডিয়াম দেখতেও ভালো। এক কথায় বাজেট যেমন বেড়েছে তেমন শোভাবর্ধনও হয়েছে। যেসব উপজেলা দ্বিতীয় ধাপে স্টেডিয়াম পাচ্ছে তারা বেশ খুশি।

প্রথম ধাপের স্টেডিয়ামগুলোয় দর্শকদের জন্য আরসিসি বেঞ্চ ছাড়া কিছু ছিল না। দ্বিতীয় ধাপের স্টেডিয়ামগুলোয় করা হচ্ছে ৩০০ ফুট গ্যালারি। টপ ফ্লোরে ভিআইপিদের খেলা দেখার ব্যবস্থাও থাকবে। প্রয়োজনে এই স্টেডিয়ামগুলোকে দূর্যোগের সময় আশ্রয়স্থল হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে।

দ্বিতীয় ধাপের কাজ চলমান অবস্থায় প্রকল্পের তৃতীয় ধাপে ১২৬ স্টেডিয়াম নির্মাণের প্রকল্প তৈরি করে এরই মধ্যে জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সহকারী পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) সুকুমার সাহা। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৫০ কোটি টাকা। তৃতীয় পর্যায়ে ১৯ উপজেলায় সরকারী খাস জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বাকি ২৮ উপজেলায় স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হবে প্রকল্পের চতুর্থ ধাপে।

দ্বিতীয় ধাপের যে ২৫ উপজেলার স্টেডিয়াম উদ্বোধন করা হয়েছে

রংপুর বিভাগ
পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া, সদর, ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর, পীরগঞ্জ, দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ, নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ, ডিমলা।

খুলনা বিভাগ
মেহেরপুর জেলার সদও ও গাংনী।

বরিশাল বিভাগ
ভোলা জেলার দৌলতখান, বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ।

ময়মনসিংহ বিভাগ
জামালপুর জেলার ইসলামপুর, ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর, মুক্তাগাছা, গফরগাঁও।

ঢাকা বিভাগ
কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর, সদর, মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর।

সিলেট বিভাগ
সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই, বিশ্বম্ভরপুর, জগন্নাথপুর, হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর, সিলেট জেলার জৈন্তাপুর।

চট্টগ্রাম বিভাগ
পার্বত্য খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা, মহালছড়ি।

‘৪৯৫ টি স্টেডিয়াম হবে, রক্ষণাবেক্ষণই বড় চ্যালেঞ্জ’

স্থাপনা তৈরি করেই দায়িত্ব শেষ করে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। এর রক্ষণাবেক্ষণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয় না। যে কারণে, অনেক বড় বড় স্টেডিয়ামও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম বিরাট এক প্রকল্প। হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করার পর কি অবহেলায়ই থাকবে?

প্রশ্ন করা হলে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মো. শামসুল আলম বলেন, ‘আমাদের এই শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম প্রকল্পে রক্ষণাবেক্ষণের কোনো বাজেট নেই। উপজেলা ক্রীড়া সংস্থাকে বাৎসরিক যে বরাদ্দ দেওয়া হয় তার মধ্যে থেকেই তারা রক্ষণাবেক্ষণের কাজটি করেন। তবে আমাদের একটা পরিকল্পনা আছে। এ নিয়ে এরই মধ্যে মন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। প্রথম ধাপে ১২৫ টি স্টেডিয়াম তৈরি করা হয়েছিল। দ্বিতীয় ধাপের ৬৬ টার মধ্যে ২৫ টি উদ্বোধন করা হয়েছে। আমরা এই ১৫০ স্টেডিয়াম রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সোর্সিংয়ের মাধ্যমে ২ জন করে ৩০০ জন লোক নিয়োগ দেওয়ার একটা প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছি।’

আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে এই লোক নিয়োগ দিলে কেমন বাজেট লাগতে পারে? জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ওই পরিচালক বলেন,‘আমরা যদি মাসিক পারিশ্রমিক ১৬৫০০ টাকা করে ধরি তাহলে বছরে ৬ কোটি টাকার মতো লাগবে। এটা করতে পারলে তখন স্থায়ীভাবে স্টেডিয়ামগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করা যাবে। আমরা রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়টি আমলে ধরে একটা পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছি। যখন প্রকল্প শেষ হবে তখন স্টেডিয়াম হবে ৪৯৫টি। রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তখন বছরে গড়ে ১০ কোটি টাকার মতো খরচ হবে। ৪৯৫ টি স্টেডিয়াম হবে, এটা বিশাল ব্যাপার। এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণও একটা চ্যালেঞ্জ।’

আরআই/আইএইচএস/