অস্ট্রেলিয়াকে জবাব দেয়ার দারুণ সুযোগ
অস্ট্রেলিয়ার সাথে বাংলাদেশের সাফল্যের ইতিহাস বলতে গেলে ২০০৫ সালে কার্ডিফের সেই বিখ্যাত জয়ের কথাই বলতে হয়। এছাড়া আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আর কোন জয় নেই টাইগারদের। এ পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে শুধু বিশ্বকাপেই বাংলাদেশের সাথে দেখা হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার। সেখানে এখনও পর্যন্ত তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলে প্রতিটিতেই হেরেছে বাংলাদেশ। তাই পরিসংখ্যান বিচারে অস্ট্রেলিয়াকে বেশ শক্তিশালী মনে হলেও সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সের কারণে তাদের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
এছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার সাথে কিছু হিসাব-নিকাশ বাকি পড়ে আছে বাংলাদেশের। গত বছরের অক্টোবরে নিরাপত্তার ‘অজুহাত’ দেখিয়ে বাংলাদেশে আসেনি অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় দল। পাশাপাশি এ বছরের শুরুতে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপেও সেই একই কারণ দেখিয়ে দল পাঠায়নি তারা। যেখানে অন্য সবগুলো দেশের নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে কোন সমস্যা ছিল না, সেখানে অস্ট্রেলিয়ার এই আচরণ আহত করেছে এদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের। তবে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ও এশিয়া কাপের সফল আয়োজন করে ইতমধ্যেই এর সমুচিত জবাব দিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। সে জবাবটা না হয় আয়োজক হিসেবে দেয়া হয়েছে। এবার মাঠেও জবাব দেয়ার দারুণ সুযোগ পেয়ে গেলেন মাশরাফিরা। পারবে কি টিম বাংলাদেশ!
ব্যাঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম আয়তনে তুলনামূলক ছোট। উইকেট বরাবর ৭০ গজ, আড়াআড়ি ৭২ গজ। সীমানা দড়ি দেওয়ার পর সেটা ৬৫ থেকে ৬৭ গজে নেমে আসে। পাশাপাশি উইকেটও ব্যাটিং বান্ধব হওয়ায় এখানে রান হয় প্রচুর। মাশরাফি যেমন বললেন, ‘আগেই তো বলেছিলাম এ মাঠে ২০০ রান হয়। যেহেতু বিশ্বকাপ ম্যাচ একটু কমও হতে পারে। ব্যাটস্ম্যানদের বলেছি, ১৭০ রান করলেও ম্যাচটা হারা যাবে না। অস্ট্রেলিয়া ১৮০ করলেও ভয়ের কিছু নেই, ওই রান মোকাবেলা করা সম্ভব। এমনি আমরা আগে ব্যাটিং নিয়ে ২০০ করলেও চ্যালেঞ্জ থাকবে। চিন্নাস্বামী আসলে রানের মাঠ।’
ব্যাঙ্গালুরুতে যে হোটেলে উঠেছে বাংলাদেশ তার নাম ‘দ্যা রিজ কার্লটন’। ভারত ছাড়াও পৃথিবীর ২৮টি দেশে মোট ৯০টি ফাইভস্টার মানের হোটেল আছে এদের। এর মূল মালিকানা আমেরিকার ম্যারিয়ট ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির। প্রথম দু’দিন তেমন অনুশীলন না করলেও কাল (শনিবার) থেকে চিন্নাস্বামীতে পুরোদমে অনুশীলন করছে বাংলাদেশ দল। সেখানে তাদের বেশ কিছু ভক্তের দেখা মিলছে প্রায়শই। সেদিন যেমন চিন্নাস্বামীর এক কর্মকর্তা ছবি তুলে গেলেন তার বাংলাদশের প্রিয় ক্রিকেটারদের সাথে।
তবে গতকাল তাসকিন ও সানির আপাত নিষেধাজ্ঞায় বিস্মিত পুরো দল। অধিনায়ক এটিকে বাংলাদেশের জন্য বড় ‘আঘাত’ হিসেবেই বললেন। পরিবর্তিত খেলোয়াড় হিসেবে যোগ দিয়েছেন সাকলাইন সজীব ও শুভাগত হোম। ইনজুরি কাটিয়ে ফেরার সম্ভাবনা আছে মুস্তাফিজের। তাই একাদশে কিছুটা পরিবর্তন যেন অনুমিতই।
পাকিস্তানের বিপক্ষে সুপার টেনে নিজেদের প্রথম ম্যাচ হেরে গেলও ঘুরে দাঁড়াতে প্রস্তুত টাইগাররা। এই ম্যাচ দিয়েই আবার অধিনায়ক হিসেবে ৫০তম ম্যাচ খেলতে যাচ্ছেন মাশরাফি। তবে শেষ পর্যন্ত সকল বাঁধা বিপত্তিকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়িয়ে লড়াই করতে পারে কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়!
আইএইচএস/পিআর