অবিশ্বাস্য ব্যাটিং দেখলাম
এক কথায় বলবো অবিশ্বাস্য! অসাধারণ ব্যটিং দেখলাম। দক্ষিণ আফ্রিকা-ইংল্যান্ড দু’দলই দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছে। চোখে লেগে থাকার মত। ঠিক যেন ২০০৬ সালে জোহানেসবার্গে অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকার সেই অবিশ্বাস্য ওয়ানডে ম্যাচটার মতই। অস্ট্রেলিয়া করেছিল ৪৩৪ আর দক্ষিণ আফ্রিকা জিতে গিয়েছিল ৪৩৮ রান করে। টি-টোয়েন্টিতে ২২৯ রান করে হেরে যাওয়াটা যে কোন দলের জন্যই দুর্ভাগ্যের।
কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা সেই দুর্ভাগ্যেরই শিকার হলো। আমলা, ডি কক কিংবা জেপি ডুমিনিদের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের ওপর ভর করে ২২৯ রান করার পর আমরা ভেবেই নিয়েছিলাম, ইংল্যান্ড আরও একটি ম্যাচে হারতে যাচ্ছে; কিন্তু কে জানতো, এমন অসাধারণ ব্যাটিং করবে ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরাও! শেষ পর্যন্ত অসাধারণ একটি জয়ও তুলে নিল তারা।
ইংল্যান্ডের জন্য এই জয়টি খুব প্রয়োজন ছিল। আগের ম্যাচে হেরে যাওয়ার কারণে এই ম্যাচটি ছিল তাদের জন্য বাঁচা-মরার। হারলেই বিদায় প্রায় নিশ্চিত। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার কারণেই সম্ভবত তারা মরিয়া হয়ে এভাবে ব্যাটিং করেছে। জ্যাসন রয় এবং জো রুট অবশ্যই প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য। তবে এটাও ঠিক, দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা মোটেও ভালো বোলিং করেনি। কাগিসো রাবাদা আর ডেল স্টেইনকে তো খুঁজেই পাওয়া যায়নি। ৪ ওভারে ৫০ রান দিয়েছে রাবাদা। স্টেইন ২ ওভারে দিয়েছে ৩৫। এত বাজে বোলিং দক্ষিণ আফ্রিকার এর আগে কখনও দেখিনি। ইয়ন মরগ্যান যে টস জিতে বোলিং নিয়েছে, আমি বলবো সঠিক সিদ্ধান্ত। অবশ্যই জয়ের কারণে।
শুধু দক্ষিণ আফ্রিকা-ইংল্যান্ড ম্যাচই নয়, অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড ম্যাচটাও হয়েছে দুর্দান্ত। যদিও ওটা ছিল লো স্কোরিং; কিন্তু খেলা দেখে বেশ মজা লেগেছে। ১৪২ রান করেও জিতে গেলো নিউজিল্যান্ড। আগের দিনই বলেছিলাম, স্পিনাররাই পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। ধর্মশালায় ম্যাচ হলেও অস্ট্রেলিয়া কিন্তু স্পিনেই ধরা খেয়েছে। ইশ শোধি ৪ ওভারে দিয়েছে মাত্র ১৪ রান। মাঝের ওভারগুলোতে তো এভাবেই ফাঁদে পড়েছে অস্ট্রেলিয়া।
প্রথমে নিউজ্যিলান্ডের ব্যাটিং দেখে ভাবছিলাম, এটাও হাই স্কোরিং ম্যাচ হবে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া কামব্যাক করে এবং নিউজিল্যান্ডকে ১৪২ রানে বেধে ফেলে। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরাও হার্ডহিটার। ফলে এই রান ছিল তাদের জন্য খুবই সহজে তাড়া করার মত; কিন্তু নিউজিল্যান্ডের স্পিনারদের কাছেই মূলত হারতে হলো অস্ট্রেলিয়াকে। আর অসাধারণ নেতৃত্ব দিয়েছে কেন উইলিয়ামসন। বোলিং চেঞ্জ, ফিল্ডিং পরিবর্তণ- এসব সিদ্ধান্তগুলো এত সুন্দর করে নিয়েছে যে দেখে মুগ্ধ না হয়ে পারিনি।
এই জয়ের ফলে নিউজিল্যান্ড সেমির পথে অনেকটাই এগিয়ে গেলো। গ্রুপ থেকে সেমির জন্য বাকি দলটির লড়াইও বেশ জমিয়ে দিল তারা। সব মিলিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আজ একটি দুর্দান্ত দিন কাটালাম।
লেখক: বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক
আইএইচএস/আরএস