স্পিনই পার্থক্য গড়ে দেবে
অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা-ইংল্যান্ড ম্যাচ:
ইংল্যান্ডের জন্য মাস্ট উইন গেম। প্রথম ম্যাচে তারা হেরে গেছে। সুতরাং, সেমির আশা টিকিয়ে রাখতে হলে এই ম্যাচে জিততেই হবে; কিন্তু প্রতিপক্ষ তো আর সহজ নয়। দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী একটি দল। এই ম্যাচ দিয়ে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যাত্রা শুরু হচ্ছে তাদের। সুতরাং, জয়ের জন্য মাঠে নামবে তারাও।
গত বেশ কিছুদিন ধরে দক্ষিণ আফ্রিকা চমৎকার ক্রিকেট খেলছে। যদিও অস্ট্রেলিয়ার কাছে সিরিজ হেরেছে তারা। কিন্তু এই দলটির অধিকাংশ ক্রিকেটারই আইপিএল খেলার অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ। প্রায় সাত-আটজন। এ দিকটাতে একটু পিছিয়ে ইংল্যান্ড। কারণ, শুধুমাত্র ইয়ন মরগ্যানই আইপিএল খেলে থাকে। চমৎকার খেলা হবে বলে বিশ্বাস করি।
আরেকটা খেলা হবে নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার। ভারতের বিপক্ষে অসাধারণ ক্রিকেট খেলেছে নিউজিল্যান্ড। ওই ম্যাচে ফেভারিট ছিল ভারতই। নিজেদের হোম কন্ডিশনে তাদেরই ভালো কিছু করার কথা। কিন্তু ১২৬ করেও যেভাবে ওই উইকেটে নিউজিল্যান্ড কামব্যাক করেছিল, সেটাও ছিল এক কথায় অসাধারণ। ফলে ম্যাচটি হতে পারে হাই স্কোরিং।
আবার এই গ্রুপটি যেহেতু ডেথ গ্রুপ। ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ রয়েছে, অস্ট্রেলিয়াও এই ফরম্যাটে এখনো পর্যন্ত কোনো শিরোপা জেতেনি, সেহেতু তারা চাইবে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপের সূচনাটা ভালো করতে এবং ম্যাচ বাই ম্যাচ এগিয়ে যেতে। আবার বেশ কিছুদিন ধরে টি-টোয়েন্টিও ভালো খেলছে। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্বকাপ খেলতে এসেছে।
তবে কাজটা সহজ নয়। কারণ নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া দু’দলের ব্যাটসম্যানরাই হাই স্ট্রাইক রেট নিয়ে খেলে। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যনদের দিকে তাকালে দেখবেন ১৩০, ১৪০-এর ওপর স্ট্রাইক রেট। নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদেরও একই অবস্থা। এ কারণে আমার মনে হয়, খেলাটা হবে অসাধারণ একটি খেলা।
তবে আমার কেন যেন মনে হচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে নিউজিল্যান্ড একটু এগিয়ে থাকবে। এ কারণে যে, প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ড যে তিনটা স্পিনার খেলালো, তারাই ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। অস্ট্রেলিয়ার তো আবার স্পিনার নেই। এ জায়গাটায় নিউজিল্যান্ড এগিয়ে থাকবে।
যদি স্পিনিং উইকেট হয়, তাহলে স্পিনাররাই পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। যদিও কেমন উইকেট হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। ভারতের সবগুলো উইকেট সমান নয়। ধর্মশালায় সিমিং উইকেট। কলকাতায় একেবারে ফ্ল্যাট, ব্যাটিং উইকেট। আবার নাগপুরে স্পিনিং উইকেট। তবুও ভারতের উইকেট বলে স্পিনারদের ওপরই ফোকাসটা থাকবে বেশি।
চারটি বড় দল একইদিন মাঠে নামছে। নিশ্চয়ই ক্রিকেটপ্রেমীরা মুখিয়ে থাকবে চার দলের মুখোমুখি লড়াইটাকে উপভোগ করার জন্যে। এই চার দলের মধ্যে বিশেষ করে দর্শকরা উন্মুখ হয়ে থাকবে অস্ট্রেলিয়ার ওয়ার্নার, ফিঞ্চ, স্মিথ কিংবা ম্যাক্সওয়েলের খেলা দেখার জন্য। নিউজিল্যান্ডের গাপটিল, উইলিয়ামসন, মুনরো এবং এন্ডারসন।
দক্ষিণ আফ্রিকা-ইংল্যান্ড ম্যাচে প্রোটিয়াদের ডি ভিলিয়ার্স, আমলা, ডেভিড মিলার কিংবা ডু প্লেসিসদের খেলা দেখার জন্যও মুখিয়ে থাকবে সবাই। ইংল্যান্ডেরও তারকা রয়েছে। যেমন মরগ্যান, বাটলার, আলেক্স হেলস, জ্যাসন রয়দের মতো ব্যাটসম্যানরা রয়েছে। সুতরাং, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অন্যতম সেরা একটি দিন দেখার অপেক্ষায় থাকলো সবাই।
লেখক: বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক
আইএইচএস/বিএ