ম্যাচ জিতেছে শ্রীলঙ্কা মন জিতেছে আফগানিস্তান
আফগানিস্তান আর শ্রীলঙ্কার মাঝে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে মূলত অভিজ্ঞতা। এ অভিজ্ঞতার কাছেই হারতে হলো আফগানিস্তানকে। তিলকারত্নে দিলশান দীর্ঘদিন খেলছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। অনেক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতাসমৃদ্ধ। এটাই তিনি আফগানদের বিপক্ষে কাজে লাগিয়েছেন। ৫৬ বলে ৮৩ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে জয় উপহার দিয়েছেন লঙ্কানদের। এর ফলে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের শুভ সূচনাই হলো বলা যায়।
১৫৩ রান কিন্তু ছোট স্কোর নয়। নিশ্চিত ফাইটিং স্কোর। আফগানরা চেষ্টাও করেছিল। কিন্তু ওই এক অভিজ্ঞ দিলশানই তাদের স্বপ্ন ধুলিস্মাৎ করে দিল। দিলশান যদি দাঁড়াতে না পারতেন, তাহলে ম্যাচের চিত্র ভিন্নও হতে পারতো। কারণ, শ্রীলঙ্কা দলটি আগের মতো শক্তিশালী নয়। লাসিথ মালিঙ্গার মততো বোলারও নেই। অন্যদিকে আফগানরা তো নিয়মিতই চমক সৃষ্টি করে চলেছেন। জিম্বাবুয়ের সমমানের হয়ে উঠেছেন তারা। চোখ রাঙায় অন্য বড় শক্তিগুলোকেও। সুতরাং, এই ম্যাচটিতে যদি তারা জয় পেতো, তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকতো না।
আফগানিস্তান দলটি দিন দিন পরিণত হচ্ছে। ক্রিকেটে একটি প্রতিষ্ঠিত শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এই ম্যাচটির দিকেই তাকান। দেখবেন, প্রথম ১০ ওভারে তারা করতে পেরেছে মাত্র ৪৭ রান। কিন্তু পরের ১০ ওভারে যে ব্যাটিং করলো! এক কথায় চমৎকার, অসাধারণ! এই ১০ ওভারে রান করেছে ১০৬।
অর্থাৎ টি-টোয়েন্টিতে যে ধরনের ব্যাটিং করা উচিৎ, সে ব্যাটিংটাই তারা করেছে। প্রথম ১০ ওভারে ভালো খেলতে না পারলেও, পরের ১০ ওভারে তা পুষিয়ে দিয়েছে। বড় বড় দলগুলোই মূলত এই স্টাইলে খেলে। প্রথমে কম রান তুলতে পারলেও শেষ দিকে এসে পুরো খেলাটাকে ব্যালেন্স করে দেয়। আফগানরাও যে বড় দল হয়ে উঠছে, এটাও একটা প্রমাণ।
এ ক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কার বোলিং নিয়ে অবশ্য সমালোচনা করার সুযোগ নেই। আমি বলবো যে, লঙ্কানদের বোলিং সব মিলিয়ে ভালো হয়েছে। প্রথম ১০ ওভার তো অসাধারণ বোলিং করেছে। শেষ ১০ ওভারে হয়তো ভালো করতে পারেনি। তবে আফগান ব্যাটসম্যানরা ভালো ব্যাট করেছে।
যেভাবে আফগানিস্তান খেলেছে, তাতে তারা হয়তো জিততে পারেনি, তবে দর্শকদের মন জিতে নিয়েছে। সবারই প্রশংসা কুড়িয়েছে তারা। বিশেষ করে আফগান অধিনায়ক স্টানিকজাই যেভাবে ব্যাট করেছে, সবাই তো তার ব্যাটিং দেখে মুগ্ধ। সামিউল্লাহ সেনওয়ারিও বেশ পাওয়ার শট খেলেছে। মোট কথা, শ্রীলঙ্কা হয়তো ম্যাচ জিতেছে; কিন্তু মন জিতে নিয়েছে আফগানিস্তানই।
লেখক: বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক
আইএইচএস/বিএ