সাব্বির-সাকিব নৈপুন্যে ১৪৭ রানের লড়াকু ইনিংস
প্রথম দুই ওভারে ভয়ই পাইয়ে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার। শ্রীলংকার দুই বোলার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ আর নুয়ান কুলাসেকেরার বলে কোন রান না করেই আউট হয়ে গেলেন মিঠুন আর সৌম্য। শঙ্কার কালো মেঘ জমতে শুরু করেছিল ঈষাণ কোনে। সেটাকে আরও প্রলম্বিত করণে মুশফিক। দলীয় ২৬ রানের সময় অযথা বোকার মত রানআউট হয়ে।
কিন্তু সাব্বির রহমান আর সাকিব আল হাসানের ব্যাটে কালোমেঘ সরিয়ে সুর্যোদয় হতে শুরু করে। যা শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের সামনে জয়ের প্রবল সম্ভাবনাও জাগিয়ে তুললো। ৫৪ বলে সাব্বিরের ৮০ রানের টর্নেডো ইনিংস আর ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিয়ে সাকিবের ৩৪ বলে ৩২ রানের দায়িত্বশীল ইনিংসে ভর করেই শ্রীলংকার বিপক্ষে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪৭ রানের চ্যালেঞ্জ দাঁড় করিয়ে দিল টিম বাংলাদেশ।
লংকানদের বিপক্ষে অবশ্যেই জয়ী ম্যাচ। টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে হলে এই ম্যাচে জিততেই হবে। এমন সমীকরণকে সামনে রেখে লংকানদের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। যদিও ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। শ্রীলংকার পরিবর্তিত অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজের করা প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই উইকেট হারান ওপেনার মোহাম্মদ মিঠুন। বাংলাদেশের রানের খাতা তখনও শূন্য।
ভারতের বিপক্ষেও বেশ বাজে ব্যাটিং করেছিলেন মিঠুন। তবুও তার ওপর আস্থা রেখেছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। দ্বিতীয় ম্যাচে আরব আমিরাতের বিপক্ষে যদিও লাইফ পেয়ে ৪৭ রান করেছিলেন তিনি। তবে, আসল পরীক্ষার মুখোমুখি হলেন আজ, শ্রীলংকার বিপক্ষে। যেখানে শুরুতেই ধরে খেলার প্রয়োজন ছিল, সেখানে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই ম্যাথিউজের লেগ বিফোরের ফাঁদে পা দিলেন তিনি।
মিঠুনের বিদায়ের পর দ্বিতীয় উইকেট জুটিও টিকলো না। দ্বিতীয় ওভারেই ভেঙ্গে গেলো দ্বিতীয় উইকেট জুটি। দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে নুয়ান কুলাসেকারার বলে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজের হাতে সহজ ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে গেলেন সৌম্য সরকার। দলীয় রান তখন মাত্র ২।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা দুই ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমান এবং মুশফিকুর রহিমের। কিন্তু খুব বেশি সময়ের জন্য নয়। ২০ বলে ২৪ রানের ছোট একটি জুটি গড়ে বোকার মত আউট হয়ে গেলেন মুশফিক। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজের বলে একেবারে ফিল্ডারের হাতে বল রেখে রানের জন্য দৌড় দিলেন মুশি। সুতরাং, সহজ রানআউট।
তবে চতুর্থ উইকেট জুটিতে সাকিব আল হাসান আর সাব্বির রহমান মিলে দারুন একটি জুটি গড়ে বাংলাদেশকে লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনলেন। ১১.১ ওভার ব্যাট করে ৮২ রানের জুটি গড়েন তারা দু’জন। ৩৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন সাব্বির। এরপর ৫৪ বলে গিয়ে আউট হন ৮০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে। ১০টি বাউন্ডারির সঙ্গে ছিল ৩টি ছক্কার মার।
সাব্বির যখন আউট হন দলীয় রান তখন ১০৮। সাব্বিরের সঙ্গে জুটি গড়ে ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিলেন সাকিব আল হাসান। ৩৪ বলে ৩২ রান করলেও, এটা তাকে আত্মবিশ্বাস যোগাবে, সন্দেহ নেই। দীর্ঘদিন ধরে চলা তার অফ ফর্ম বেশ ভোগাচ্ছিল দলকেও। অবশেষে তার রানে ফেরায় স্বস্তি মিলেছে সবার মাঝেই। সাকিবের ইনিংসটি সাজানো ছিল ৩টি বাউন্ডারিতে।
৬ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে দারুণ একটা ঝড় তুলেছিলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও। তার ১২ বলে অপরাজিত ২৩ রানের ইনিংসটির ওপর ভর করেই ১৪৭ রানের দুর্দান্ত স্কোর গড়ে তোলে বাংলাদেশ। যদিও শেষ দিকে নুরুল হাসান সোহান এবং মাশরাফি আউট হয়েছিলেন ২ রান করে।
লংকান বোলারদের মধ্যে ৩ উইকেট নেন দুষ্মন্তে চিমারা। ১টি করে উইকেট নেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ এবং নুয়ান কুলাসেকারা। ২টি হলো রানআউট।
আইএইচএস/পিআর