জয়ের জন্যই মাঠে নামবে বাংলাদেশ
ওয়ানডে ক্রিকেটে সারাবিশ্বে এখন প্রতিষ্ঠিত শক্তি বাংলাদেশ। পাশাপাশি টেস্ট ক্রিকেটটাও খারাপ খেলছে না। তবে সে তুলনায় টি-টোয়েন্টিতে অনেকটাই পিছিয়ে টাইগাররা। অথচ ক্রিকেট বোদ্ধাদের ধারণা, ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতম সংস্করণেই সবচেয়ে ভালো খেলবে বাংলাদেশ। এবার প্রথমবারের মত টি-টোয়েন্টি সংস্করণে এশিয়াকাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ সংস্করণে অপেক্ষাকৃত দুর্বল হলেও শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে জয়ের উদ্দেশ্যেই মাঠে নামবে টিম বাংলাদেশ।
এশিয়া ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে গত কয়েকমাস ধরেই নিবিড় অনুশীলন করছে টাইগাররা। গত জানুয়ারিতে খুলনায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চার ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলে বাংলাদেশ। সিরিজ শেষে খুলনাতেই অনুশীলন ক্যাম্প করে। প্রথম দফা খুলনায় অনুশীলন করার পর দ্বিতীয় দফায় চট্টগ্রামে অনুশীলন করে মাশরাফিরা। টি-টোয়েন্টি অনেকটা ধুম-ধাড়াক্কা ব্যাটিংয়ের খেলা হলেও জয়ের জন্য চাই দলগত প্রচেষ্টা। আর দলগতভাবে খেলার উদ্দেশ্যেই দিনের পর দিন নেটে ঘাম ঝরাচ্ছেন মাশরাফি-মাহমুদউল্লাহরা।
তবে ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে ইতিহাস বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলছে না। টি-টোয়েন্টি পরিসংখ্যান ভালো নয় তাদের। ৫০টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে জয় মাত্র ১৫টিতে, আর পক্ষান্তরে হার ৩৪টি। ভালো নয় ভারতের বিপক্ষে খেলার ফলও। এর আগে ২০০৯ ও ২০১৪ সালে আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের মোকাবেলা করেছিল বাংলাদেশ। দুইবারই ধোনিবাহিনীর বিপক্ষে সহজ হার মানতে হয় টাইগারদের।
সাম্প্রতিক সময়ের পারফরমেন্সেও অনেক এগিয়ে ভারত। ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতম সংস্করণে দুর্দান্ত খেলছে তারা। কিছুদিন আগেই অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে তিন ম্যাচের সিরিজে স্বাগতিকদেরই হোয়াইটওয়াশ করেছে টিম ইন্ডিয়া। তাই আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থেকেই মাঠে নামবে তারা। অপরদিকে সর্বশেষ তিনটি টি-টোয়েন্টি সিরিজের কোনটিতেই জিততে পারেনি বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজের হোয়াইটওয়াশ হবার পর দুর্বল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও দুটি সিরিজেই জয়হীন থাকে টাইগাররা।
তবে পরিসংখ্যান যাই বলুক আত্মবিশ্বাসের কমতি নেই টাইগারদের। মঙ্গলবার ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানালেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি। প্রতিপক্ষ হিসেবে ভারত কঠিন হলেও অধিনায়ক আশাবাদী ভালো কিছুই করবে তার দল। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এ মুহুর্তে আমরা একটা জিনিস নিয়ে ভাবতে পারি, ব্যর্থতা নিয়ে না ভেবে ক্রিকেট খেলা। টি-টোয়েন্টিতে পারিনি এটা সত্যি কথা। পারিনি সব সময় ভেবে খেলতে থাকলে কখনোই পারব না। আমরা যেটা চেষ্টা করছি ব্যর্থতা নিয়ে না ভাবা। যেটা আমরা ওয়ানডেতে করে আসছি। আমরা যদি এটা করতে পারি অবশ্যই ভালো করবো। এটা হতে পারে এখন থেকেই। আবার কিছুদিন পরও হতে পারে। এ মুহুর্তে যেটা দরকার মাঠে কি হবে, ব্যর্থ হলে কি হবে এগুলো না ভেবে খেলা।’
দলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান তামিম ইকবালকে পাচ্ছে না বাংলাদেশ। সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর পাশে থাকতে ছুটিতে ব্যাংককে আছেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা তামিম। তার পরিবর্তে ওপেনিংয়ে সুযোগ পেয়েছেন ইমরুল কায়েস। সৌম্যর সঙ্গি হিসাবে নামতে পারেন নবাগত মোহাম্মদ মিঠুনও। বাংলাদেশের দুশ্চিন্তা টি-টোয়েন্টির সবচেয়ে বড় নাম সাকিব আল হাসানের ফর্ম নিয়েও। ফর্মে থাকলে কতটা ভয়ংকর হতে পারেন তিনি, তা এর আগে বহুবার প্রমাণ করেছেন। তবে ভারত বধের মূল লাগাম থাকবে হালের নতুন সেনসেশন মুস্তাফিজুর রহমানের হাতে। ভারতের বিপক্ষে সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজে এ তরুণ পেসারের আঘাতেই কুপোকাত হয়েছিল ধোনি-কোহলিরা।
তবে মুস্তাফিজকে নিয়ে আলাদা পরিকল্পনা করেই ঢাকায় পা রেখেছে ভারতীয় শিবির। আগেরবারের জুজু এখনো কাটাতে পারেননি বলে অকপটেই স্বীকার করেছেন দলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি। মুস্তাফিজকে নিয়ে বলেন, ‘মুস্তাফিজ সত্যিই খুব ভালো করেছে। আমাদের বিপক্ষে খেলার সময় থেকে গত এক বছরে বাংলাদেশের হয়ে দারুণ বোলিং করেছে সে। ১৯ বছর বয়সী একটা ছেলেকে এভাবে বোলিং করতে দেখা ছিল রোমাঞ্চকর। ১৪০ কিমির আশেপাশে গতির সঙ্গে স্লোয়ার বল করছিল, আমাদের জন্যও সেটি ছিল ব্যতিক্রমী এক অভিজ্ঞতা। নতুন বলেও খুব ভালো স্লোয়ার ও কাটার করছিল। মুস্তাফিজকে কৃতিত্ব দিতেই হবে। দারুণ বোলিং করে আসছে সে। অবশ্যই এই টুর্নামেন্টেও বাংলাদেশের জন্য সে হতে যাচ্ছে বড় একটি ফ্যাক্টর।’
আরটি/আইএইচএস/আরআইপি