এই আফ্রিদি, সেই আফ্রিদি
মোহাম্মদ নওয়াজ। পাকিস্তানের এই ক্রিকেটারটি যখন জন্ম গ্রহণ করেছিলেন, তার দুই বছর পরই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক শহিদ আফ্রিদির। অভিষেকেই যে অবিস্মরনীয় কীর্তি গড়েছিলেন আফ্রিদি, তা মোহাম্মদ নওয়াজের দেখার কথা নয়। ৩৭ বলে গড়া সেঞ্চুরির সেই রেকর্ডের দিন তার বয়স তো তখন মাত্র ২ বছর! সেই মোহাম্মদ নওয়াজই এখন ব্যাট হাতে খেলতে নামেন আফ্রিদির বিপক্ষে। সেদিনের দু’বছরের শিশু এখন পরিণত যুবক। আর আফ্রিদির ক্যারিয়ার প্রায় শেষ হওয়ার পথে। কিন্তু এতটা দীর্ঘ সময় পর এসেও আফ্রিদির সেই তারুণ্যের তেজটা ভালোভাবেই টের পেলেন মোহাম্মদ নওয়াজ।
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পিএসএলে (পাকিস্তান সুপার লিগ) রোববার রাতে কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সের হয়ে খেলতে নেমেছিলেন অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নওয়াজ। প্রতিপক্ষ আফ্রিদির নেতৃত্বাধীন পেশোয়ার জালমি। পিএসএলে আবার শীর্ষ স্থান নিয়ে লড়াইয়ে থাকা দু’দলের ছিল এটা মর্যাদা রক্ষার ম্যাচও।
এমন ম্যাচে এসেই কি না প্রায় ৩৬ বছর বয়সী আফ্রিদির বুড়ো হাঁড়ের ভেলকি দেখলো মোহাম্মদ নওয়াজরা। টি-টোয়েন্টিতে বল করার সুযোগ মাত্র ৪ ওভার। ধুম-ধাড়াক্কা ফরম্যাটের এই ক্রিকেটে চার ওভারে বোলারের ওপর রীতিমত স্ট্রিমরোলার চালিয়ে দেয় ব্যাটসম্যানরা। এই ফরম্যাটে বলতে গেলে বোলাররা অসহায়। যত বড় বোলারই হোক, মার খেতে হবেই! কোন রেহাই নেই।
কিন্তু কোন কোন সময় ব্যাটসম্যানদের ধ্বংসাত্মক মানসকিতাকে উল্টো ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেন কোন কোন বোলার। তাদের মধ্যে আফ্রিদি বুঝি এমন একজন বোলার! সোমবার রাতেই শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তেমন বিধ্বংসী এক মানসিকতার পরিচয় দিলেন পেশোয়ার জালমির অধিনায়ক। ৪ ওভারে রান দিলেন মাত্র ৭টি। আর উইকেট নিয়েছেন ৫টি। টি-টোয়েন্টিতে এমন বিধ্বংসী বোলিং কে কবে কোথায় দেখেছে!
ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে আফ্রিদি কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সের বিপক্ষে খেলতে নেমেছিলেন ২০০তম ম্যাচ। টি-টোয়েন্টিতে এতগুলো ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়াও তো কারও পক্ষে সম্ভব নয়। আর আফ্রিদি কি না ডাবল সেঞ্চুরির এই দিনটাকে স্মরণীয় করে রাখলেন ৪ ওভারে ১ মেডেনসহ মাত্র ৭ রানে ৫ উইকেট নিয়ে। কোয়েটার বিপক্ষে ইনিংসের ৬ষ্ঠ ওভারে বল করতে আসেন তিনি। প্রথম বলটা ঠেকালেন আকবর-উর রহমান। পরের বলেই তুলে নিলেন উইকেট। দ্বিতীয় ওভারে আসাদ শফিককে তুলে নিলেন তিনি। নিজের তৃতীয় ওভারে আফ্রিদি হানলেন জোড়া আঘাত। দলের ১২তম এবং নিজের চতুর্থ ওভারে আবারও জোড়া আঘাত। সঙ্গে মেডেন। বোলিং ফিগার দাঁড়াল ৪-১-৭-৫!
তামিম ইকবালকে ছাড়াই কোয়েটার বিপক্ষে খেলতে নেমেছিল পেশোয়ার জালমি। সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে সঙ্গ দিতে তামিম ব্যাংকক চলে যাওয়ায় খেলতে পারেননি তিনি। তবে দলের সেরা পারফরমারকে ছাড়াও জয়ের ধারা অব্যাহ থেকেছে পেশোয়ারের। কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সকে ৮ উইকেটে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে উঠে গেছে পেশোয়ার। কোয়েটার ছুড়ে দেয়া ১২৯ রানের চ্যালেঞ্জ ১৮.৪ ওভারে মাত্র ২ উইকেট হারিয়েই পার হয়ে যায় পেশোয়ার জালমি। তামিমের অনুপস্থিতিতে ব্যাটিং অর্ডারে সামনে আসা ডেভিড মালান করেন ৬০ রান। মোহাম্মদ হাফিজ করেন ৩৬ রান।
আইএইচএস/আরআইপি