ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

জয় দিয়ে বছর শুরু মাশরাফিদের

প্রকাশিত: ১২:২১ পিএম, ১৫ জানুয়ারি ২০১৬

টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে টিম বাংলাদেশের সামনে পাত্তাই পেলো না জিম্বাবুয়ে। সফরকারীদের ছুড়ে দেয়া ১৬৩ রানের চ্যালেঞ্জও বাংলাদেশ অনায়াসে টপকে গেলো ৮ বল হাতে রেখে। চার ম্যাটের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে ৪ উইকেটে হারিয়ে শুভ সূচনা করলো বাংলাদেশ। সে সঙ্গে জয় দিয়েই ২০১৬ সালটা শুরু হলো টিম মাশরাফির।

মাশরাফি, সাকিবরা সিরিজ শুরুর আগে থেকেই বলে আসছিলেন, জয় দিয়ে বছরটা শুরু করতে চান তারা। ২০১৫ সালের শেষ ম্যাচটিতে কিন্তু এই জিম্বাবুয়ের কাছে হেরেছিল বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টিতে বড় দল হয়ে উঠতে না পারার কারণেই সম্ভবত এমন নড়বড়ে পারফরম্যান্স দেখা যায়। তবে, মাশরাফিদের প্রত্যয় ছিল ২০১৬ সালটা জয় দিয়ে শুরু করার। অবশেষে সে প্রত্যয়টাই মাঠে অনুধিত করলো মাশরাফিরা। ১৬৩ রানের চ্যালেঞ্জের সামনে টলে না গিয়ে, আধিপত্য বিস্তার করেই লড়াই করেছে বাংলাদেশ দল এবং সাব্বির, মুশফিক, তামিম, সাকিবদের ব্যাটে ভর করে দারুন একটি জয় তুলে নিল টাইগাররা।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের সামনে ১৬৩ রানের বিশাল চ্যালেঞ্চ ছুড়ে দিয়েছিল সফরকারী জিম্বাবুয়ে। হ্যামিল্টন মাসাকাদজার দুর্দান্ত ৭৯ রানের ইনিংসের সৌজন্যে বড় স্কোরের সন্ধান পায় জিম্বাবুয়ে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বেশ সতর্ক সূচনা করেছিল বাংলাদেশ দলের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল এবং সৌম্য সরকার। যদিও তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন সৌম্য সরকার। চতুর্থ ওভারে দ্রুত রান নিতে গিয়ে রানআউট হয়ে গেলেন ওপেনার সৌম্য।

ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ যতটা উচ্চতায় পৌঁছেছে, ততটা টি-টোয়েন্টিতে মোটেও পারেনি। যে কারণে, গত বছরের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচটিতে হেরেছিল বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ এই জিম্বাবুয়ে এবং ফরম্যাটটাও টি-টোয়েন্টি। সুতরাং, বাংলাদেশের সতর্ক হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। তারওপর যখন লক্ষ্যমাত্রাটাও বেশ চ্যালেঞ্জিং।

১৬৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারে ওয়েলিংটন মাসাকাদজার ওভার থেকে মাত্র ৭ রান নিয়েছেন তামিম আর সৌম্য। দ্বিতীয় ওভারে আরও কম। মাত্র ৩ রান। অবশ্য বোলারটাও ছিলেন বাংলাদেশের ত্রাস- ব্রায়ান ভিতোরি। এরপর তৃতীয় ওভারে এসে সিকান্দার রাজার ওপর কিছুটা চড়াও হতে পেরেছেন তামিম। একটি ছক্কা এবং একটি বাউন্ডারি মারেন তিনি। চতুর্থ ওভারে এসেই প্রথম উইকেটের পতন ঘটলো রানআউটের কারণে। ৭ রান করে আউট হয়ে যান সৌম্য সরকার।

সৌম্য আউট হওয়ার পর বড় রান তাড়া করার জন্যই হয়তো ওয়ানডাউনে নামানো হয়েছিল সাব্বির রহমানকে। বিপিএলে বরিশাল বুলসের হয়ে শেষ দিকে যেভাবে তাণ্ডব বইয়ে দিতে পেরেছিলেন সাব্বির, তাতেকরে তার ওপর আস্থা রেখেছেন কোচ এবং অধিনায়ক। মাঠে নেমে অবশ্য তামিম ইকবালকে সঙ্গটা দিতে চাইলেন এই তরুণ ব্যাটসম্যান। একপ্রান্তে তিনি ধরে খেললেও, অপরাপ্রান্তে তামিম ছিলেন সরব। ২৪ বলে ৩টি বাউন্ডারি আর একটি ছক্কায় ২৯ রানও করে ফেলেছিলেন তিনি।

কিন্তু ৭ম ওভারের চতুর্থ বলেই উইকেট হারিয়ে বসলেন তামিম ইকবাল। গ্রায়েম ক্রেমারের প্রথম ওভার ছিল ওটা। তাকে লং অফের ওপর দিয়ে খেলতে গিয়েছিলেন বাংলাদেশ দলের ওপেনার; কিন্তু বল ব্যাটে লেগে উঠে যায় অনেক ওপরে। ফলে, অনেক দুর দৌড়ে এস সেটা তালুবন্দী করে নিতে মোটেও কষ্ট করতে হয়নি সিবান্দার। তামিম আউট হওয়ার পর টু ডাউনে ব্যাট করতে নেমেছেন শুভাগত হোম।

সাব্বির রহমানের সঙ্গে শুভাগত হোমের জুটিটা দীর্ঘ হলো না। মাত্র ১৯ রানের। টি-টোয়েন্টিতে অভিষেকের ক্যাপ মাথায় উঠলেও নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারলেন না শুভাগত। ৭ বলে মাত্র ৬ রান করেই বোল্ড হয়ে গেলেন শন উইলিয়মসের বলে। দলীয় ৭৪ রানে পড়লো তৃতীয় উইকেট।

তিন উইকেটের পতন ঘটলেও বাংলাদেশের আশার প্রদীপ জ্বালিয়ে রেখেছিলন সাব্বির রহমান। মোটামুটি বিধ্বংসী ব্যাটিংই করে যাচ্ছিলেন তিনি। ৩৬ বলে করে ফেলেছেন ৪৬ রান। ৪টি বাউন্ডারির সঙ্গে ১টি ছক্কার মার ছিল তার ইনিংসে। কিন্তু দুর্ভাগ্য, ১৫তম ওভারে গ্রায়েম ক্রেমারের দ্বিতীয় বলে ছক্কা মারলেও, তৃতীয় বলে আবারও ছক্কা মারতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। জায়গায় দাঁড়িয়ে ক্যাচটি ধরতে মোটেও কষ্ট করতে হয়নি ম্যালকম ওয়ালারকে।

সাব্বির আউট হয়ে যাওয়ার পর মুশফিকের সঙ্গে জুটি বাধেন সাকিব আল হাসান। তবে মুশফিকুর রহিম বেশিক্ষণ টিকলেন না। ওয়েলিংটন মাসাকাদজার বলে ছক্কা মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে সিকান্দার রাজার হাতে ক্যাচ তুলে দেন মুশফিক। ১৯ বলে ২৬ রান করে আউট হয়ে যান তিনি। সাকিবের সঙ্গে জুটি বাধতে ক্রিজে নামেন মাহমুদউল্লাহ। লুক জংউইকে ছক্কা মেরে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন তিনি। কিন্তু দুর্ভাগ্য, লুক জংউইর বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে গেলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৩ বলে ৭ রান করেন তিনি।

মাহমুদুল্লাহ যখন আউট হলেন, তখনও বাংলাদেশের প্রয়োজন তিন ওভারে ২৭ রান। উইকেটে নির্ভরতার প্রতীক সাকিব আল হাসান এবং অভিষিক্ত কাজী নুরুল হাসান সোহান। সাকিব আর সোহান মিলে ১৮ বলে ২৮ রানকে শঙ্কায় পরিণত করলেন না। বরং, উল্টো অনায়াসেই আর মাত্র ১০ বল খেলে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দেন বাংলাদেশকে। ১৩ বলে ২০ রানে অপরাজিত থাকলেন সাকিব এবং নুরুল হাসান সোহান অপরাজিত থাকলেন ৭ রানে।

জিম্বাবুয়ের পক্ষে গ্রায়েম ক্রেমার নেন সর্বোচ্চ ২ উইকেট। ১টি করে উইকেট নেন শন উইলিয়ামস, লুক জংউই এবং হ্যামিল্টন মাসাকাদজা নেন ১টি করে উইকেট। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে একই মাঠে, রোববার বিকাল ৩টায়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
জিম্বাবুয়ে: ১৬৩/৭, ২০ ওভার (মাসাকাদজা ৭৯, সিবান্দা ৪৬, ম্যালকম ওয়ালার ১৪, সিকান্দার রাজা ৬, চিগুম্বুরা ৩, পিটার মুর ৭*; মুস্তাফিজ ২/১৮, আল আমিন ২/২৪, সাকিব ১/৪৫)।
বাংলাদেশ: ১৬৬/৬, ১৮.৪ ওভার (সাব্বির রহমান ৪৬, তামিম ২৯, মুশফিক ২৬, সাকিব ২০*, নুরুল হাসান ৭*, রিয়াদ ৭, সৌম্য ৭, শুভাগত ৬; গ্রায়েম ক্রেমার ২/৩২, উইলিয়ামস ১/২২, জংউই ১/৪৫, মাসাকাদজা ১/২৫)।
ফল: বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: হ্যামিল্টন মাসাকাদজা।
 
আইএইচএস/এমএস

আরও পড়ুন