ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

সারাবছর নানা আয়োজনে ব্যস্ত ছিল বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গন

ইমাম হোসাইন সোহেল | প্রকাশিত: ০৪:৩১ পিএম, ৩১ ডিসেম্বর ২০২১

২০২১ সাল ছিল দুই কারণে স্পেশাল। একদিকে মুজিব শতবর্ষ উদযাপন, অন্যদিকে ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। করোনার কারণে ২০২০ সালে অন্য অনেক কিছুর মত ক্রীড়াঙ্গন ছিল অনেকটাই স্থবির। ২০২১ সালে এসে করোনার প্রকোপ বাড়লেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে সারা বছরই নানা আয়োজনে ব্যস্ত ছিল বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গন।

ক্রিকেট-ফুটবলের নানা আয়োজনের পাশাপাশি অলিম্পিক গেমস, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ গেমস, এশিয়ান হকি চ্যাম্পিয়নশিপ, বিশ্বকাপ আরচারি- সর্বক্ষেত্রেই ২০২১ ছিল ব্যস্ততম একটি বছর। ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সরব পদচারণা ছিল নানা ডিসিপ্লিনে বাংলাদেশের অ্যাথলেটদের।

ফুটবল এবং ক্রিকেটের বাইরে ২০২১ সালে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের নানা আয়োজন নিয়ে তুলে ধরা হলো ধারাবাহিক আলোচনা

হকি

শুরুতেই হকি। ক্রিকেট, ফুটবলের পর নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের জনপ্রিয় খেলা হকি। এবার এশিয়ান হকির সবচেয়ে বড় আসর ‘এশিয়ান হকি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি’র আয়োজক ছিল বাংলাদেশ। শেষ মুহূর্তে করোনার কারণে মালয়েশিয়া নাম প্রত্যাহার করলেও বাকি ৫টি দল নিয়েই ছিল এবারের সফল আয়োজন। এছাড়া প্রিমিয়ার হকি লিগসহ এ বছর হকির ছিল অনেকগুলো আয়োজন।

এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির নতুন চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ কোরিয়া

পাকিস্তানকে হারিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া এবং ভারতকে হারিয়ে জাপান ফাইনালে ওঠার পরই নিশ্চিত হয়ে যায় এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হকি এবার পেতে যাচ্ছে নতুন চ্যাম্পিয়ন। দেখার ছিল নতুন চ্যাম্পিয়ন কারা হয়। আগে কখনো ফাইনালে উঠতে না পারা দক্ষিণ কোরিয়া নাকি দ্বিতীয়বার ফাইনালে ওঠা জাপান। শেষ পর্যন্ত ঢাকা থেকে ট্রফি নিয়ে গেলো দক্ষিণ কোরিয়া।

প্রথমবার ফাইনালে উঠেই বাজিমাত করেছে তারা। ২২ ডিসেম্বর, বুধবার মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টের ফাইনালে কোরিয়া শ্যুটআউটে ৪-২ গোলে হারিয়েছে জাপানকে। নির্ধারিত ৭০ মিনিটের খেলা শেষ হয়েছিল ৩-৩ গোলে। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ৩-২ গোলে এগিয়ে জাপান।

ইলেক্ট্রিক ঘড়ি দেখাচ্ছিল আর খেলা বাকি ১ সেকেন্ড। ঠিক তখনই পেনাল্টি কর্নার পেয়ে যায় দক্ষিণ কোরিয়া। সে পেনাল্টি কর্নারে গোল করে ম্যাচটিকে নাটকীয়ভাবে কোরিয়া নিয়ে যায় পেনাল্টি শ্যুটআউটে। ভাগ্য নির্ধারণী ওই পর্বে কোরিয়া করে ৪ গোল, জাপান ২টি।

প্রিমিয়ার হকিতে চ্যাম্পিয়ন মেরিনার ইয়াংস

প্রায় সাড়ে তিন বছর পর মাঠে গড়ায় প্রিমিয়ার হকি লিগ। ২০১৮ সালে নানা তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে এবারের প্রিমিয়ার লিগ নিয়ে ছিল সংশয়। শেষ পর্যন্ত সব দলের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণে শেষ হয় প্রিমিয়ার লিগ হকি। লিগের শেষ ম্যাচে মোহামেডানকে হারিয়েই প্রিমিয়ার হকি লিগের চ্যাম্পিয়নের মুকুট পরে নেয় মেরিনার ইয়াংস ক্লাব।

শেষ ম্যাচের আগের ম্যাচে আবাহনীর কাছে একেবারে শেষ মিনিটে দুই গোল হজম না করলে শিরোপা নিশ্চিত হতো তাদের। কিন্তু উত্তেজনাটা শেষ ম্যাচ পর্যন্ত ধরে রাখে মেরিনার। শেষ ম্যাচে মোহামেডানকে ৩-২ গোলে হারায় মেরিনার। ২০১৬ সালের পর দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়নশিপের মুকুট পরলো তারা। ১৫ ম্যাচে ১৪ জয়ে মেরিনারের অর্জন ছিল ৪২ পয়েন্ট।

ক্লাব কাপ হকিতেও চ্যাম্পিয়ন মেরিনার
প্রায় ৪০ মাস পর ক্লাবকাপ দিয়ে মাঠে গড়ায় ঘরোয়া হকি। টুর্নামেন্টের ফাইনালে আবাহনীকে হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয় আরমাবাগের দল মেরিনার ইয়াংস। আবাহনী-মেরিনার ফাইনালটি ছিল জমজমাট।

হ্যাটট্রিক শিরোপার সামনে দাঁড়িয়েছিলো আবাহনী, মেরিনারের ছিলো প্রথম চ্যাম্পিয়ন হওয়ার হাতছানি। কিন্তু মওলানা ভাসানি হকি স্টেডিয়ামে ক্লাব কাপ হকির ফাইনালে আবাহনীকে ৩-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নশিপের মুকুট পরে নেয় মেরিনার ইয়াং ক্লাব।

নারী হকিতে বাড়ছে অংশগ্রহণ

নারী ফুটবল এবং ক্রিকেটের মত হকিতেও নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। এবার যেমন গত আগস্টে মওলানা হকি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় নারী হকি খেলোয়াড়দের অনুশীলন ক্যাম্প। যেখানে দুই দলে ভাগ করে ৫ ম্যাচের সিরিজও আয়োজন করা হয়।

এর আগে বাছাইকৃত ৪৫জন নারী খেলোয়াড়কে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। সেখান থেকে তৈরি করা হয় দুটি একাদশ। সাবেক দুই সাধারণ সম্পাদক শামসুল বারী এবং মাহমুদুর রহমান মোমিনের নামে এই দুই একাদশের মধ্যে অনুষ্ঠিত ৫ ম্যাচের সিরিজের সবগুলোতেই জয়লাভ করে মাহমুদুলর রহমান মোমিন একাশ। এই প্রশিক্ষণ ক্যাম্প এবং সিরিজ আয়োজনের মূল লক্ষ্য জাতীয় দল গঠন করা।

এছাড়া গত মার্চে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন আয়োজিত মহিলা ডেভেলপমেন্ট স্বাধীনতা কাপ হকিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি)।

বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ গেমসের চ্যাম্পিয়ন আনসার

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া আসর, বাংলাদেশ গেমস। ২০১৩ সালের পর দীর্ঘ আট বছর বিরতি দিয়ে অনুষ্ঠিত হয় এই গেমসের নবম আসর। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে এবারের গেমসের নাম দেয়া হয় বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ গেমস। ২০২০ সালের করোনার কারণে ১ থেকে ১০ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল গেমসটি। কিন্তু করোনার কারণে পিছিয়ে যায়। অবশেষে ২০২১ সালের ১ এপ্রিল ভার্চুয়াল কনফারেন্সের মাধ্যমে গেমসের উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এবার ছিল এই গেমসের নবম আসর। ১০ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জেলায় মোট ২৯টি ভেন্যুতে ৩১টি ডিসিপ্লিনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ৩৮৩টি স্বর্ণসহ মোট ১২৭১টি পদকের জন্য প্রতিযোগীতায় অবতীর্ণ হয় ৫৩০০জন অ্যাথলেট। যদিও করোনার কারণে অ্যাথলেট সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়েছিল। প্রথমে অ্যাথলেট সংখ্যা ছিল মোট ১০ হাজার ৬০০জন। গেমসের জন্য মোট বাজেট ছিল ২০ কোটি টাকা।

১৩৩টি স্বর্ণ, ৮০টি রৌপ্য এবং ৫৭টি ব্রোঞ্জসহ মোট ২৭০টি পদক জিতে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ গেমসে দলগত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ আনসার। সার্ভিসেস দলটি টানা দ্বিতীয়বার এবং সর্বমোট চারবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ১১৫টি স্বর্ণ, ১০০টি রৌপ্য এবং ৮৫টি ব্রোঞ্জসহ মোট ৩০০টি পদক জয় করে হয়েছে দলগত রানারআপ। ৬৬টি স্বর্ণ, ৪৩টি রৌপ্য এবং ২৯টি ব্রোঞ্জসহ ১৩৮টি পদক পেয়ে তৃতীয় হয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।

এই আসরে হয়েছে মোট ৬১টি জাতীয় রেকর্ড। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৩৫টি রেকর্ড হয়েছে কেবল ভারোত্তোলনেই। সর্বোচ্চ ৮টি স্বর্ণ জিতে ব্যাক্তিগত সেরা সাফল্য দেখান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাঁতারু সোনিয়ার আক্তার টুম্পা। ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডের দ্রুততম মানব-মানবী হয়েছেন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর দুই অ্যাথলেট মোহাম্মদ ইসমাইল ও শিরিন আক্তার।

টোকিও অলিম্পিকে বাংলাদেশ

করোনার কারণে এক বছর বিরতি গিয়ে জাপানের রাজধানী টোকিওতে অনুষ্ঠিত হলো দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ অলিম্পিকের ৩২তম আসর। ২৩ জুলাই শুরু হওয়া এই আসরটি শেষ হলো ৮ আগস্ট। করোনার জন্য সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যবিধি মেনে আয়োজন করা হয় এই গেমসটি।

বাংলাদেশ থেকে টোকিও অলিম্পিকে চার ডিসিপ্লিনে অংশ নেয়ার সুযোগ পায় ৬জন ক্রীড়াবীদ। তারা হলেন আরচার রোমান সানা ও দিয়া সিদ্দিকী, সাঁতারু আরিফুল ইসলাম এবং জুনায়না আহমেদ, শ্যুটার আবদুল্লা হেল বাকী এবং অ্যাথলেট জহির রায়হান। তবে বরাবরের মত এবারও সবাই হতাশা উপহার দিয়ে ফিরে এসেছেন দেশে।

আরচারিতে রোমান সানা যারপরনাই হতাশ করলেও রিকার্ভ আরচারির মিশ্র দ্বৈতে রোমান ও দিয়া বেশ লড়াই করেছিলেন। চমক দেখিয়ে তারা জায়গা করে নেন শেষ ষোলোয়। কিন্তু কোয়ার্টারে উঠতে পারেননি। শেষ ষোলোয় শক্তিশালী দক্ষিণ কোরিয়ার মুখোমুখি হয়ে বিদায় নিতে হয়। তবে তারা অর্জন করে ৯ম স্থান। ব্যক্তিগত ইভেন্টে রোমান বিদায় নেন দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে। তিনি অর্জন করেন ১৭তম স্থান। চমক দেখিয়েছিলেন কিশোরী দিয়াও। তিনি অর্জন করেন ৩৩তম স্থান।

শুটার আবদুল্লা হেল বাকী ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে অংশ নিয়ে ৪৭জনের মধ্যে হয়েছেন ৪১তম। সাঁতারে আরিফুল ইসলাম অংশ নেন ৫০ মিটার ফ্রি-স্টাইলে। চার নম্বর হিটে অংশ নিয়ে তিনি সময় নেন ২৪.৮১ সেকেন্ড। ৭৩জনের মধ্যে হয়েছেন ৫১তম। নারী সাঁতারু জুনায়না আহমেদ ৫০ মিটার ফ্রি-স্টাইলে অংশ নিয়ে ২৯.৭৮ সেকেন্ড সময় নিয়ে হয়েছেন ৮১ জনের মধ্যে ৬৮তম। অ্যাথলেট জহির অংশ নেন ৪০০ মিটার স্প্রিন্টে। ৪৭.৩৪ সেকেন্ড সময় নিয়ে ৩ নম্বর হিটে ৮ জনের মধ্যে হয়েছেন অষ্টম।

অ্যাথলেটিকস

জাতীয় অ্যাথলেটিকসে সেরা সেনাবাহিনী

বছরের শুরুতেই অনুষ্ঠিত ৪৪তম জাতীয় অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপ। ১৫ জানুয়ারি, শুক্রবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম শুরু হয় এই চ্যাম্পিয়নশিপ। এ আসরে ৬৪ জেলা, ৮ বিভাগ, বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষাবোর্ড, বিকেএসপি, বিজেএমসিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৪৫০ জন (পুরুষ ও মহিলা) অ্যাথলেট ও ১৫০ জন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন।

তিনদিন ব্যাপি এই প্রতিযোগিতায় মোট ৩৬ ইভেন্টে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে পুরুষদের ২২ ও মহিলাদের ১৪টি ইভেন্ট। জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনি। ২১টি স্বর্ণ, ১২টি রৌপ্য এবং ১৩টি ব্রোঞ্জ পদক জিতে নিয়েছে সার্ভিসেস দলটি।

সেরা পুরুষ অ্যাথলেট নির্বাচিত হন নৌ-বাহিনীর জহির রায়হান এবং মহিলাদের বিভাগে সেরা হন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর রিতু আক্তার। ১০০ মিটার স্প্রিন্টে দ্রুততম মানব-মানবীর খেতাব জিতে নিয়েছেন মো. ইসমাইল এবং শিরিন আক্তার। ইসমাইল সময় নেন ১০.৫৫ সেকেন্ড। দ্বিতীয় হন নৌবাহিনীর রকিবুল হাসান। সময় নিয়েছেন ১০.৬০ সেকেন্ড।

তৃতীয় হয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মো. হাসান মিয়া। তার টাইমিং ১০.৭০ সেকেন্ড। শিরিন আক্তার সময় নেন ১১.৮০ সেকেন্ড। জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ ও সামার মিট মিলিয়ে টানা ১১ বার দেশের দ্রুততম মানবী হয়ে নিজের রেকর্ড আরও সমৃদ্ধ করলেন শিরিন। ২০০ মিটারেও স্বর্ণ জেতেন তিনি।

শেখ রাসেল জাতীয় জুনিয়র অ্যাথলেটিক্সে সেরা বিকেএসপি

শহীদ শেখ রাসেল জাতীয় জুনিয়র অ্যাথলেটিক্সে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি)। ২৩ অক্টোবর আর্মি স্টেডিয়ামে শেষ হওয়া দুইদিনব্যাপি এই প্রতিযোগিতায় ১৮টি স্বর্ণ, ১১টি রৌপ্য এবং ১১টি ব্রোঞ্জসহ মোট ৪০টি পদক জয় করে তারা।

১০টি স্বর্ণ, ৫টি রৌপ্য এবং ৮টি ব্রোঞ্জসহ মোট ২৩টি পদক নিয়ে রানার্সআপ হয়েছে নড়াইল জেলা ক্রীড়া সংস্থা। ৩টি স্বর্ণ, ৩টি রৌপ্য এবং ১টি ব্রোঞ্জসহ ৭টি পদক জিতে তৃতীয় হয়েছে কুষ্টিয়া জেলা ক্রীড়া সংস্থা।

ওয়ার্ল্ড অ্যাথলেটিকসের হিটে অষ্টম সুমাইয়া

কেনিয়ায় জুনিয়র ওয়ার্ল্ড অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপে মেয়েদের ১০০ মিটার স্প্রিন্টের অনূর্ধ্ব-১৮ বিভাগের হিটে আটজনের মধ্যে অষ্টম হয়েছেন বাংলাদেশের সুমাইয়া দেওয়ান। কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে অনুষ্ঠিত এই ইভেন্টে মোট ৩৬ জন প্রতিযোগী অংশ নেন। এর মধ্যে টাইমিং অনুযায়ী তার অবস্থান সবার শেষে। বিকেএসপির এই শিক্ষার্থীর টাইমিং ছিল ১২.৯১ সেকেন্ড।

বঙ্গবন্ধু ঢাকা ম্যারাথনে সেরা মরক্কোর হিসাম ও কেনিয়ার এঞ্জেলা

১০ জানুয়ারি, রোববার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ঢাকা ম্যারাথন-২০২১ অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়াম হতে শুরু হয়ে ম্যারাথন শেষ হয় হাতিরঝিলে।

পূর্ণাঙ্গ ম্যারাথনে এলিট দৌড়বিদদের মধ্যে পুরুষ বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হন মরক্কোর হিসাম লাকুজি এবং নারী বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হন কেনিয়ার এঞ্জেলা জেম এ্যাসুনদে। পূর্ণাঙ্গ ম্যারাথনে সার্ক ও দেশি দৌড়বিদদের মধ্যে পুরুষ বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন ভারতের বাহাদুর সিং এবং নারী বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন নেপালের পুস্পা ভান্ডারি।

হাফ ম্যারাথনে এলিট দৌড়বিদদের মধ্যে পুরুষ বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হন কেনিয়ার এডুইন কিপ্রোপ এবং নারী বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হন কেনিয়ার নাওম জেবেত। দেশি অংশগ্রহণকারী দৌড়বিদদের মধ্যে মো. ফারদিন মিয়া প্রথম স্থান অধিকার করেন।

আরচারি

বিশ্বকাপে রোমান সানা-দিয়া সিদ্দিকীর ইতিহাস

বিশ্বকাপ আরচারিতে বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়েছেন রোমান সানা ও দিয়া সিদ্দিকী। তবে তারা চ্যাম্পিয়ন হতে পারেননি। হলেন রানারআপ। সুইজারল্যান্ডের লুজানে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ আরারিতে রিকার্ভ মিশ্র দ্বৈতের ফাইনালে বাংলাদেশ হেরেছে নেদারল্যান্ডসের কাছে।

বাংলাদেশের হার ৫-১ সেটে। তবে পুরো টুর্নামেন্টেই অসাধারণ সাফল্য দেখিয়েছেন রোমান সানা-দিয়া সিদ্দিকীরা। আরচারিতে এটাই বাংলাদেশের সেরা সাফল্য। এর আগে সর্বোচ্চ ২০১৯ সালে রোমান সানা জিতেছিলেন ব্রোঞ্জ পদক।

এশিয়ান আরচারিতে তিন পদক

কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপ ওয়ার্ল্ড র্যাংকিং স্টেজ-১ আরচারির শেষ দিন সকালে দুটি রৌপ্য পদক জয় করে বিকেএসপির আরচাররা। বিকেলে জিতেছেন আরো একটি ব্রোঞ্জ। সব মিলিয়ে তিনটি পদক নিয়ে কোরিয়া থেকে ফিরে আসেন ৬ আরচার।

এশিয়ান আরচারির শেষ দিনে সকালে কম্পাউন্ড মিশ্র দলগত ইভেন্টে ফাইনালে বাংলাদেশের শেখ সজিব ও পুষ্পিতা জামান কোরিয়ার কাছে হেরে রৌপ্য জয় করেন। কম্পাউন্ড পুরুষ দলগত ইভেন্টের ফাইনালেও বাংলাদেশ (শেখ সজিব, হিমু বাছাড় ও মো: আসিফ মাহমুদ) কোরিয়ার কাছে হেরে রৌপ্য পদক পেয়েছেন। বাংলাদেশের শেষ ইভেন্ট ছিল বিকেলে। রিকার্ভ মিশ্র দলগত ইভেন্টে বাংলাদেশ (প্রদীপ্ত চাকমা ও রজনী আক্তার) ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছেন।

বিশ্ব আরচারি চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের হতাশা

যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ডাকোটায় ইয়াঙ্কটনে অনুষ্ঠিত বিশ্ব আরচারি চ্যাম্পিয়নশিপে যারপরনাই হতাশ করেছে বাংলাদেশের আরচাররা। ২০১৯ সালে বাংলাদেশ ব্রোঞ্জ পদক জিতেছিল। কিন্তু এবার রোমান সানাদের চেয়েও ভালো করেছেন হাকিম আহমেদ রুবেল এবং রামকৃষ্ণ সাহা। যদিও পুরো দলই হতাশা উপহার দিয়ে বিদায় নিয়েছে। কোনো পদক জিততে না পারার আক্ষেপ নিয়েই ফিরতে হয়েছে বাংলাদেশ দলকে।

কাবাডি

বঙ্গবন্ধু কাপ আন্তর্জাতিক কাবাডি, চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

২৮ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল, ঢাকা কাবাডি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কাবাডি টুর্নামেন্ট। এ টুর্নামেন্টের ফাইনালে কেনিয়াকে ৩৪-২৮ পয়েন্টে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টে অংশ নেয় পোল্যান্ড, কেনিয়া, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও স্বাগতিক বাংলদেশ।

প্রথম বিভাগ কাবাডি চ্যাম্পিয়ন ডিএমপি

প্রথম বিভাগ কাবাডিতে শিরোপা জিতে নেয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কাবাডি ক্লাব। ঢাকা কাবাডি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে ৩৭-৩৩ পয়েন্টে বাংলাদেশ আনসারকে পরাজিত কওে শিরোপা জিতে নেয় তারা। কাবাডি লিগে মোট ১০টি দল অংশগ্রহণ করে। লিগ শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন।

দ্বিতীয় বিভাগ কাবাডি: দ্বিতীয় বিভাগ কাবাডি লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কুমিল্লার মেঘনা কাবাডি ক্লাব। মূলতঃ কাবাডির প্রাণ ফেরাতেই ফেডারেশন বিভিন্ন পর্যায়ের লিগ আয়োজন করছে। বিদেশী খেলোয়াড় সমৃদ্ধ এই লিগটিও বেশ জমে উঠেছিল। ফাইনালে মেঘনা কাবাডি ক্লাব ৪৫-১৯ পয়েন্টে মৌলভীবাজারের শাহ মোস্তফা স্পোর্টিং ক্লাবকে পরাজিত করে।

নারী কাবাডি লিগে পুলিশ চ্যাম্পিয়ন

নারী কাবাডি লিগেরও আয়োজন করে কাবাডি ফেডারেশন। ৯ বছর পর অনুষ্ঠিত নারী কাবাডি লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। ৩০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ফাইনালে তারা টাইব্রেকারে ২৬-২৫ পয়েন্টে পরাজিত করে বাংলাদেশ আনসারকে। নির্ধারিত সময়ের খেলা সমতায় ছিল ২২-২২ পয়েন্টে। লিগে অংশ নেয় মোট ১১টি নারী কাবাডি ক্লাব।

দাবা

মুজিববর্ষ আন্তর্জাতিক দাবায় অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন জিয়া

মুজিববর্ষ আমন্ত্রণমূলক আন্তর্জাতিক রেটিং দাবা প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের গ্র্যান্ড মাস্টার জিয়াউর রহমান। ৯ ম্যাচে ৭.৫ পয়েন্ট পেয়ে তিনি এ কৃতিত্ব অর্জন করেন। চ্যাম্পিয়ন হয়ে পেয়েছেন ১ লাখ টাকা পুরস্কার। অপরাজিত রানারআপ হন উদীয়মান দাবাড়ু, উত্তরা সেন্ট্রাল চেস ক্লাবের অনত চৌধুরী।

দাবা বিশ্বকাপে জিয়া, নিয়াজ মোরশেদ

ওাশিয়ার সোচিতে অনুষ্ঠিত দাবা বিশ্বকাপে দারুণ লড়াই করেছিলেন উপমহাদেশের প্রথম গ্র্যান্ড মাস্টার নিয়াজ মোর্শেদ। অল্পের জন্য দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠতে পারেননি তিনি। প্যারাগুয়ের গ্র্যান্ডমাস্টার ডেলগাডো র্যামিরেজ নেয়ুরিজ। প্রথম ম্যাচে ২৭ চাল পর্যন্ত সমানতালে খেললেও ২৮তম চালে ভুল করে বসেন। ৩০তম চালে হেরে যান।

দ্বিতীয় ম্যাচে জিতে যান নিয়াজ। এরপর ২টি ২টি কওে মোট ৬টি র্যাপিড ম্যাচে মুখোমুখি হয়ে শেষ মুহূর্তে এসে হেরে যান নিয়াজ। তবে আরেক দাবাড়ু, গ্র্যান্ড মাস্টার জিয়াউর রহমান হতাশ করেন। টানা তিনবারসহ মোট ৫বার বিশ্বকাপে অংশ নিয়েও তিনি দ্বিতীয় রাউন্ডের দেখা পাননি। এশিয়ান জোনাল দাবায় অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পান তিনি। নারী বিশ্বকাপে আন্তর্জাতিক মাস্টার শারমিন সুলতানা শিরিনও খুব বেশিদুর যেতে পারেননি। বিদায় নেন প্রথম রাউন্ড থেকেই।

মুজিববর্ষ প্রিমিয়ার ডিভিশন দাবা লিগ

মুজিববর্ষ প্রিমিয়ার ডিভিশন দাবা লিগে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। ঘরোয়া দাবার সর্বোচ্চ আসরে বাংলাদেশ পুলিশ ১০ ম্যাচে একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করে পূর্ণ ২০ পয়েন্ট তুলে নিয়ে এ কৃতিত্ব অর্জন করে। এবার নিয়ে দ্বিতীয়বার শিরোপা জিতলো তারা। পুলিশ দলে ছিলেন চার গ্র্যান্ড মাস্টার মোল্লা আবদুল্লাহ আল রাকিব ও জিয়াউর রহমান। সঙ্গে ছিলেন ভারতের সূর্য শেখর গাঙ্গুলি ও রনৌক সাদভানি ও আন্তর্জাতিক মাস্টার মোহাম্মদ ফাহাদ রহমান।

এশিয়ান স্কুল টুর্নামেন্টে খুশবু

এশিয়ান অনলাইন বালিকা স্কুল দাবায় অনুর্ধ্ব-৯ গ্রুপে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের ওয়ারসিয়া খুশবু। একই সঙ্গে স্বর্ণপদকও জয় করে নেয় সে। ৯ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট পেয়ে এ কৃতিত্ব দেখায় খুশবু। তার সঙ্গে সমান পয়েন্ট পেয়েছিল ইরানের সাদান পৌরও।

কিন্তু টাইব্রেকিং পদ্ধতিতে পারস্পরিক খেলায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পাশাপাশি স্বর্ণপদকও জয় করে সে। এশিয়ান অনলাইন ওপেন স্কুল দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে অনুর্ধ্ব-১১ গ্রুপে নারায়নগঞ্জের ফিলোসোফিয়া স্কুলের ক্যান্ডিডেট মাস্টার মনন রেজা নীড় ৯ ম্যাচে সাড়ে ৬ পয়েন্ট পেয়ে হয়েছে অষ্টম।

শেখ কামাল আন্তর্জাতিক র‍্যাপিড টুর্নামেন্ট

শেখ কামাল আমন্ত্রণমূলক আন্তর্জাতিক র্যাপিড দাবা টুর্নামেন্টে উত্তরা সেন্ট্রাল চেস ক্লাবের ক্যান্ডিডেটমাস্টার তাহসিন তাজওয়ার জিয়া অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। ৭ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট অর্জন করেন তিনি। একই পয়েন্ট নিয়ে রানারআপ হয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশ চেস টিমের গ্র্যান্ড মাস্টার জিয়াউর রহমান। পিতা-পুত্রের শিরোপা লড়াই নির্ধারণ হয়েছে টাইব্রেকিং পদ্ধতিতে।

শেখ রাসেল গ্র্যান্ড মাস্টার টুর্নামেন্ট

শেখ রাসেল আন্তর্জাতিক গ্র্যান্ড মাস্টার টুর্নামেন্টে পোল্যান্ডের গ্র্যান্ড মাস্টার মিখায়েল ক্রাসেনকভ চ্যাম্পিয়ন হয়ে চমক দেখান। শুরু থেকে তিনি খুব একটা ভালো পজিশনে না থাকলেও শেষ মুহূর্তে এসে ক্রমান্বয়ে জয়ের দিকে এগিয়ে যান। শিরোপা জয়ের অন্যতম ভাগিদার ছিলেন ভারতের গ্র্যান্ডমাস্টার শ্রীনাথ নারায়নান এবং আজারবাইজানের গ্র্যান্ডমাস্টার রাসুলভ ভুগার। সপ্তম রাউন্ড পর্যন্ত এককভাবে শীর্ষে ছিলেন নারায়নান। অষ্টম রাউন্ডে তাকে হারিয়ে দেন রাসুলভ। নবম রাউন্ড ছিল শিরোপা জয়ের লড়াই। এখানেই বাজিমাত করেন ক্রাসেনকভ। ৯ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট অর্জন করেন তিনি।

এশিয়ান ক্লাব কাপে রানার্সআপ পুলিশ

বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত প্রিমিয়ার ডিভিশন দাবায় চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ পুলিশ চেস ক্লাব এশিয়ান ক্লাবকাপ হাইব্রিড দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে রানার্সআপ হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ চেস ক্লাবটি শিরোপা জয়ের অন্যতম দাবিদার ছিল।

কিন্তু শিরোপা লড়াইয়ে তারা অপ্রত্যাশিতভাবে হেরে যায় সিঙ্গাপুরের এসজি চেস হাব অ্যাট দ্য রেট জুরং স্প্রিংয়ের কাছে। ৯ রাউন্ড সুইস লিগ পদ্ধতিতে ইরানের পিরামিড দল, বাংলাদেশ পুলিশ ও সিঙ্গাপুরের এসজি চেস হাব অ্যাট দ্য রেট জুরং স্প্রিং- এই তিনটি দল সমান ১৬ ম্যাচ পয়েন্ট নিয়ে আসর শেষ করলেও গেম পয়েন্টের মাধ্যমে শিরোপা নির্ধারণ করা হয়।

জয়তু শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক গ্র্যান্ড মাস্টার্স দাবা

ভারতীয় আন্তর্জাতিকমাস্টার সংকল্প গুপ্ত জয়তু শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক গ্র্যান্ডমাস্টার্স দাবা প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ৯ ম্যাচে ৫ জয় এবং ৪ ড্র’সহ ৭ পয়েন্ট পেয়ে তিনি এ কৃতিত্ব অর্জন করেন। ১৮ বছর বয়সী এ তরুণ প্রতিযোগিতায় আট নম্বর সিডেড দাবাড়– হয়ে নয় গ্র্যান্ডমাস্টারকে পেছনে ফেলে শিরোপা জয় করে নেন। তবে তিনি অল্পের জন্য গ্র্যান্ডমাস্টার নর্ম অর্জন করতে পারেননি।

মুজিববর্ষ আন্তর্জাতিক দাবায় মোমিন চ্যাম্পিয়ন

মুজিববর্ষ আন্তর্জাতিক রেটিং দাবা প্রতিযোগিতার নবম তথা শেষ রাউন্ডে ন্যুনতম ড্র করতে পারলেই অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হতে পারতেন সিলেট লতিফ ট্রাভেল চেস ক্লাবের সনাতন জাহিদ। কিন্তু তার প্রতিপক্ষ গোপালগঞ্জের আবদুল মোমিন সে সুযোগ দেননি। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর সনাতন সজিব হেরে যান মোমিনের কাছে। ফলে ৯ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে শিরোপার ভাগিদার হয়ে ওঠেন ফারাজ আয়াজ হোসেন চেস ক্লাবের মুকিতুল ইসলাম রিপন ও টাঙ্গাইল চেস ক্লাবের মো. আমিনুল ইসলাম। ফলে টাইব্রেকিং পদ্ধতিতে শিরোপা নির্ধারণ করা হয়। এতে চ্যাম্পিয়ন হন মোমিন। সনাতন হলেন রানারআপ, মুকিতুল তৃতীয় এবং আমিনুল হলেন চতুর্থ।

শেখ কামাল আন্তর্জাতিক দাবা: চীনের লি ডি চ্যাম্পিয়ন

শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল আন্তর্জাতিক অনলাইন দাবা প্রতিযোগিতায় অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন চীনের গ্র্যান্ডমাস্টার লি ডি। ৯ ম্যাচে তিনি ৭টি জয় এবং ২টি ড্রসহ ৮ পয়েন্ট নিয়ে শিরোপা জয় করেন। প্রতিযোগিতায় ১৭ নম্বর সিডেড দাবাড়– ছিলেন ২২ বছর বয়সী এই গ্র্যান্ডমাস্টার।

নারী দাবা লিগঃ নৌবাহিনী চ্যাম্পিয়ন

মুজিববর্ষ প্রথম নারী দাবা প্রথম নারী দাবা লিগে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। শুরু থেকেই একের পর এক জয় তুলে নিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই শিরোপা জিতে নেয় তারুণ্য নির্ভর দলটি। শেষ পর্যন্ত ৯ ম্যাচে সব জয়সহ পূর্ণ ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শিরোপা জয় করে নৌবাহিনী।

দলটির হয়ে লিগে অংশ নেন নারী ফিদেমাস্টার নোশিন আনজুম, নারী ক্যান্ডিডেট মাস্টার আহমেদ ওয়ালিজা, ওয়াদিফা আহমেদ এবং কাজী জারিন তাসনিম। শক্তিশালী বাংলাদেশ পুলিশ ১৫ পয়েন্ট নিয়ে হয়েছে রানারআপ। এই দলের হয়ে খেলেছেন আন্তর্জাতিক মাস্টার রানী হামিদ, শারমিন সুলতানা শিরিন, নারী ফিদে মাস্টার নাজরানা খান ইভা, ক্যান্ডিডেটমাস্টার জান্নাতুল ফেরদৌস ও ইশরাত জাহান দিবা।

শুটিং

আন্তর্জাতিক শুটিংয়ে মুন্নার রৌপ্য পদক

জাতির পিতার জ্যেষ্ঠপুত্র শেখ কামালের ৭২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শুটিং স্পোর্ট ফেডারেশন ‘শেখ কামাল আন্তর্জাতিক এয়ারগান চ্যাম্পিয়নশিপ অনলাইন-২০২১’ আয়োজন করে। টুর্নামেন্টে ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে তরুণ উদীয়মান রাইফেল শুটার রাব্বি হাসান মুন্না রৌপ্য পদক জয় করেন। স্বর্ণ জয় করেন ইন্দোনেশিয়ার ফাতুর গুস্তাফিন। এই টুর্নামেন্টে অংশ নেয় মোট ৭টি দেশের ৫৪জন শুটার। দেশগুলো হলো- ইউক্রেন, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, কিরগিজস্তান, মঙ্গোলিয়া, ভারত ও বাংলাদেশ।

জিমন্যাস্টিক্স

বঙ্গবন্ধু জিমন্যাস্টিক্সে চ্যাম্পিয়ন উজবেকিস্তান, বাংলাদেশ তৃতীয়

বঙ্গবন্ধু পঞ্চম সেন্ট্রাল সাউথ এশিয়ান আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিকস চ্যাম্পিয়নশিপে একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে নিয়েছে উজবেকিস্তান। তারা মোট ১৯টি স্বর্ণ, ১১টি রৌপ্য এবং ৮টি ব্রোঞ্জসহ মোট ৩৮টি পদক জিতে নেয়। দ্বিতীয় হয়েছে ভারত। তাদের সংগ্রহ ৩ স্বর্ণ, ৯ রৌপ্য ও ১২ ব্রোঞ্জসহ মোট ২৪টি পদক। ১ রৌপ্য এবং ৩ ব্রোঞ্জসহ ৪ পদক পেয়ে বাংলাদেশ হয়েছে তৃতীয়।

৬ জাতির এই আন্তর্জাতিক আসর ২৭ থেকে ৩১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় মিরপুরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে। টুর্নামেন্টের মূল আকর্ষণ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ২০১৬ রিও অলিম্পিকে রিদমিক জিমন্যাস্টিকসে স্বর্ণজয়ী বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত মার্গারিটা মামুন।

বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক জিমন্যাস্টিকসের এটাই সেরা আয়োজন। ১০ বছর আগে, ২০১১ সালে চতুর্থ সেন্ট্রাল সাউথ এশিয়ান আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিকস চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করা হয়। মোট ৬টি দেশ অংশ নেয় এই প্রতিযোগিতায়। দেশগুলো হলো উজবেকিস্তান, ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, পাকিস্তান ও স্বাগতিক বাংলাদেশ।

রাশিয়ায় রাফির ব্রোঞ্জ জয়

দেশের বাইরে থেকে অনেকটা নীরবেই সাফল্য বয়ে এনেছেন আবু সাঈদ রাফি। রাশিয়ার একটি জিমন্যাস্টিক্স প্রতিযোগিতায় ব্রোঞ্জ জিতেছেন বাংলাদেশের এই প্রতিযোগি। ২০২১ বছরের শুরুতেই এলো এই সাফল্য। বিকেএসপির ১৬ বছর বয়সী এ প্রতিযোগী রাশিয়ার পাঁচদিন ব্যাপি মিখাইল ভোরোনিন কাপ আন্তর্জাতিক আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিকসের জুনিয়র ক্যাটাগরিতে পদক জয় করেন। তার ইভেন্ট ছিল ইন্ডিভিডুয়াল অল অ্যারাউন্ড। রাশিয়ার পেঞ্জা শহরে স্বাগতিকরাছাড়াও বাংলাদেশ, জর্জিয়া, আর্মেনিয়াসহ অনেকগুলো দেশ অংশ নেয়।

মাটির কুস্তি

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে পল্টন মাঠে আয়োজন করা হয় দ্বিতীয় ওরিয়েন্টাল কুস্তি প্রতিযোগিতা-২০২১। যাকে বলা হয় মাটির কুস্তি। এই প্রতিযোগিতায় পুরুষ ও মহিলা বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী। পুরুষ বিভাগে আনসার ৫টি স্বর্ণ, ৩টি রৌপ্য ও ২টি ব্রোঞ্জসহ মোট ১০টি পদক জয় করে চ্যাম্পিয়ন হয়। সেনাবাহিনী ৪টি স্বর্ণ ৪টি রৌপ্য ও ২টি ব্রোঞ্জসহ মোট ১০টি পদক জয় করে রানার্সআপ হয়। নারী বিভাগে ৫টি স্বর্ণ, ৫টি রৌপ্যসহ মোট ১০টি পদক জয় করে আনসার। সেনাবাহিনী ৪টি স্বর্ণ, ৫টি রৌপ্য ও একটি ব্রোঞ্জসহ জয় করে মোট ১০টি পদক।

জাতীয় সার্ফিং

মুজিববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত জাতীয় সার্ফিং টুর্নামেন্টে পুরুষ সিনিয়র বিভাগে আবদুল মান্নান, নারী বিভাগে ফাতেমা এবং জুনিয়র বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন হান্নান। মান্নান এবং হান্নান দুই সহোদর। কক্সবাজারের সমূদ্র সৈকতে ২১ পয়েন্ট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হন মান্নান। নারী বিভাগে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হন ফাতেমা এবং জুনিয়র বিভাগে ১১ পয়েন্ট পান আবদুল হান্নান।

বাস্কেটবল

ফেডারেশন কাপ বাস্কেটবলে নৌবাহিনী চ্যাম্পিয়ন

সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু ফেডারেশন কাপ বাস্কেটবল প্রতিযোগিতায় শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। ধানমন্ডির বাস্কেটবল জিমনেশিয়ামের কোর্টে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টের ফাইনালে বিকেএসপিকে ৬৩-৩৫ পয়েন্টে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় নৌ-বাহিনী। তাদের জয়ের দুই নায়ক সামসুজ্জামান সোয়েব এবং মিথুন যথাক্রমে ২২ ও ১৫ পয়েন্ট তোলেন। বিকেএসপির আকাশ ১৩ ও পিয়াস ১০ স্কোর করেন।

দক্ষিণ এশিয়ান বাস্কেটবলে বাংলাদেশ তৃতীয়

মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধু ৬ষ্ঠ সাউথ এশিয়ান বাস্কেটবল অ্যাসোসিয়েশন (সাবা) বাস্কেটবল চ্যাম্পিয়নশিপে তৃতীয়স্থান অধিকার করে বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টে ভারত হয়েছে চ্যাম্পিয়ন এবং শ্রীলঙ্কা হয়েছে রানারআপ। মিরপুর শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে শেষ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। ভারত ১০৬-৪১ পয়েন্টে বাংলাদেশকে পরাজিত করে। প্রতিযোগিতায় লিগ পদ্ধতিতে অংশ নেয় ভারত, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা ও স্বাগতিক বাংলাদেশ।

হ্যান্ডবল

জাতীয় পুরুষ হ্যান্ডবলে আনসার চ্যাম্পিয়ন

জাতীয় পুরুষ হ্যান্ডবলের ফাইনালে বাংলাদেশ আনসার ভিডিপি এবং বাংলাদেশ পুলিশ দলের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই অনুষ্ঠিত হয়। নির্ধারিত সময়ে ২২-২২ গোলে অমিমাংসিতভাবে খেলা শেষ হয়। শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে যদিও বেশ নাটকীয়তায় পরিপূর্ণ ছিল ম্যাচটি। সমতা থাকাবস্থায় দ্বিতীয়ার্ধের ১০ মিনিটের সময় রেফারির একটি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে পুলিশ দল মাঠ ত্যাগ করে। পরে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও যখন তারা মাঠে ফেরেনি, তখন বাইলজ অনুযায়ী আনসারকেই বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

জাতীয় নারী হ্যান্ডবলে সেরা আনসার

এক্সিম ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত নারী জাতীয় হ্যান্ডবল প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ আনসার ভিডিপি। দীর্ঘ ১৪ বছর পর ঢাকার বাইরে অনুষ্ঠিত হলো জাতীয় নারী হ্যান্ডবল। সর্বশেষ ২০০৭ সালে অনুষ্ঠিত হয় নারীদের জাতীয় আসর। এবার ঢাকার বাইরে নড়াইল জেলাকে বেছে নেয়া হয় এই টুর্নামেন্ট আয়োজন করার জন্য। বীরশ্রেষ্ঠ নুর মোহাম্মদ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে নওগাঁ জেলাকে ২৬-১২ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয় আনসারের মেয়েরা।

যুব হ্যান্ডবলে সেরা ঢাকা ও পঞ্চগড়

পল্টনের শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী জাতীয় হ্যান্ডবল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ওয়াল্টন দ্বিতীয় জাতীয় যুব (অনুর্ধ্ব-১৭ বালক ও বালিকা) হ্যান্ডবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ঢাকা জেলা ক্রীড়া সংস্থা এবং পঞ্চগড় জেলা ক্রীড়া সংস্থা।
বালক বিভাগের ফাইনালে বান্দরবান জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে ৩৭-২৯ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ঢাকা জেলা ক্রীড়া সংস্থা। বালিকা বিভাগের ফাইনালে নওগাঁ জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে ২৭-১৫ গোলে হারিয়ে সেরা হয় পঞ্চগড় জেলা।

ভারোত্তোলন

মুজিববর্ষ সিনিয়র ভারোত্তোলন

মুজিববর্ষে ৩৭তম পুরুষ এবং ১৪তম নারী সিনিয়র ভারোত্তোলনে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের জিমনেশিয়ামে অনুষ্ঠিত এ প্রতিযোগিতায় ১৩টি স্বর্ণ ও ৪টি রৌপ্য পদক জিতে সেরা হয়েছে সেনাবাহিনী। ৬টি স্বর্ণ ও ৭টি রৌপ্য পদক জিতে রানার্সআপ হয়েছে বাংলাদেশ আনসার।
প্রতিযোগিতায় পুরুষ বিভাগে সেরা ভারোত্তোলক হয়েছেন আনসারের বাকি বিল্লাহ এবং নারীদের বিভাগে সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন সেনাবাহিনীর স্মৃতি আক্তার। দুই বিভাগেই মোট ১৭টি জাতীয় রেকর্ড হয়েছে। এর মধ্যে মেয়েদের বিভাগে ১০টি এবং পুরুষ বিভাগে হয় ৭টি রেকর্ড।

সাঁতারে

বঙ্গবন্ধু জাতীয় সাঁতারে সেরা নৌবাহিনী

বঙ্গবন্ধু জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগীয়তায় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। সার্ভিসেস এই দলটি বিভিন্ন ইভেন্টে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে জিতেছে ৩৮টি স্বর্ণ, ২৩টি রৌপ্য এবং ৮টি ব্রোঞ্জসহ মোট ৬৯টি পদক। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ৫টি স্বর্ণ, ১৮টি রৌপ্য এবং ১৯টি ব্রোঞ্জসহ মোট ৪২টি পদক জয় করে রানারআপ হয়।

অসাধারণ ক্রীড়া নৈপূণ্য দেখিয়ে নৌ-বাহিনীল দুই কৃতি সাঁতারু কাজল মিয়া তিনটি নতুন জাতীয় রেকর্ডসহ ৫টি স্বর্ণ এবং নারী বিভাগে সোনিয়া খাতুন একটি নতুন জাতীয় রেকর্ডসহ ৭টি স্বর্ণ এবং ২টি রৌপ্য জয় করে সেরা সাঁতারু নির্বাচিত হয়েছেন। এবারের আসরে মোট নতুন ১১টি জাতীয় রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। ২২ অক্টোবর মিরপুর জাতীয় সুইমিং কমপ্লেক্সে শুরু হয় তিনদিন ব্যাপি এই প্রতিযোগিতা এবং ২৪ অক্টোবর ছিল সমাপনী দিন।

জাতীয় বয়সভিত্তিক সাঁতারে সেরা বিকেএসপি

বঙ্গবন্ধু ৩৪তম জাতীয় বয়সভিত্তিক সাঁতার প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে বিকেএসপি। ১০৩টি স্বর্ণ পদকের লড়াইয়ে তারা জয় করে নেয় ৪৮টি স্বর্ণ পদক। সঙ্গে ৫৩টি রৌপ্য এবং ৪২টি ব্রোঞ্জসহ মোট ১৪৩টি পদক জয় করে বিকেএসপির সাঁতারুরা। অন্যদিকে ২৩টি স্বর্ণ, ১১টি রৌপ্য ও ৯টি ব্রোঞ্জসহ ৪৩টি পদক পেয়ে দলগত রানারআপ হয়েছে বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি।

চমৎকার ক্রীড়াশৈলি দেখিয়ে পুল মাতিয়েছেন পুুরুষ বিভাগের মো. ইসলাম এবং নারী বিভাগের মুক্তি খাতুন। আনসারের মুক্তি অনুর্ধ্ব-১৮ ও ২০ বিভাগে ৩টি নতুন জাতীয় রেকর্ডসহ মোট ১১টি স্বর্ণ ও ২টি রৌপ্য জয় করেন। গোপালগঞ্জ সুইমিং ক্লাবের মো. ইসলাম অনুর্ধ্ব-১৮ ও ২০ বিভাগে ২টি জাতীয় রেকর্ডসহ মোট ৯টি স্বর্ণ জয় করে সেরা সাঁতারু হয়েছেন। এই আসরের সাঁতারে ৮টি, ডাইভিংয়ে ৩টিসহ মোট ১১টি রেকর্ড হয়েছে। ৩ অক্টোবর শেষ হয় জাতীয় বয়সভিত্তিক সাঁতার প্রেিতযাগিতা।

ফেডারেশন কাপ টেবিল টেনিস

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে জার্মানি-স্ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম ফেডারেশন কাপ টেবিল টেনিসের পুরুষ বিভাগে ওয়ারী এবং নারী বিভাগে পুলিশ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ ইনডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত নারী বিভাগের দলগতে পুলিশ ৩-০ সেটে আবাহনী লিমিটেডকে হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয়। পুরুষ বিভাগে ওয়ারি ৩-২ সেটে পুলিশকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়।

জাতীয় তায়কোয়ান্দোতে চ্যাম্পিয়ন সেনাবাহিনী এবং আনসার

২০২১ সালে বছরের শুরুতেই অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় সিনিয়র ও জুনিয়র তায়কোয়ান্দো প্রতিযোগিতা। যা শুরু হয় গত বছর ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ জিমনেশিয়ামে। চারদিন ব্যাপি এই টুর্নামেন্ট শেষ হয় ২০২১ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। প্রতিযোগিতায় পুরুষ বিভাগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নারী বিভাগে বাংলাদেশ আনসার চ্যাম্পিয়ন হয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জিতেছে ৬টি স্বর্ণ এবং দুটি রৌপ্য পদক। পুরুষ বিভাগে ২টি স্বর্ণ এবং ৬টি রৌপ্য জিতে রানারআপ হয় আনসার। নারী বিভাগে বাংলাদেশ আনসার জিতেছে ৬টি স্বর্ণ ও ২টি রৌপ্য পদক। দুটি স্বর্ণ ও ৫টি রৌপ্য পদক জিতে রানারআপ হয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

অনলাইন তায়কোয়ান্দোয় সেনাবাহিনী চ্যাম্পিয়ন

কোরিয়া অ্যাম্বাসেডর কাপ অনলাইন তায়কোয়ান্দো প্রতিযোগিতার শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। রানার্সআপ হয়েছে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা। জুনিয়র বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সংস্থা। রানার্সআপ হয়েছে সিরাজগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থা।

ব্যাডমিন্টন: ইউনেক্স-সানরাইজ বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জ ব্যাডমিন্টন

বঙ্গবন্ধু ইউনেক্স-সানরাইজ বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জ ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টে পুরুষ এককে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারতের অভিষেক সাইনি ও নারী এককে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ইন্দোনেশিয়ার পুত্রি কুসুমা ওয়ারদানি। ৫ ডিসেম্বর শহীদ তাজউদ্দিন ইনডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় ফাইনাল খেলা। ভারত, মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, ইন্দোনেশিয়া ও স্বাগতিক বাংলাদেশসহ ৬ দেশের ১৯৯জন পুরুষ খেলোয়াড় এবং ১৩৪জন নারী খেলোয়াড়সহ মোট ৩৩৫জন শাটলার অংশগ্রহণ করেন।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক জুনিয়র ব্যাডমিন্টনে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

বঙ্গবন্ধু বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক জুনিয়র (অনূর্ধ্ব-১৯) ব্যাডমিন্টনে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। পাঁচটি ইভেন্টের মধ্যে তিনটিতে জিতে সিরিজ সেরা হয় স্বাগতিকরা। ছেলেমেয়া দ্বৈত এবং মিশ্র দ্বৈতে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। ৭ থেকে ৯ ডিসেম্বর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ ইনডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত তিনদিন ব্যাপি এ প্রতিযোগিতায় শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ভারত ও স্বাগতিক বাংলাদেশের মোট ৭৫জন শাটলার অংশগ্রহণ করেন।

শরীর গঠন: মুম্বাইয়ে পদক জিতলেন মৌ

অ্যামেচার অলিম্পিয়া ইন্ডিয়াতে বাংলাদেশের একমাত্র নারী বডিবিল্ডার হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করেছেন দেশসেরা নারী বডিবিল্ডার মাকসুদা আক্তার মৌ। ভারতের মুম্বাইয়ে এক্সিবিশন সেন্টাওে ৩ থেকে ৫ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত আইএইচএফএফ অ্যামেচার অলিম্পিয়া ইন্ডিয়ায় অংশ নেন মৌ। ওমেন ফিজিক ইভেন্টে তৃতীয় রানারআপ হয়েছেন তিনি।

জাতীয় সিনিয়র বক্সিংয়ে সেনাবাহিনী

বঙ্গবন্ধু ৩০তম পুরুষ ও ৬ষ্ঠ মহিলা জাতীয় সিনিয়র বক্সিং প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। ২ ডিসেম্বর মোহাম্মদ আলি বক্সিং স্টেডিয়ামে শেষ হওয়া চারদিন ব্যাপি প্রতিযোগিতায় তারা ৯টি স্বর্ণ এবং চারটি করে রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ পদক জিতে সেরা হয়। ৮টি স্বর্ণ, সাতটি রৌপ্য ও দুটি ব্রোঞ্জ জিতে রানার্সআপ হয় বাংলাদেশ আনসার।

বঙ্গবন্ধু এশিয়ান সেন্ট্রাল ভলিবল চ্যাম্পিয়নশিপ

এর আগে একবার হয়েছিল চ্যাম্পিয়ন। এ নিয়ে বাংলাদেশ তৃতীয়বারের মতো উঠেছিল ফাইনালে। বঙ্গবন্ধু এশিয়ান সেন্ট্রাল ভলিবল চ্যাম্পিয়নশিপে স্বাগতিকদের স্বপ্ন ছিল, দ্বিতীয়বারের মতো ট্রফি হাতে নেওয়ার। কিন্তু সেই স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়।

২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত এশিয়ান ভলিবল চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে এসে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে গেলো বাংলাদেশ। মিরপুর শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ৩-০ সেটে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে লঙ্কানরা। প্রথম সেটে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছিল, বাংলাদেশে হেরে যায় ২৬-২৮ পয়েন্টে। দ্বিতীয় সেটে বাংলাদেশের হার ২০-২৫ পয়েন্টে। তৃতীয় সেটও একই ব্যবধানে জিতে শিরোপা নিশ্চিত করেছে শ্রীলঙ্কা।

এই টুর্নামেন্টে মেয়েদের বিভাগেও খেলা হয়েছে। তবে বাংলাদেশের মেয়েরা ছয় দলের মধ্যে পঞ্চম হয়েছে। প্রথম চার ম্যাচ হেরে বাংলাদেশের মেয়েরা শেষ ম্যাচে হারায় মালদ্বীপকে।

আইএইচএস/এসএএস/এএসএম