‘পাকিস্তানের গোল বাতিলের দাবিতে আম্পায়ারকে লাঞ্ছিত করেছিল ভারত’
সময়ের চাকা ঘুরে আবার ঢাকায় মহাদেশীয় হকির বড় আসর। মাঝে চার বছর আগে আরও একবার এশীয় হকির শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই হয়েছিল রাজধানীতে। সেটা ২০১৭ সালে। ছিল এশিয়া কাপ।
তবে এবার আর এশিয়া কাপ নয়, আজ ১৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে যে আসরটির পর্দা উঠেছে, তার নাম এশিয়ান হকি চ্যাম্পিয়নশিপ। সে অর্থে এবার নিয়ে তৃতীয়বার এশীয় হকির বড় আসরের স্বাগতিক হলো ঢাকা।
বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক হকির আসর আসলেই মনে পড়ে ১৯৮৫ সালের এশিয়া কাপের কথা। চোখের সামনে ভেসে ওঠে একঝাঁক বিশ্ব তারকার নিপুণ স্টিকওয়ার্ক আর গতিময় হকির নৈপুণ্যের আলোকচ্ছ্বটা।
মনে পড়ে আশির দশকে বিশ্ব হকির শীর্ষ তারকা হাসান সরদার, হানিফ খান, মোহাম্মদ সহিদ, কালিমউল্লাহ, পারগাত সিং, হারদিপ সিং, কাশিম জিয়া, আয়াজ মেহমুদের নাম।
সময়ে কত কিছুই না বদলে যায়! বদলেছে বিশ্ব হকির চালচিত্র। নাটকীয়ভাবে পাল্টে গেছে এশীয় হকির দৃশ্যপটও। এখন ভারতের পাশাপাশি এশীয় হকির বড় শক্তি দক্ষিণ কোরিয়া। সঙ্গে মালয়েশিয়াও।
চার বছর আগে বাংলাদেশে হওয়া এশিয়া কাপের সর্বশেষ আসরে চ্যাম্পিয়ন ভারত। আর রানার্সআপ মালয়েশিয়া। তার আগে ২০০৯ আর ২০১৩ সালে হওয়া পরপর দুই এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন ছিল দক্ষিণ কোরিয়া। এবার দলটির এক খেলোয়াড় করোনা আক্রান্ত হওয়ায় শেষ মুহূর্তে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে আগেরবারের রানার্সআপ মালয়েশিয়া।
কাজেই আজ ১৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার থেকে যে এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরু হলো তাতে অবশ্যই হট ফেবারিট ভারত আর দক্ষিণ কোরিয়া।
শুনে অবাক হবেন, হয়তো বিস্ময়ের বিরাট খোরাকও হবে- তিন যুগ আগে ঢাকায় যখন প্রথম এশীয় হকির শ্রেষ্ঠত্বের আসর বসেছিল, তখন এই দক্ষিণ কোরিয়া তৃতীয় হলেও চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান আর রানার্সআপ ভারতের কাছে পাত্তাই পায়নি সেবার।
গ্রপ পর্বে ভারতের কাছে ৮-১ আর সেমিফাইনালে পাকিস্তানের কাছে ৭-০ গোলে শোচনীয়ভাবে হেরেছিল দক্ষিণ কোরিয়ানরা।
কিন্তু সময়ের প্রবাহমানতায় দক্ষিণ কোরিয়া দারুণভাবে উন্নতি করেছে হকিতে। নিচ থেকে উঠে এখন এশীয় হকির অন্যতম সেরা শক্তি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে কোরিয়ানরা।
আর বিস্ময়কর হলেও সত্য, ততটাই নিম্নমুখি পাকিস্তান। আজ যখন এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরু হলো, তখন পাকিস্তানীদের নিয়ে কোনই হই চই নেই। সবার চোখ ভারত আর দক্ষিণ কোরিয়ার দিকে। হয়তো মালয়েশিয়া থাকলে তাদের দিকেও মনোযোগ থাকতো সবার। এমনকি জাপানকে নিয়েও কথাবার্তা হচ্ছে বেশ। কিন্তু পাকিস্তানকে নিয়ে কোনোই সাড়া-শব্দ নেই।
কিন্তু বাংলাদেশের মাটিতে যখন প্রথম মহাদেশীয় হকির শ্রেষ্ঠত্বের আসর বসেছিল, তখন পাকিস্তানীরাই হেসেছিল শেষ হাসি। যত আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল পাকিস্তান। এই ঢাকা তথা দেশের ক্রীড়াকেন্দ্র বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে চির প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে ৩-২ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বার এশিয়া কাপ জিতেছিল পাকিস্তান।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে হকির ফাইনাল? এখন যারা হকির খোঁজ-খবর রাখেন, মাঠে গিয়ে খেলা দেখেন- তারা নিশ্চয়ই অবাক হচ্ছেন। ভাবছেন বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে তো ফুটবল হয়, অ্যাথলেটিক টার্ফে অ্যাথলেটিকস হয়। সেখানে তো আর হকির টার্ফ নেই। তাহলে ওই মাঠে হকি হয়েছিল কিভাবে?
নাকি আমি ভুল লিখলাম? এমনও ভাবতে পারেন কেউ কেউ। তাদের সবার কৌতুহল মেটানোর জন্য বলছি, ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম তখন দেশের ক্রীড়াকেন্দ্র- শুধু ফুটবল আর অ্যাথলেটিকস নয়, ক্রিকেট-হকির আসরও বসেছিল। এমনকি ৮০’র দশকে আন্তর্জাতিক কুস্তি প্রতিযোগিতাও হয়েছে দেশের ক্রীড়া তীর্থ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। ১৯৮৫ সালে ঢাকায় হওয়া এশিয়া কাপ হকির দ্বিতীয় আসরটিও হয়েছিল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের সবুজ ঘাসের মাঠে।
এখনো খুব মনে পড়ে ভারত-পাকিস্তান ফাইনালের কথা। অবিশ্বাস্য জন সমাগম ঘটেছিল সেদিন দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের ফাইনাল দেখার জন্য।
কেন ঘটবে না বলুন? ভারত আর পাকিস্তান সন্দেহাতীতভাবেই বিশ্ব হকিরও সেরা শক্তি। পাকিস্তান তখন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। ৮৪’র লস এঞ্জেলেস অলিম্পিকে স্বর্ণ বিজয়ী পাকিস্তান তখন এশিয়া চ্যাম্পিয়নও। ভারতও খুব পিছিয়ে ছিল না। ৮০’র মস্কো অলিম্পিকের স্বর্ণ বিজয়ী ভারত তখন এশিয়ান হকি রানার্সআপ।
দুই দলের অন্তত ৮ থেকে ১০ জন ছিলেন ওই সময়ের বিশ্ব হকির সেরা তারকা। তাদের হকি নৈপূণ্য নিজ চোখে দেখা চাট্টিখানি কথা নয়। তাই বিশ্ব হকির সেরাদের লড়াই দেখতে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে এসেছিলেন প্রায় অর্ধলক্ষ হকি অনুরাগি। আজকের দিনে ভাবা যায়?
বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের ৪০ হাজার আসন কানায় কানায় পুরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। এক ইঞ্চি জায়গায়ও খালি ছিল না গ্যালারিতে। অন্তত হাজার পাচেক দর্শক বেশি এসেছিলেন সেদিনন খেলা দেখতে। তারাও বঞ্চিত হননি। প্রচলিত নিয়ম ভেঙ্গে সেই সব উৎসাহী দর্শককে মাঠের ভেতরে বসার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছিল। তারা প্রাণভরে উপভোগ করেছিলেন ওই এশিয়া কাপ হকির ফাইনাল।
গ্রুপ পর্বে পাকিস্তান আর ভারতের দোর্দণ্ড দাপটের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি অন্য দলগুলো। স্বাগতিক বাংলাদেশ ছিল পাকিস্তানের গ্রুপে। একমাত্র বাংলাদেশই পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। প্রবল প্রতিপক্ষর বিপক্ষে প্রায় সমানতালে লড়ে এবং একাধিক গোলের সুযোগও তৈরি করেছিল বাংলাদেশ।
সেন্টার ফরোয়ার্ড সালাউদ্দিন তিশা একবার পাকিস্তানি গোলকিপারকে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি। একাধিক গোলের সুযোগ হাতছাড়া করে শেষ দিকে হাসান সর্দারের গোলে হার মানে বাংলাদেশ। এছাড়া গ্রুপ পর্বে ইরানকে ১৬-০, জাপান এবং চীনকে ২-০ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে ওঠে পাকিস্তান। সেমির যুদ্ধে পাকিস্তানীদের কাছে ৭-০ গোলে বিধ্বস্ত হয় এখনকার অন্যতম ফেবারিট দক্ষিণ কোরিয়া।
অন্য গ্রুপে ভারতের প্রাধান্য ও আধিপত্য ছিল পরিষ্কার। দক্ষিণ কোরিয়াকে ৮-১ গোলে উড়িয়ে যাত্রা শুরু করে ভারত। পরের ম্যাচে মালয়েশিয়াকেও ৩-২ গোলে হারায় ভারতীয়রা। এরপর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৬-০ আর সিঙ্গাপুরের সাথে ৫-০ গোলে জিতে শেষ চারে পৌঁছায় ভারত। সেমির যুদ্ধে ভারত ৯-১ গোলের বিরাট ব্যবধানে জাপানকে হারিয়ে পৌঁছে যায় ফাইনালে।
পাকিস্তান তখন বিশ্ব হকির এক নম্বর শক্তি। দলটির অন্তত ৪ জন অত্যন্ত উঁচু মানের খেলোয়াড় হকি বিশ্বে ছিলেন দারুণ সমাদৃত। অধিনায়ক হানিফ খান একাই মাঝমাঠ চষে বেড়াতেন। পুরো নিয়ন্ত্রণ নিজ হাতে রাখতে পারতেন। স্টিকের কারুকাজ, গতি আর ছন্দের মিশেলে সৃষ্টি ও সৃজনশীল হকি উপহার দিয়ে আক্রমণের উৎস রচনায় হানিফ খান ছিলেন অনন্য, অসাধারণ।
তার সঙ্গে ছিলেন রাইট উইং কালিমউল্লাহ আর সেন্টার ফরোয়ার্ড হাসান সর্দার। যাদের স্টিকে বল যেন চুম্বকের মত লেগে থাকতো। এর মধ্যে হাসান সর্দারের ছিল সহজাত স্টিক ওয়ার্ক। ওই জাদুকরি স্টিকওয়ার্কের সঙ্গে কুলিয়ে ওঠা ছিল খুব কঠিন।
দীর্ঘদেহী হাসান সর্দারের স্কোরিং পাওয়ারও ছিল অসাধারণ। ১৬ গজের ডি বক্সের যে কোন দূরহ কোন থেকেও অসামান্য দক্ষতায় গোল করে ফেলতেন হাসান সর্দার। বাংলাদেশের সঙ্গে করা তার গোলটি এখনো হকি অনুরাগীদের চোখে ভাসে।
এছাড়া সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার কাশিম জিয়া আর মাঝ মাঠের আরেক পরিশ্রমি আয়াজ মাহমুদও ছিলেন পাকিস্তানের বড় শক্তি। নির্ভরতার প্রতীক।
অন্যদিকে ভারতীয় দলেও ছিল মেধাবি আর প্রতিভাবান হকি খেলোয়াড়ের ছড়াছড়ি। সেন্টার ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ সহিদ, দক্ষ গোলদাতা মোহাম্মদ নাইম, সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার হারদিপ সিং, পারগাত সিং, জুডিফিলিক্স, ফার্নান্ডেজ আর অধিনায়ক সোমায়ার গড়া ভারতও ছিল দারুণ সাজানো গোছানো দল।
মোহাম্মদ সহিদের স্টিকওয়ার্ক, প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়কে অবলীলায় কাটানোর ক্ষমতা আর গোলে উৎসব রচনায় সে সময় তার জুড়ি মেলা ছিল ভার। তার স্টিক থেকে বল কেড়ে নেয়া ছিল খুব কঠিন। স্টিকে বল পেলেই সহিদ হয়ে উঠতেন যেন ধাবমান ঘোড়া।
এঁকেবেঁকে ড্রিবল করে প্রতিপক্ষের মাঝমাঠ আর রক্ষণ দূর্গে ফাটল ধরাতে পারতেন ভারতীয় হকির স্বর্ণ সময়ের এ প্লে-মেকার। তার সামনে মোহাম্মদ নাইম ছিলেন তুখোড় স্কোরার। একটু জায়গা পেলেই প্রচন্ড গতি আর দারুণ দক্ষতায় গোল করে ফেলতেন নাইম।
রক্ষণভাগে পারগাত সিংয়ের মাঝে ছিল হিমালয়ের বিশালতা। তাকে টপকে বল নিয়ে যাওয়াও ছিল খুব কঠিন। জুডিফিলিক্স আর মারভিন ফার্নান্ডেজও ছিলেন দারুণ দ্রুত গতি সম্পন্ন ফরোয়ার্ড।
দুই বিশ্ব সেরা দলের একঝাঁক অসামান্য প্রতিভাবান তারকার ফাইনালটিও হয়েছিল দারুণ। যাকে বলে রুদ্ধশ্বাস প্রতিদ্বন্দ্বীতা। ঘাসের মাঠে এত প্রবল লড়াই এবং এমন গতিময় আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের হকি খুব কমই চোখে পড়েছে। ১৯৮৫ সালের ভারত-পাকিস্তান এশিয়া কাপ হকির অমন জমজমাট আর টানটান উত্তেজনার ফাইনাল আর কখনো হয়েছে কিনা সন্দেহ।
দুটি কারণে ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের সেই এশিয়া কাপ হকির ফাইনাল চির স্মরণীয় হয়ে আছে। প্রথমত স্টেডিয়ামে ছিল গ্যালারি উপচেপড়া ভিড়। ৪০ হাজার দশক আসন বিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের গ্যালারি ছাড়াও সে ফাইনাল মাঠের ভিতরে প্লেয়িং গ্রাউন্ডের ঠিক গা ঘেঁসে বসে খেলা দেখেছেন আরও হাজার পাঁচেক দর্শক। গ্যালারি, ভিআইপি আর গ্র্যান্ডস্ট্যান্ড ছাপিয়ে কোন আন্তর্জাতিক আসরের ফাইনালে মাঠের মধ্যে দর্শক বসে খেলা দেখার নজির আর বিশ্বে আছে কিনা সন্দেহ।
এর পাশাপাশি পাকিস্তানের জয়সূচক গোলটি নিয়েও হয়েছে সর্বোচ্চ গণ্ডগোল। কোন আন্তর্জাতিক আসরের ফাইনালে আম্পায়ার লাঞ্চিত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছিল ওই পাক-ভারত রূদ্ধশ্বাস ফাইনালে।
মোটকথা, ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে হওয়া ৮৫’র এশিয়া কাপ হকির ফাইনাল ছিল ঘটনাবহুল। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ আর জমাজমাট।
যে গতিময় হকির লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত ৩-২ গোলে জিতেছিল পাকিস্তান। প্রথমে অধিনায়ক হানিফ খানের গোলে এগিয়ে যায় পাকিস্তানিরা। ভারতের সেন্টার ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ নাইম সমতা ফিরিয়ে আনেন। নির্ধারিত ৭০ মিনিটের খেলা ১-১ গোলে ড্র থাকে।
এরপর খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও রাইট ইন মুশতাক আহমেদের গোলে আবার এগিয়ে যায় পাকিস্তান। পরে হারদিপ সিংয়ের গোলে আবার খেলায় ফিরে ভারত। ২-২ অবস্থায় ঘটে যায় এক বিরাট ঘটনা। গোলমুখে জটলা থেকে গোল করে পাকিস্তানকে ৩-২ গোলে এগিয়ে দেন তখনকার সময়ের বিশ্বসেরা রাইট আউট কালিমউল্লাহ।
তিনি কিন্তু ফিল্ড লেভেল বা মাটি থেকে গোল করেননি। বল একাধিক খেলোয়াড়ের স্টিকে লেগে একদম ভারতের গোলপোস্টের সামনে মাটি থেকে কয়েক ফুট ওপরে উঠে যায় বল। সেখানে দু’দলের বেশ ক’জন খেলোয়াড়ও ছিলেন। আর সেই মাটি থেকে ওপরে ওঠা বলে স্টিক ছুঁয়ে গোলে পাঠান পাকিস্তানের কালিমউল্লাহ।
সেই গোল নিয়েই যত গণ্ডগোল। ভারতীয়রা কোনোভাবেই সে গোলটিকে মেনে নিতে পারেননি। তাদের দাবি, কালিমউল্লাহ যখন হিট নেন, তখন তার স্টিক কাঁধের ওপরে উঠে গিয়েছিল। এখনকার মত টিভি রিপ্লে দেখে রিভিউ নেয়ার কোনো সুযোগ তখন ছিল না। কাজেই কালিমউল্লাহর স্টিক বিপজ্জনকভাবে হকির নিয়মের ব্যাত্যয় ঘটিয়ে সত্যিই ভারতের খেলোয়াড়দের কাঁধে ও মাথার ওপরে উঠেছিল কি না, তা যাচাই করার কোন প্রযুক্তি ছিল না। আম্পয়ার গোলের বাশি বাজান।
আর যায় কোথায়, গোল বাতিলের দাবিতে ভারতীয় খেলোয়াড়রা তেড়ে যান জাপানিজ আম্পায়ারের দিকে। তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিতও করা হয়। ভারতীয়রা গোল বাতিলের দাবিতে অনঢ় থাকলে বেশ কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকে।
ওই গোল বাতিলের দাবিতে জাপানিজ আম্পায়ারকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করার অপরাধে শাস্তি স্বরুপ ভারতের ৬ জন খেলোয়াড় ৫ থেকে ৬ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন। ভারতীয় কোচ আর ম্যানেজারকেও এক বছরের জন্য আন্তর্জাতিক হকি থেকে নিষিদ্ধ করা হয়।
এআরবি/আইএইচএস