বরিশালের সংগ্রহ ১৫৬ রান
বিপিএলের শ্বাসরূদ্ধকর ফাইনাল। মুখোমুখি টুর্নামেন্টের সেরা দুই দল। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স আর বরিশাল বুলস। মাশরাফির মুখোমুখি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। এমন শ্বাসরূদ্ধকর ফাইনালের শুরুতেই টস ভাগ্যে জিতে গেলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। টস জিতেই নিলেন ফিল্ডিং।
তবে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দুর্দান্ত হাফ সেঞ্চুরি এবং শাহরিয়ার নাফিসের অসাধারণ ব্যাটিংয়ের ওপর ভর করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের সামনে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৫৬ রানের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে বরিশাল বুলস। কয়েকটি ক্যাচ মিসের কারণেও শেষ পর্যন্ত বেশ ভূগতে হলো মাশরাফির কুমিল্লাকে। ২১ রানে ক্যাচ মিস হয়েছে প্রসন্নর। ক্যাচ মিস হয়েছে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের। ৩৫ রানে মাহমুদুল্লাহর ক্যাচ মিস না হলে বরিশালের রান এতদুর এগুতো না।
ফাইনালের জন্য উইকেটটা বেশ স্পোর্টিংই বানানো হয়েছিল। যে কারণে শুরু থেকে দেখা গেছে কুমিল্লার বোলারদের ওপর বরিশালের ব্যাটসম্যানদের চড়াও হতে। তবে মাশরাফিও জানেন এমন উইকেটে কিভাবে আক্রমণ শানাতে হয়। এ কারণে শুরুতেই তিনি নিয়ে আসলেন টুর্নামেন্টজুড়ে দুর্দান্ত খেলা আসহার জাইদিকে। তবে প্রথম ওভারে নয়, দলের তৃতীয় এবং নিজের দ্বিতীয় ওভারেই বরিশাল বুলসের ওপর আঘাত হানলেন আসহার জাইদি। তুলে নিলেন বরিশালের প্রথম উইকেট।
বরিশাল তখন ব্যাট করছিল ১৯ রান নিয়ে। মেহেদী মারূফ কুমিল্লার ওপর চড়াও হতে শুরু করেছিলেন তখন। কিন্তু আসহার জাইদির দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন মারূফকে। ১৯ রানে পড়ল বরিশালের প্রথম উইকেট।
তবে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে সেকুগে প্রসন্ন আর সাব্বির রহমান মিলে বেশ ঝড় তুলেছিলেন কুমিল্লার ওপর। ৩৫ রানের জুটি গড়ে তোলেন তারা দু’জন। বিশেষ করে শ্রীলংকান সেকুগে প্রসন্ন একের পর এক বোলারদে বাউন্ডারি ছাড়া করছিলেন। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, তাকে আউট করতে না পারলে কুমিল্লার বেশ বিপদ। মাঝে আবু হায়দার রনির বলে ২১ রানে থাকতে প্রসন্নর ক্যাচ ড্রপ করেন অলক কাপালি।
এমন পরিস্থিতিতে মাশরাফি বোলিংয়ে নিয়ে আসেন ড্যারে স্টিভেন্সকে। বোলিংয়ে এসেই নিজের প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে প্রসন্নকে বোল্ড করেন স্টিভেন্স। ১৯ বলে ৩৩ রান করে ফিরে গেলেন প্রসন্ন।
এরপর সবচেয়ে বিপজ্জনক জুটি (দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার হিসেবে) সাব্বির আর নাফীস মিলে কুমিল্লার বোলারদের মোকাবেলা করতে শুরু করেন। সাব্বির রহমান ধীরে ধীরে বিপজ্জনক হয়ে উঠছিলেন। কিন্তু মাশরাফির তীক্ষ্ণ বুদ্ধির সামনে তো আর সফল হওয়া সম্ভব না। হলোও না।
১১তম ওভারে নিজের দ্বিতীয় ওভার বল করতে এলেন মাশরাফি। ওভারের দ্বিতীয় বলটিই গুড লেঙ্থে করলেন মাশরাফি। ছক্কা মারতে পারবেন ভেবে হাঁকিয়েছিলেন সাব্বির। কিন্তু ব্যাট ফাঁকি দিয়ে বলটি উড়িয়ে নিয়ে গেলো সাব্বিরের স্ট্যাম্প। ১৯ বলে ৯ রান করে আউট হয়ে গেলেন সাব্বির।
সাব্বির আউট হয়ে যাওয়ার পর মাঠে নামেন বরিশাল অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। শাহরিয়ার নাফীসের সঙ্গে জুটি বাধেন তিনি। সাব্বির আউট হয়ে যাওয়াতে যে চাপে পড়ার কথা ছিল বরিশালের, সেটা অন্তত হতে দেননি মাহমুদুল্লাহ আর শাহরিয়ার নাফীস। দু’জন মিলে ইতোমধ্যে ৬.৪ ওভার খেলে ৫১ রানের জুটি গড়ে ফেলেছেন।
মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ব্যাক্তিগত ৩৫ রানের সময় কুলাসেকারার বলে ক্যাচ মিস করেন শুভাগত হোম। শেষ পর্যন্ত মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ আউট হয়েছেন ৪৮ রানে। কুলাসেকারার বলেই বোল্ড হলেন তিনি। ৩৬ বলে ৪টি বাউন্ডারি আর ১টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। শাহরিয়ার নাফিসও দারুন খেললেন। ৪৪ রানে অপরাজিত থাকলেন তিনি। ৩১ বলে ২টি বাউন্ডারির সঙ্গে মারলেন ৩টি ছক্কা। শেষ পর্যন্ত ৪ উইকেট হারিয়ে বরিশালের রান দাঁড়াল ১৫৬ রান।
আইএইচএস/আরআইপি