ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

রংপুরকে উড়িয়ে ফাইনালে মাশরাফির কুমিল্লা

ক্রীড়া প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১১:৩৬ এএম, ১২ ডিসেম্বর ২০১৫

পুরো টু্র্নামেন্টেই কম বেশি পারফরম্যান্স করে যাচ্ছিলেন আসহার জাইদি আর আবু হায়দার রনি। কিন্তু চূড়ান্ত প্রয়োজনের মুহুর্তেই নিজেদের মেলে দিলেন তারা দু’জন। জাইদি তো ব্যাট এবং বল হাতে- দু’জায়গাতেই যেন ক্যারিয়ারের সেরা পারফরম্যান্সটি দেখালেন। ব্যাট হাতে ১৫ বলে ৪০ রান করার পাশাপাশি বল হাতে নিলেন ১১ রানে ৪ উইকেট।

একা এই একজনের হাতেই পরাজয় বরণ করে নেয়ার কথা। সঙ্গে যদি আবু হায়দার রনির মত বোলার দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখান, তাহলে তো কথাই নেই। সুতরাং, প্রথম কোয়ালিফায়ারে কুমিল্লার সামনে খড়-কুটোর মতই উড়ে গেলো রংপুর রাইডার্স। ৭২ রানের বিশাল জয়ে সরাসরি ফাইনালে নাম লিখিয়ে ফেললো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ইমরুল কায়েসের ৬৭ আর আসহার জাইদির ঝড়ো ব্যাটিংয়ের ওপর ভর করে ১৬৩ রানের বিশাল স্কোর গড়ে তোলে মাশরাফি বিন মর্তুজার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ইনিংসটি দেখেই ধারনা করা হয়েছিল, কুমিল্লাই জিততে যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত সেটাই সত্যি হলো। ১৭ ওভারে রংপুরকে মাত্র ৯১ রানে অলআউট করে দিয়ে কুমিল্লা জয় তুলে নিল ৭২ রানের ব্যবধানে।

জিতলেই সরাসরি ফাইনালে। এমন হিসাব-নিকাষকে সামনে রেখে প্রথম কোয়ালিফায়ারে মুখোমুখি হয় রংপুর রাইডার্স এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। টস জিতলেন সাকিব আল হাসানই। তিনি কুমিল্লাকে পাঠালেন ব্যাটিংয়ে। ব্যাট করতে নেমে রংপুরের সামনে ১৬৩ রানের বিশাল স্কোর গড়ে তোলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিল রংপুর রাইডার্স। দুই ওপেনার লেন্ডল সিমন্স আর সৌম্য সরকার মিলে দুর্দান্ত সূচনা এনে দিয়েছিল সাকিব আল হাসানের দলকে। ৪.৩ ওভার খেলে দু’ওপেনার মিলে গড়ে তোলেন ৩৬ রানের জুটি। কিন্তু ৫ম ওভারে গিয়েই খেই হারিয়ে ফেলে রংপুরের ব্যাটসম্যানরা।

বিশেষ করে বাঁ-হাতি পেসার আবু হায়দার রনির সামনে। পর পর দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে দিয়ে কুমিল্লাকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন তিনি। ৫ম ওভারের তৃতীয় বলে সৌম্যকে এবং পরের বলেই ফেরান লেন্ডল সিমন্সকে। সৌম্যর দুর্দান্ত ক্যাচটি ধরেন শুভাগত হোম। আর লেন্ডল মিসন্সকে তো দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ডই করে ছাড়লেন রনি। ক্রিকইনফোর লাইভ কমেন্টারিতে লেখা হলো, সম্ভবত এই টুর্নামেন্টের সেরা ডেলিভারি এটা।

তবে দুর্ভাগ্যই বলতে হবে রনির জন্য, নিশ্চিত হ্যাটট্রিক মিস হয়ে গেছ তার। কারণ সৌম্যকে যে বলে আউট করেছেন তার আগের বলেই বাঁ-হাতি এ ওপেনারের ক্যাচ মিস করেছেন আন্দ্রে রাসেল। ওই ক্যাচটি ধরতে পারলে হ্যাটট্রিকই হয়ে যেতো তার।

৫ম ভারের পর রংপুরের ইনিংসের ওপর ঝড় উঠলো অষ্টম ওভারেও। পাকিস্তানি আসহার জাইদির এক ওভারেই পরপর দুই বলে ফিরে গেলেন মোহাম্মদ মিথুন এবং সাকিব আল হাসান। অষ্টম ওভারের দ্বিতীয় বলেই জাইদিকে বাউন্ডারি মারেন মিথুন। পরের বলে কোন রান নয়। চতুর্থ বলেই জাইদির বল মারতে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে আসেন মিথুন। কিন্তু ব্যাটের সঙ্গে সংযোগ ঘটাতে পারলেন না। ফলে স্ট্যাম্পিং হয়ে যেতে হলো তাকে।

জহুরুল ইসলাম অমির সঙ্গে জুটি বাধতে ক্রিজে নামেন সাকিব আল হাসান এবং প্রথম বলেই জাইদিকে মারতে গেলেন ছক্কা। কিন্তু ডিপ মিডউইকেটে ফিল্ডার মাহমুদুল হাসানের সরাসরি হাতে গিয়ে পড়লো বল। সুতরাং, প্রথম বলেই আউট হয়ে গেলেন সাকিব। আর ৪৫ রানেই পড়ে গেলো ৪ উইকেট। চরম বিপর্যয়ে রংপুর রাইডার্স।

১১তম ওভারে বল হাতে তুলে নিলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। এর আগেও এক ওভার বল করেছিলেন। ১ রান দিয়েছিলেন ওই ওভারে। ছোট ছোট রানআপে বোলিং করতে এসে এবার সফলতার দেখা পেলেন কুমিল্লার অধিনায়ক। ১১তম ওভারের চতুর্থ বলেই তুলে নিলেন আফগান ক্রিকেটার মোহাম্মদ নবির উইকেট। ১১ বলে ১২ রান করে আউট হন নবি।

১২তম ওভারে ফিরেই প্রথম বলে উইকেট তুলে নিলেন আসহার জাইদি। আগের কয়েকটি ম্যাচে প্রতিপক্ষকে দারুন চাপে ফেলে দেয়া জহুরুল ইসলাম অমিকে দেখালেন সাজঘরের পথ। আবু হায়দার রনির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি।

এবার রংপুরের ওপর ছড়াও হলেন ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল। সরাসরি বোল্ড করে সাজঘরে পাঠালেন আল-আমিনকে। থিসারা পেরেরা আর ড্যারেন স্যামি ছিলেন রংপুরের শেষ ভরসার নাম। কিন্তু প্রয়োজনের মুহূর্তে ব্যর্থ হলেন তারা দু’জনও। ১৩ বলে ১১ রান করা পেরেরা বোল্ড হয়ে গেলেন আবু হায়দার রনির বলে। ৪ বলে ৬ রান করা ড্যারেন স্যামিকে বোল্ড করলেন আসহার জাইদি।

শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে বাকি উইকেটে ছিলেন আরাফাত সানি এবং সাকলাইন সজিব। ১৭তম ওভারের শেষ বলে এসে আরাফাত সানিকে বোল্ড করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের জয় নিশ্চিত করলেন আবু হায়দার রনি।

দুর্দান্ত বোলিং করলেন পাকিস্তানি আসহার জাইদি এবং বাংলাদেশের পেসার আবু হায়দার রনি। দু’জনই নিলেন ৪টি করে উইকেট। জাইদি ৪ ওভারে ১১ রান দিয়ে নিলেন ৪ উইকেট এবং রনি করলেন ৩ ওভার বোলিং, রান দিলেন ১৯টি, উইকেট ৪টি। বাকি ২টি উইকেট নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করেন মাশরাফি এবং আন্দ্রে রাসেল।

আইএইচএস/আরআইপি