যাত্রা শুরু বাফুফের ফুটবল একাডেমির
বাফুফে সভাপতি বরাবরই এড়িয়ে চলেন সংবাদ মাধ্যমকে। প্রয়োজন ছাড়া বক্তব্যও দেন না বাফুফের অনুষ্ঠানে। এরপরও যেখানে কথা বলেন তা মুগ্ধ হয়ে শুনতে হয় সবাইকে। সিলেট ফুটবল একাডেমির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও তার পুনরাবৃত্তি ঘটালেন বাফুফে বস।
তার বক্তব্যে উঠে এলো ফুটবলের সমস্যা আর সম্ভাবনার নানান দিক। অর্থমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী এক প্রকার মুগ্ধ হয়েই সালাউদ্দিনের কথা শুনলেন। পুণ্যভূমি সিলেটে বসেই ফুটবল উন্নয়নে সরকারের সহযোগিতার আশ্বাস দিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এর মাধ্যমেই নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হলো দেশের প্রথম ফুটবল পাঠশালার।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এর উদ্বোধন করেন। এ সময় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, অর্থ প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার, ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় ও ফিফার ডেভেলপমেন্ট অফিসার সাজি প্রভাকরণ।
সিলেট শহর থেকে প্রায় বিশ কিলোমিটার দূরে খাতুন নগরে অবস্থিত সিলেট বিকেএসপি। তিন বছর আগে ফুটবল একাডেমি করার জন্য জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছ থেকে এর বরাদ্দ নেয় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। কিন্তু অর্থ সঙ্কটে এটি চালু করতে পারছিল না দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থাটি।
ফিফার দেয়া অর্থ অন্যখাতে খরচ করায় চাপও আসছিল বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা থেকে। তাই এক প্রকার বাধ্য হয়ে পুরোপুরি প্রস্তুত না করেই এর উদ্বোধন করলো বাফুফে। দুটি বয়স শ্রেণীতে ৪০জন ক্ষুদে ফুটবলার নিয়ে শুরু হলো বাংলাদেশের প্রথম ফুটবল তৈরীর পাঠশালা।
পাঠশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সালাউদ্দিন উড়িয়ে এনেছিলেন ছয় মন্ত্রীকে। এদের সামনে শুরুতেই বাফুফে সভাপতি কাজী মো: সালাউদ্দিন বলেন, বিশ্বের ২০৯টি দেশ ফুটবল খেলে। অন্য খেলার মতো ৬-৭টি দেশ অংশ নেয় না। অনেক প্রতিযোগিতা ফুটবলে। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা হাতে নিতে হবে। সেটারই ধারাবাহিক একটা কর্মসূচি হলো একাডেমি।
বর্তমানে আমাদের একাডেমির কাজ ৭০ ভাগ শেষ হয়েছে। বাকী কাজও শেষ হয়ে যাবে দ্রুতই। একাডেমি পরিচালনার জন্য বছরে আমাদের প্রয়োজন প্রায় চার কোটি টাকা। আমি আশা করবো সরকার আমাদের সহযোগিতা করবে একাডেমি সামনের দিকে এগিয়ে নিতে। খেলাধূলার সঙ্গে তোফায়েল আহমেদের মন্ত্রণালয়ের সম্পর্ক না থাকলেও অর্থমন্ত্রীকে সুপারিশ করার জন্য তাকে সিলেট এনেছিলেন সালাউদ্দিন।
গতকাল বিকেএসপি’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই প্রভাবশালী মন্ত্রী অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে ফুটবলের উন্নয়নে সব ধরনের সহযোগিতা করার অনুরোধ করে বলেন, একাডেমি পূর্ণ উদ্যমে চালু করতে আরও চার কোটি টাকার প্রয়োজন। আমি আশা করবো অর্থমন্ত্রী সেটা বরাদ্দ দেবেন। পাশাপাশি আগামী বাজেট থেকে ফুটবলের জন্য বাৎসরিক ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়ার অনুরোধ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
নিরাশ করেননি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি সিলেটের পরিত্যক্ত বিকেএসপি পূর্ণাঙ্গ একটি ফুটবল একাডেমিতে রূপ দেয়ায় বাফুফেকে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি ফুটবল উন্নয়নে বাফুফের চাহিদানুযায়ী টাকা দিতে না পারলেও তাদেরকে সহযোগিতা করবো। কারণ ফুটবল আমাদের প্রাণের খেলা। এটাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।