ডিআরএস নিয়ে ভুল স্বীকার করলো আইসিসি
অ্যাডিলেডে দিবা-রাত্রির ঐতিহাসিক টেস্টে এসে কঠিনতম প্রশ্নের মুখে পড়ে গিয়েছিল আম্পায়ার ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম (ইউডিআরএস)। অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান নাথান লায়নের আউট নিয়েই যত বিতর্কের সৃষ্টি। নাথান লায়নের আউটের বিষয়ে নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককালাম রিভিউ আবেদন করলে থার্ড আম্পায়ার নাইজেল লং তাকে ‘নট আউট’ ঘোষণা করেন।
এ নিয়েই তর্ক-বিতর্ক ক্রমেই দানা বাধতে শুরু করে। লায়ন আউট হয়েছে বলে নিজেদের দাবিতে অনড় থাকে নিউজিল্যান্ড। তারা আনুষ্ঠানিক আপিলও করে আইসিসির কাছে। শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে আইসিসি স্বীকার করে নিল থার্ড আম্পায়ার নাইজেল লং রিভিউতে ভুল সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন।
এক টুইটার বার্তায় আইসিসি স্বীকারোক্তি দিয়ে লিখেছে, ‘আইসিসি (আম্পায়ার নাইজেল লংয়ের দেয়া) সিদ্ধান্তটি রিভিউ করে দেখেছে এবং তারা বুঝতে পেরেছে যে, আম্পায়ার ওই সিদ্ধান্তটি ভুল দিয়েছিলেন।’ নিউজিল্যান্ডের ক্রমাগত অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে আইসিসি এটাও জানিয়েছে যে, ‘আম্পায়ার আউটের আবেদনের রিভিউ করেছিলেন সব ধরনের নিয়ম-পদ্ধতিতেই। তবে, তিনি যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, সেটাই ছিল ভুল।’
অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে রিভিউ সত্ত্বেও নাথান লায়নকে আম্পায়ার নাইজেল লং ‘নট আউট’দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে টিভি ধারাভাষ্যকার, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড থেকে শুরু করে ইংলিশ মিডিয়াও এর সমালোচনায় সরব হয়ে ওঠে। এ নিয়ে সরাসরি মন্তব্য করেন নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটার রস টেলর এবং অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেলর। তারা মনে করেন, লায়নকে ওই আউট না দেয়ার কারণে পুরো টেস্টেই এর কঠিন প্রভাব পড়েছে। যে কারণে নিউজিল্যান্ডকে পরাজয়েই বরণ করতে হয়েছে।
প্রথম ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের ২০২ রানের জবাবে ১১৬ রানেই ৮ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। এ সময় ব্যাট করতে নামেন নাথান লায়ন। তিনি তখনও রানের খাতা খোলেননি। দলীয় রান তখন ১১৮। এ সময়ই মিচেল সান্তনারকে সুইপ শটে খেলতে যান লায়ন। কিন্তু বল ব্যাটের কানায় লেগে তার নিজের কাঁধ আঘাত করে গিয়ে জমা পড়ে স্লিপ ফিল্ডারের হাতে। আউটের আবেদন করলে ফিল্ড আম্পায়ার এস রবি তাতে সাড়া দেননি। ফলে রিভিউর আবেদন করেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেলর।
প্রায় ৫ মিনিট পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর থার্ড আম্পায়ার নাইজেল লং ফিল্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকেই বহাল রাখেন। অথচ, হট স্পটেই স্পষ্ট দেখা গেছে, বল লায়নের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে গেছে। এমনকি ব্যাটসম্যানও ড্রেসিংরূমের দিকে অর্ধেক পথ হেঁটে চলে গিয়েছিলেন।
শেষ পর্যন্ত সেই নাথান লায়ন করেছিলেন ৩৪ রান। পিটার নেভিলের সঙ্গে গড়েন ৬৬ রানের জুটি। যা শেষ পর্যন্ত অস্টেলিয়াকে ২২ রানের লিড এনে দেয় এবং ম্যাচ শেষে নিউজিল্যান্ডের পরাজয় ৩ উইকেটে।
আইএইচএস/পিআর